আগামী ৩ মে, রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের আয়োজন করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও মুসলিম উম্মাহর বৈশ্বিক সংকটকে সামনে রেখে এই কর্মসূচির ঘোষণা এসেছে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক থেকে।
রবিবার, ২০ এপ্রিল, রাজধানীর কাকরাইলস্থ ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে হেফাজতের কার্যনির্বাহী পরিষদের এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আমির শাহ্ মুহিদুল্লাহ বাবুনগরী, এবং উপস্থিত ছিলেন হেফাজতের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ। বৈঠক শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মহাসমাবেশের ঘোষণা দেন সংগঠনটির মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতের নেতারা জানান, এই মহাসমাবেশ হবে দেশের ইসলামপন্থী জনগণের অনুভূতির প্রকাশ এবং বিভিন্ন দাবি আদায়ের এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সংগঠনের যুগ্ম-মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক এসময় তুলে ধরেন হেফাজতের কিছু মৌলিক দাবি। তার ভাষ্য অনুযায়ী—
“ফ্যাসিবাদী আমলে হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরে ঘটনার বিচার দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। পাশাপাশি নারী ও পারিবারিক আইন সংশোধনের নামে ইসলামবিরোধী প্রস্তাব ও নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাতিল করতে হবে। এসব দাবি না মানা হলে ৩ মে’র মহাসমাবেশের পর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”
শুধু দেশীয় ইস্যু নয়, হেফাজতে ইসলামের বক্তব্যে উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের উদ্বেগও। তারা ভারতের ওয়াকফ আইন ও ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। এসব ইস্যুতে জনসচেতনতা বাড়াতে আগামী মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) থেকে এক সপ্তাহব্যাপী গণসংযোগ কর্মসূচি এবং ২৫ এপ্রিল শুক্রবার দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের ঘোষণাও দিয়েছে সংগঠনটি।
এই মহাসমাবেশ ও ধারাবাহিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে হেফাজতে ইসলাম আবারও সক্রিয় রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ভূমিকা রাখার প্রত্যয়ে অগ্রসর হচ্ছে, এমনটিই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে এই কর্মসূচিগুলো শান্তিপূর্ণভাবে এবং রাষ্ট্রীয় নিয়মনীতি মেনে পরিচালিত হবে কিনা—সেই বিষয়েও জনমনে রয়েছে কৌতূহল ও উদ্বেগ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ আল আমিন খান , নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ নজরুল ইসলাম,
সার্বিক যোগাযোগ: 01867-243396 ই-মেইলঃ dailycrimebangla@gmail.com