হাবিবুর রহমান,লক্ষীপুর প্রতিনিধি।।
এমনি এক বাতির দেখা মিললো কমলনগর উপজেলার হাজির হাট ইউনিয়ন চর জাঙ্গলিয়া গ্রামে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া সেই বাতি এখনো ঘরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে।
সাড়া দেশের মতো লক্ষীপুরের কমলনগর থেকে ও কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীন সন্ধ্যা বাতি লেম। গ্রামীন সমাজের প্রতিটি ঘরে ঘরে এক সময় আলোর অন্যতম বাহক হিসেবে ব্যবহার করা হতো সন্ধ্যা বাতি লেম। বর্তমানে গ্রামাঞ্চলের দুই এক বাড়িতে লেম পাওয়া গেলেও দেখা যায় ব্যাবহার না করায় সে গুলোতে ময়লা ও মরিচা পড়ে ব্যাবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
এখন আর কোন ঘরে কিংবা ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে হাজার বছরের ঐতিহ্যের বাহন সেই লেম এখন আর চোখে পড়ছে না। অথচ আজ থেকে ১৫/২০ বছর আগে ও বেশির ভাগ ঘরেই ব্যাবহার করা হতো এই লেম। আর বিশ বছর পরে এসে এর রুপ এখন পুরোটাই পরিবর্তন হয়ে গেছে। ২০ বছর আগে ও ছিল এমন যে সারাদিন কর্মব্যস্ততা সেরে নারীরা ব্যাস্ত হয়ে পড়তেন সন্ধ্যায় ঘরের আলো জ্বালানো নিয়ে।
কালের বিবর্তনে সারা দেশে ও রামগতি উপজেলার প্রায় জায়গা থেকে হারিয়ে গেছে এই লেম। বর্তমানে সামাজিক পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রতিটি সমাজ পরিবর্তন, বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও আধুনিকতার ছুয়ায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লেম এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
বিদ্যুৎতের বাতি, চার্জার ও সৌর বিদ্যুতের নানা ধরনের ব্যাবহারের ফলে এখন লেম এর ব্যাবহার তেমন দেখা যায় না। উপজেলার গ্রামাঞ্চলে এখন আর এগুলো খুঁজে পাওয়া যাবে না। তবে যেখানে বিদ্যুৎ নেই সেখানে লেম এর জায়গা দখল করে নিয়েছে সৌর বিদ্যুৎতের আলো বা চার্জের লাইট। প্রতি সন্ধ্যায় কেরোসিন তেল ঢেলে শলতার মধ্যে দেশলাইয়ের কাটি জ্বালিয়ে আগুন ধরিয়ে তা নির্দিষ্ট সীমা রেখায় রেখে ঘরের মাঝে লাগিয়ে রাখতো। রাতে ঘুমানোর সময় সারা রাত লেম জ্বালিয়ে রাখা হতো। তখন এগুলো ছিল কয়েক প্রকার। ছিল পিতল ও সিলভারের। তবে সিলভার, টিন ও মাটির তৈরি জিনিসের ব্যবহার ছিল খুব বেশি। বাতির নলে আগুন জ্বালানোর জন্য ফিতা হিসেবে ব্যবহার করা হতো ছেড়া কাপড়। কাপড়ের টুকরো কিংবা পাটের সুতলি। প্রতিদিন এর কিছু অংশ জ্বলে পুরে যেতো। পরের দিন আবার একটু উপরের দিকে তুলে দেওয়া হতো। এক পর্যায়ে তা পুরে গেলে আবার নতুন করে লাগানো হতো। এটা ছিল নারীদের সন্ধ্যা বেলা কাজের বিশেষ একটি অংশ। এই বাতি দিয়ে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতো। এমনকি রাতের রান্না বাড়া, খুঁটির শিল্প, হস্ত শিল্প, ধান মারা সহ সকল চাহিদা মেটানো হতো এই আলো দিয়ে। এখন আর চোখে পড়ে না লেম।
যারা শহর এলাকায় বাস করছেন বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম তারাতো চোখে দেখেনি লেম বা বাতি। অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন কালের আবর্তনে ডিজিটাল যুগে এই বাতি নামক বস্তুটি কোন এক সময়ে স্মৃতির যাদুঘরে দেখা যাবে অতীত স্মৃতি হয়ে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ আল আমিন খান , নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ নজরুল ইসলাম,
সার্বিক যোগাযোগ: 01867-243396 ই-মেইলঃ dailycrimebangla@gmail.com