এম জাফরান হারুন, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি।।
পটুয়াখালীর বাউফলে ইলিশ জাল দিয়ে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে বাক প্রতিবন্ধী বোবা তিন ভাই কে হত্যার উদ্দেশ্যে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহতরা বাউফল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার (২৭শে এপ্রিল-২৪ইং) সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের খানকা নামক স্থানের চর ওয়াডেলের জুলহাসের দোকানের সামনে। গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম হয়ে আহত বাক প্রতিবন্ধী বোবা তিন ভাই হলেন ১/মোঃ ইউসুফ চৌকিদার (৩০) ২/মোঃ ইলিয়াস চৌকিদার (২৭) ৩/মোঃ ওহিদুল চৌকিদার (২৩)। তারা ওই স্থানের বাসিন্দা মৃত মোঃ সিরাজ চৌকিদারের ছেলে। এতে আহতদের আপন ছোট ভাই মোঃ কাওছার চৌকিদার বাদী হয়ে বাউফল থানায় এজাহার করতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
হামলাকারী আসামিরা হলেন, মোঃ সবুজ রারী, মোঃ রাশেদ রারী, মোঃ আল আমিন, মোঃ ইয়াসিন জোমাদ্দার, মোঃ ইব্রাহিম ও নাগর সাগর সহ আরও ৪ থেকে ৫ জন। তারা একই এলাকার বাসিন্দা।
সরেজমিনে আহতদের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার বিকেলের দিকে আহতদের আরেক আপন ভাই বাক প্রতিবন্ধী (বোবা) নেছারুল চৌকিদার ও আরেক ভাই আমছারুল চৌকিদার সর্বপ্রথম খানকা নামক স্থানের দক্ষিণ পাশে তেতুলিয়া নদীতে ইলিশ মাছ শিকারের জন্য ইলিশ জাল ফেলেন। তার সামনে গিয়ে নুরনবী নামক একটি লোকও জাল পাতেন। কিছুক্ষন পরে তাদের পাতা জালের সামনে গিয়ে ইয়াসিন জোমাদ্দার নামে একটা লোক জাল পাতে। এদিকে কওয়া নেই বলা নেই যেন পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ইয়াসিন জোমাদ্দার এসে নেছারুল ও আমছারুল চৌকিদারের সাথে ঝগড়া লাগিয়ে দেয়। এতে দুই ভাই বাধাবিঘ্ন করলে ইয়াসিন জোমাদ্দার নাগর ও সাগর নামে দুইজনকে খবর দিয়ে এনে দুই ভাইকে মারধর করে। এদিকে আবার ইয়াসিন জোমাদ্দার সেরাজ রারী গংদেরকে খবর দিয়ে আনে দুই ভাইকে মারধর করার জন্য। তাতে ওই দুই ভাই ভয় পেয়ে ঘাটে চলে আসে। পরে স্থানীয় লোকজন স্থানীয় মেম্বার কে ডেকে এনে উভয়কে শালিস মীমাংসা করার জন্য সন্ধ্যার দিকে জুলহাসের দোকানে বসার সময় বেধে দেওয়া হয়।
তারা আরও জানান, ওইদিন সন্ধ্যার দিকে জুলহাসের দোকানে শালিস মীমাংসার জন্য বসা হয়। কিন্তু শালিস চলাকালীন সবুজ রারী, রাশেদ রারী, আল আমিন, ইয়াসিন জোমাদ্দার, ইব্রাহিম, নাগর ও সাগর সহ আরও কয়েকজন হঠাৎ ক্ষেপে উঠে গিয়ে মারধর শুরু করে। তাতে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম হয় ইউসুফ চৌকিদার, ইলিয়াস চৌকিদার ও মোঃ ওহিদুল চৌকিদার সহ তিন ভাই। পরে তাদের দ্রুত উদ্ধার করে রক্তাক্ত জখম আহত অবস্থায় বাউফল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
আহতদের আপন ছোট ভাই মোঃ কাওছার চৌকিদার বলেন, আমরা ৬ ভাই। তাদের মধ্যে আমার ৪ ভাই বোবা। কিন্তু হামলাকারীদের সাথে আমাদের কোনও প্রকার বিরোধ নেই। কি কারণে আমার বোবা ৩ ভাইকে পিটিয়ে রক্তাক্ত গুরুত্বর জখম করেছে? কি অপরাধ করেছি আমরা। কেন আমার ৩ ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে প্রকাশ্য দিবালোকে পিটিয়ে রক্তাক্ত গুরুত্বর জখম করা হয়েছে? আমরা স্থানীয় চেয়ারম্যান সহ প্রশাসনের কাছে বিচার চাই।
এদিকে অভিযুক্তদের মধ্যে ইয়াসিন জোমাদ্দার বলেন, আমরা মারি নাই, বাইজ্জা গেছে বলে আর কোনও কথা বলেননি।
এব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান এনামুল হক আলকাস মোল্লা বলেন, ব্যাপারটি আমি অবগত আছি। এব্যাপারে সঠিক বিচার করা হবে।
এবিষয়ে বাউফল থানার ওসি শোনিত কুমার গায়েন বলেন, বাক প্রতিবন্ধী তিন ভাই কে মারধর করে রক্তাক্ত করা হয়েছে তা দুঃখজনক। এজাহার করতে আহতদের স্বজনদের কাছ থেকে লিখিত পেয়েছি। তাই এব্যাপারে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ আল আমিন খান , নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ নজরুল ইসলাম,
সার্বিক যোগাযোগ: 01867-243396 ই-মেইলঃ dailycrimebangla@gmail.com