কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।।
কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের প্রথম পছন্দ সূর্যোদয় পয়েন্ট গঙ্গামতি সৈকত।
সেখানে প্রকৃতির দেওয়া নৈসর্গিক দৃশ্য পর্যটকদের দেখার সুযোগের মধ্য দিয়ে জীবিকার উপায় খুঁজে পেয়েছিল প্রতিবন্ধী ওই কিশোর, রাজু। কিন্তু রাজুৃর জীবিকার অবলম্বন সাতটি রশির বানানো সেট করা দোলনা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন এ পরিবারের সবাই দুচোখে সর্ষেফুল দেখছেন।
গতকাল রবিবার দুপুরে এই অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে। মায়ের হাতের তৈরি এই দোলনায় গঙ্গামতি সৈকতে আসা পর্যটককে বিনোদন দিত। যে যা দিতেন তাই দিয়ে তাঁদের সংসারের ভরণ-পোষণ চলছিল। কোনদিন এক টাকাও জুটত না। আবার কোনদিন পাঁচ শথ টাকাও পেত। ওখানকার টুরিস্টদের ব্যবহৃত একটি ওয়াশরুমও পরিষ্কার করত রাজু। এই আয় দিয়ে প্রায় তিনটি বছর রাজুর সংসারের যোগান চলছিল। চলছিল ছোট্ট বোনের লেখাপড়া। পর্যটকরা আসলে যদি কেউ দোলনায় ঝুলত তাইলে কমবেশি আয় হতো রাজুর সংসারে। কিন্তু হঠাৎ সেই জীবিকা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। স্থানীয়রাও বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
রাজুথর মা ফাতেমা বেগম জানান, প্রায় এক মাস আগে জাহিদের নেতৃত্বে ১১টি ছাতাসহ বেঞ্চিপাতা হয় ওই সৈকতে। কিন্তু পর্যটকরা বেঞ্চিতে না বসে কেন দোলনায় উঠেছে। বিশেষ করে শিশু-কিশোররা উঠছে। এছাড়া বেঞ্চিতে বসলে ৩০ টাকা দিতে হয় জনপ্রতি। আর রাজুর দোলনায় নির্দিষ্ট কোন রেট নাই। যে যা খুশিমনে দেয় তাতেই স্বস্তি। এটিও রাজুর অপরাধ। এ কারণে ক্ষীপ্ত হয়ে এমন অমানবিকতা চালানো হয়েছে প্রতিবন্ধী রাজুর উপর। জীবিকার উপায় হারিয়ে এই অসহায় পরিবারটি এখন দিশেহারা হয়ে আছেন। তিনি নতুন করে দোলনার যোগান ও গঙ্গামতি সৈকতে ফের স্থাপন করার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
চেয়ার-ছাতার ব্যবসায়ী জাহিদ হাসান জানান, ঘটনার জন্য আলিফ দায়ী। পরে তাকে ব্যবসা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজুকে ম্যানেজারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাঁচশ টাকা দেওয়া হয়েছে।
পর্যটন কর্মী কেএম বাচ্চু বলেন, গঙ্গামতিতে এখন পর্যটকের ভিড় সবচেয়ে বেশি। কিন্তু ব্যবসার নামে হয়রানি বাড়ছে। দোলনায় অগ্নিসংযোগ সৈকতের ভাবমূর্তিকে কলঙ্কিত করেছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান জানান, ঘটনার পরপরই সরেজমিনে তারা গিয়েছিলেন। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা হয়েছে। দায়িদের দিয়ে নতুন দোলনা তৈরি করানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, গঙ্গামতিতে পর্যটকের ভিড় বেশি হওয়ায় শিগগিরই সেখানে একটি পুলিশ বক্স স্থাপন করা হবে। এতে পরিবেশ ও নিরাপত্তা আরও উন্নত হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ আল আমিন খান , নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ নজরুল ইসলাম,
সার্বিক যোগাযোগ: 01867-243396 ই-মেইলঃ dailycrimebangla@gmail.com