আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে বাড়ছে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের উদ্বেগ
শীর্ষ সন্ত্রাসীদের সক্রিয়তা, কিশোর গ্যাং এবং সীমান্তপথে অস্ত্র প্রবেশে আইন-শৃঙ্খলার হুমকি
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের শঙ্কা বাড়ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তথ্য অনুযায়ী, দেশে সক্রিয় হয়ে উঠছে নতুন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, যাদের একটি বড় অংশ কিশোর ও তরুণ। এসব গোষ্ঠীর হাতে রয়েছে পিস্তল, রিভলভার, রাইফেলসহ নানা অত্যাধুনিক অস্ত্র। একইসঙ্গে সীমান্তপথে অবৈধ অস্ত্র প্রবেশও উদ্বেগের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের সরবরাহ ও ব্যবহারের আশঙ্কা জোরালোভাবে দেখা দিয়েছে। জামিনে মুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তৎপরতা এবং বিদেশে পলাতক অপরাধীদের সহযোগিতায় গড়ে ওঠা নতুন সন্ত্রাসী বাহিনী আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলছে বলে জানিয়েছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, এ বছর জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ১৭০ জন হতাহত হয়েছেন। এর মধ্যে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন। একই সময়ে সীমান্তপথে দেশে ঢুকেছে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, যা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
র্যাবের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ১৩ হাজার ১০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে ১৬৬টি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র। গত বছর র্যাব ও পুলিশের লুট হওয়া ৩৯৬টি অস্ত্রের মধ্যে উদ্ধার হয়েছে মাত্র ৯০টি।
অপরদিকে, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) চলতি বছরের প্রথম আট মাসে সীমান্ত অঞ্চল থেকে ৬০টি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র এবং চার হাজার রাউন্ডের বেশি গুলি উদ্ধার করেছে। এছাড়া, জব্দ করা হয়েছে শতাধিক হাতবোমা ও হ্যান্ডগ্রেনেড।
বিজিবি জানিয়েছে, কিছু অসাধু চক্র সম্প্রতি সীমান্তপথে অবৈধ অস্ত্র দেশে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেন, “ধারণা করা হচ্ছে, লুট হওয়া অস্ত্রের একটি অংশ পার্বত্যাঞ্চল ও আরসার (ARSA) কাছে চলে গেছে। অস্ত্র উদ্ধারের কাজ চলছে এবং এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “যাদের কাছেই অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনী পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে এখনই কঠোর নজরদারি, সীমান্তে নজরদারির জোরদারকরণ এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে টেকসই অভিযান পরিচালনা জরুরি হয়ে পড়েছে।
---
শেষ কথাঃ
নির্বাচন সামনে রেখে দেশে স্থিতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখা এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবৈধ অস্ত্রের অনুপ্রবেশ রোধ ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে তা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ আল আমিন খান , নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ নজরুল ইসলাম,
সার্বিক যোগাযোগ: 01867-243396 ই-মেইলঃ dailycrimebangla@gmail.com