এমপক্স একটি ভাইরাসজনিত রোগ। বাংলাদেশে জলবসন্ত দেখা যায়, একসময় গুটিবসন্ত ছিল। এমপক্স আলাদা ধরনের একটি পক্স ভাইরাস। এমপক্সের প্রধান দুইটি ধরন আছে ক্লেড ১ এবং ক্লেড ২। দুইটি ধরনের মধ্যে আবার সাব ডিভিশন এ, বি রয়েছে। এমপক্স ভাইরাসের উদ্ভব হয়েছে বন্যপ্রাণী থেকে, এটি প্রাণীবাহিত রোগ। আগে যারা বন্যপ্রাণী শিকার করতে যেতেন তারা সংক্রমিত হতেন। কিন্তু বর্তমানে এমপক্স ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষের মধ্যে ছড়াচ্ছে। এজন্য ঝুঁকি বেড়ে গেছে। এমপক্স ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে ছড়াচ্ছে শারীরিক সংস্পর্শের মাধ্যমে। এমপক্স সংক্রমিত ব্যক্তিকে র্স্পশ করা, চুমু দেওয়া, যৌনসম্পর্ক থেকে এটি ছড়াতে পারে। সংক্রমিত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাসের খুব কাছাকাছি থাকলে সংক্রমণ ঝুঁকি থাকে। এমপক্স আক্রান্ত বন্যপ্রাণী শিকার করা, চামড়া তোলা, মাংস কাটা এমনকি রান্নার সময়, কম তাপে রান্না করা খাবার খেলে সেখান থেকে ভাইরাস ছড়াতে পারে। আমাদের দেশে বন্যপ্রাণী শিকার করা হয় না খুব একটা। কিন্তু এমপক্স আক্রান্ত প্রাণীর কাছাকাছি গেলেও সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এই রোগে আক্রান্তদের প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে জ¦র, মাথাব্যথা, ফোলা, পিঠে এবং পেশিতে ব্যথা। আক্রান্ত ব্যক্তির একবার জ¦র উঠলে গায়ে ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। সাধারণত মুখ থেকে শুরু হয়ে পরে হাতের তালু এবং পায়ের তলদেশসহ শরীরের অন্যান্য অংশে তা ছড়িয়ে পড়ে। অত্যন্ত চুলকানো বা ব্যথাদায়ক এই ফুসকুড়িগুলো পরিবর্তন হয় এবং বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে স্ক্যাব বা গোল গোল পুরু আস্তরে পরিণত হয়ে শেষে পড়ে যায়। এর ফলে দাগ সৃষ্টি হতে পারে। সংক্রমণের ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যে এটি নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যেতে পারে। তবে ছোট শিশুসহ ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর জন্য কিছু ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত মারাত্মক। আন্তর্জাতিক গবেষকরা বলছেন, গুটিবসন্তের টিকা নিলে তা মাঙ্কিপক্সের বিরুদ্ধেও ৮৫ শতাংশ সুরক্ষা দিয়ে থাকে- কারণ এ দুটি ভাইরাসের অনেক মিল আছে। আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। সতর্ক এবং সচেতন হতে হবে। মনে রাখতে হবে, সচেতন হলে আক্রান্ত ব্যক্তি সহজে সুস্থ হয়ে উঠতে পারবে এবং একজন থেকে আরেকজনে ছড়িয়ে পড়বে না। শুরুতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কেউ আক্রান্ত হয়েছে বলে মনে করলে সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে ভর্তি হতে পারবে। কেউ আক্রান্ত হলে আইসোলেশনে রাখতে হবে। এমপক্স আক্রান্ত হলে সবাইকে তা জানাতে হবে। বিনা প্রয়োজনে যেন কেউ আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে না আসে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার করা জিনিসপত্র ও পোশাক ব্যবহার করা যাবে না।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ আল আমিন খান , নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ নজরুল ইসলাম,
সার্বিক যোগাযোগ: 01867-243396 ই-মেইলঃ dailycrimebangla@gmail.com