মোঃ আসাদুজ্জামান (ভুট্টু),বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
নওগাঁর বদলগাছীতে একতরফা ভাবে গ্রাম আদালতে সালিশ করার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ইউপি সদস্যের নাম মো. আহশান হাবীব। তিনি বদলগাছী উপজেলার ২নং মথুরাপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড সদস্য। অভিযোগকারীর নাম মোছা. হাফিজা আক্তার আখি। তিনি মথুরাপুর ইউপির চাঁপাইনগর গ্রামের পাপেল হাসানের স্ত্রী। পাপেল হাসান একজন পুলিশ সদস্য।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, হাফিজা আক্তার ও পাপেলের মধ্যে বিয়ের পর থেকেই দাম্পত্য কলহ চলছিল। এই কলহ নিরসনের জন্য চলতি বছরের ৩১ জুলাই গ্রাম আদালতে মামলা করেন হাফিজা আক্তারের স্বামী পুলিশ সদস্য পাপেল। সে মোতাবেক গ্রাম আদালত ৩ আগস্ট হাফিজাকে গ্রাম আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ দেয়। ঐদিন হাফিজা তার বাবা ও চাচা'সহ হাজির হয়। ইউপি সদস্য আহশান হাবীব উভয় পক্ষের বক্তব্য নিয়ে পরে শুনানী হবে বলে জানান। কিন্তু পরবর্তীতে হাফিজার সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ না করেই একতরফা ভাবে বাদী পাপেলের পক্ষে রায় প্রদান করে ইউপি সদস্য আহশান হাবীব একটি আদেশের বিবরণ স্বাক্ষর করেন। সে আদেশের বিবরণীতে স্বাক্ষর করার এখতিয়ার শুধুমাত্র ইউপি চেয়ারম্যান বা প্রশাসকের।
এই রায়কে অবৈধ ও একতরফা দাবি করে হাফিজা আক্তার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য আহশান হাবীব বলেন, মথুরাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান না থাকায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ব্যস্ততার কারণে তিনি খুব বেশি পরিষদে আসতে পারেন না। প্রশাসক অর্থনৈতিক বিষয়গুলো দেখেন। আর ইউএনও আমাকে বিচারিক ক্ষমতা প্রদান করেছেন। সেজন্য আমি গ্রাম আদালত কার্যকর রাখার জন্য টুকটাক বিচার করে থাকি। পাপেল হাসান ও হাফিজা আক্তারকে পারিবারিক বিরোধ মিটিয়ে একসাথে ঘর সংসার করার জন্য অনেকবার অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারা কোনভাবেই বিরোধ মেটাতে পারে নি। তাই পাপেল হাসানের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উভয়পক্ষের সাথে কথা বলে রায় প্রদান করেছি। কোন একতরফা রায় দেয়নি।
এ বিষয়ে হাফিজা আক্তার বলেন, আমার স্বামীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আমাকে নোটিশ পাঠানো হয়। সে অনুযায়ী আমার এবং আমার স্বামীর উপস্থিতিতে দুজনের বক্তব্য গ্রহণ করা হয়। আমি আমার স্বামীর সাথে সংসার করতে চাই। কিন্তু আমাকে না জানিয়ে মেম্বার আহশান হাবীব একতরফা ভাবে অবৈধ রায় দেয়। আমি এর বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
মথুরাপুর ইউপির প্রশাসক ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নয়। উনি যদি কোন অনিয়ম করে থাকেন তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান ছনি বলেন, একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নওগাঁ জেলা স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক টি.এম.এ. মমিন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ আল আমিন খান , নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ নজরুল ইসলাম,
সার্বিক যোগাযোগ: 01867-243396 ই-মেইলঃ dailycrimebangla@gmail.com