মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি।।
২০১৪ সালে খাদিজা আক্তার নামে এক ছাত্রীকে ডেকে দিয়ে ধর্ষণ চেষ্টা ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার আসামী লতব্দী মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের বহিস্কৃত সাবেক প্রধান শিক্ষক ফারুকুল ইসলাম কর্তৃক বিদ্যালয়ে জোরপূর্বক অনুপ্রবেশের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিকে ম্যানেজ করে সম্প্রতি অভিযুক্ত ওই শিক্ষক বিদ্যালয়টি অনুপ্রবেশকে কেন্দ্র করে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এছাড়া লম্পট শিক্ষক ফারুকুল ইসলাম বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করলে ছাত্রীদের যৌন হয়রানী ও শ্লীলতাহানির স্থানীয় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,২০১৪ সালে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার লতব্দী মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর ছাত্রী খাদিজা আক্তারকে নিজ কক্ষে ডেকে ধর্ষণ চেষ্টা ও শ্লীলতাহানি করে তৎকালীন প্রধান শিক্ষক ফারুকুল ইসলাম।
সে সময় শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রী ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনাটি ব্যপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। এছাড়া সেসময় স্থানীয় এলাকাবাসীসহ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা একাধিক বার বিদ্যালয় আঙিনা ও উপজেলা সদরে প্রধান শিক্ষক ফারুকুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে তার বিরুদ্ধে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত মুন্সীগঞ্জে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করা হয়। দায়েরকৃত মামলায় সাবেক প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষী প্রমানের ভিত্তিতে দোষী প্রমানীত হলেও সুকৌশলে আদালতকে অপব্যখ্যা ও ভুল তথ্য উপস্থাপন করে মামলাটি খারিজ করেন শিক্ষক ফারুকুল ইসলাম। পরবর্তীতে উচ্চ আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে উচ্চ আদালতে আপিল করেন বিদ্যালয়টির সাবেক সভাপতি হাফেজ মোঃ ফজলুল হক। যাহা নং-৫৮৪২৪। আপিলের ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক
ফারুকুল ইসলামকে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে ফারুকুল ইসলাম প্রধান শিক্ষকের পদে পুনরায় বিদ্যালয়ে যোগদানের জন্যে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করেন এবং উচ্চ আদালত বিচার প্রবেচনায় রিট পিটিশনটি খারিজ করেন। মামলা চলমান থাকাকালীন বিদ্যালয়ে যোগদানের বৈধতা না থাকলেও সম্প্রতি ফারুকুল ইসলাম বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিকে ম্যানেজ করে বিদ্যালয়ে জোরপূর্বক অনুপ্রবেশ করেন। এ বিষয়য়ে বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি হাফেজ মোঃ ফজলুল হক বাদী হয়ে
বহিষকৃত শিক্ষক ফারুকুল ইসলামকে বিদ্যালয়ে বহাল রাখা থেকে বিরত রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন করেন।
লতব্দী মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি হাফেজ মোঃ ফজলুল হক অভিযোগ করে বলেন,মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই স্কুলে এসে ভারপ্রাপ্ত হেড মাস্টারকে রুম থেকে বের করে দিয়ে স্কুলে তালা দিয়েছে বহিস্কৃত সাবেক প্রধান শিক্ষক।
২০১৪ সালে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিলো। সে যে মেয়েকে ধর্ষণ চেষ্টা করেছিলো সে মেয়ে কোর্টে তার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়েছে। তার সহপাঠী সাক্ষ্য দিয়েছে, ম্যানেজিং কমিটির লোকজন সাক্ষ্য দিয়েছে এবং আমি নিজেও সাক্ষ্য দিয়েছি। সে আদালতকে ভুল বুঝিয়ে মামলাটি খারিজ করে। পরে মামলাটি আমরা হাইকোর্টে আপেল করি। আপিলের কপি সহ আজকের ইউএনও স্যারের কাছে আমরা আবেদন করেছি যাতে সে স্কুলে আসতে না পারে। কিন্তু আজকে সে স্কুলে এসে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে রুম থেকে বের করে দিয়ে স্কুলে তালা মেরে দিয়েছে। সে গায়ের জোরে স্কুলে প্রবেশের চেষ্টা করছে এর আগে আমরা তাকে স্থায়ী ভাবে বহিষ্কার করেছি। বহিষ্কার আদেশের বিরুদ্ধে সে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করে। তার সেই রিট পিটিশনও হাইকোর্ট থেকে খারিজ হয়ে যায়। এরপর এই স্কুলে প্রবেশের আইনগত বৈধতা তার নাই। কমিটির লোকজনকে ম্যানেজ করে কিছু টাকা পয়সা দিয়ে সে স্কুলে ঢোকার চেষ্টা করছে। যে সমস্ত শিক্ষকরা সন্তান সমতুল্য ছাত্রীদেরকে যৌন হয়রানি এবং ধর্ষণ চেষ্টা করে সে সমস্ত শিক্ষক এলাকাবাসী চায় না। যদি এভাবে সে স্কুলে আসে তাহলে পূর্বের ন্যায় এলাকাবাসী শক্ত পদক্ষেপ নিবে।
লতব্দী মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ মোক্তার মুঠোফোন বলেন, এ বিষয়টা আইনের ব্যপার। আর আমি এ ব্যপারে কিছু বুঝিনা বা জানিও না!
অভিযুক্ত শিক্ষক ফারুকুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি!
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা আক্তার বলেন, গতকাল বিদ্যালয়টির সাবেক সভাপতি হাফেজ মোঃ ফজলুল হক অভিযোগ দিয়ে গেছে। এ বিষয়ে যে সমস্ত কাগজপত্র ওনি উপস্থাপন করেছেন সে বিষয়ে আমি শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করেছি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ আল আমিন খান , নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ নজরুল ইসলাম,
সার্বিক যোগাযোগ: 01867-243396 ই-মেইলঃ dailycrimebangla@gmail.com