হাবিবুর রহমান,লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ

তৃণমূল পর্যায়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেতা নির্বাচনের লক্ষে দেশের বিভিন্ন এলাকার মতো লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলায়ও ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠন হচ্ছে বিএনপির। ইতোমধ্যে উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের সবক’টিতে প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে দেশের কোনো কোনো এলাকায় বিতর্ক তৈরি হলেও ব্যতিক্রম ঘটেছে কমলনগর উপজেলার পাটারীরহাট ইউনিয়নে। ইউনিয়নটির নয়টি ওয়ার্ডের নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএনপির তিন নেতা কোনো রকম বিতর্ক ছাড়াই সম্পন্ন করেছেন ভোটের আয়োজন। এমনকী তিন মাসব্যাপি এ কার্যক্রমে যুক্ত থেকেও কোনো প্রকার সম্মানী ভাতা না নিয়ে যথাযথ বিল-ভাউচারের মাধ্যমে আয়-ব্যয়ের হিসাব দিয়েছেন দায়িত্বশীলদের কাছে। যে কারণে, এমন সততা ও দক্ষতায় দলীয় নেতাকর্মীদের প্রশংসায় ভাসছেন তারা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, তৃণমূল পর্যায়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার শুদ্ধচর্চা নিশ্চিতের জন্য কেন্দ্রীয় নির্দেশনার আলোকে সারাদেশের মতো কমলনগর উপজেলায়ও ওয়ার্ড পর্যায়ে ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এজন্য নয়টি ইউনিয়নে গঠন করা হয়েছে পৃথক নয়টি নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে পাটারীরহাট ইউনিয়নে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় উপজেলা বিএনপির সদস্য এনামুল হক হাসান, ইব্রাহীম সুমন ও আজিজুল হক এ তিন নেতাকে। দায়িত্বপ্রাপ্তরা সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে তাদের সমন্বয়ে অত্যন্ত দক্ষতা ও সততার সাথে ভোটার তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেন। সে অনুযায়ী ৯টি ওয়ার্ড থেকে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদের প্রার্থীদের মাঝে মনোনয়নপত্র বিতরণ ও গ্রহণ এবং যাচাই-বাছাই শেষে প্রতীক বরাদ্দ দেন। পরবর্তীতে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে তিনটি ধাপে ব্যালট পেপারে প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে নয়টি ওয়ার্ডের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এসব নিয়ে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি না হওয়ায় আয়োজকদের প্রশংসা করে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও ফলাফল ঘোষণার সময় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা বক্তব্যে তুলে ধরেন।
নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বপালনকারী উপজেলা বিএনপির সদস্য এনামুল হক হাসান জানান, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের জন্য দল তাদেরকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা তারা নিষ্ঠার সঙ্গে পালনের চেষ্টা করেছেন। ইতোমধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর এর আয় ও ব্যয়ের হিসাব যথাযথ বিল-ভাউচারের মাধ্যমে উপজেলা কমিটির কাছে জমা দিয়েছেন। এসব কাজে ন্যূনতম কোনো অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া হয়নি। এমনকী ভোটগ্রহণে সহযোগিতাকারীদের তারা সম্মানী ভাতা প্রদান করলেও নিজেরা কোনো ভাতা নেননি।
তিনি বলেন, কমিশনের অপর সদস্যদের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং উপজেলা ও জেলা নেতাদের সহযোগিতায় কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা বা বিতর্ক ছাড়াই আমরা এটি সম্পন্ন করেছি। আমাদের নয়টি ওয়ার্ডের ভোটার, ভোটগ্রহণ ও ফলাফল নিয়ে কেউ কোনো ধরনের অভিযোগ তুলতে পারেননি।
উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব নুরুল হুদা চৌধুরী জানান, দলীয় নেতা নির্বাচনের জন্য পাটারীরহাট ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনের তিন সদস্যের কর্মকাণ্ড অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তারা সততা ও দক্ষতার সাথে কাজগুলো সম্পন্ন করেছেন। এমনকী তারাই প্রথম নির্বাচনের সকল আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমাদের অভিভাবক সাবেক সংসদ সদস্য কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এবিএম আশ্রাফ উদ্দিন নিজান পাটারীরহাট ইউনিয়নের নির্বাচন কমিশনারদের এমন দক্ষতা ও সততামূলক কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি দলীয় হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এ নিয়ে একটি পোস্টও করেছেন।