সম্পাদকীয় ডেস্ক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি সর্বশেষ ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা এসেছে। কিন্তু এর মধ্যেই সরকার মানুষের চলাচল ও সার্বিক কার্যক্রমের ওপর চলমান বিধি নিষেধ আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত বাড়িয়েছে। ফলে এর আগে আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সম্ভাবনা নেই। আবার ঈদুল আজাহার ছুটি ২০ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত হতে পারে। তাই ঈদের আগে আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সম্ভাবনা নাই। আবার করোনা পরিস্থিতি এখন সারাদেশে দ্রুত অবনতি হচ্ছে। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সম্ভাবনা নিয়ে কেউ কোনো সুনির্দিষ্ট মন্তব্য করতে পারছেন না। ফলে প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণী পর্যন্ত সব পরীক্ষা অনুষ্ঠান অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
পরীক্ষা না হলে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিকল্প কি হতে পারে, তাও কেউ বলতে পারছেন না। ফলে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকরা বেশ উৎকন্ঠায় রয়েছেন। গতবারও প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী এবং জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা হয়নি। আটকে আছে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা সহ সমমানের পরীক্ষা। প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী, জেএসসি, জেডিসি পরীক্ষা হয়ে থাকে বছরের নভেম্বর মাসে। এই চার পরীক্ষায় কম বেশি ৫০ লাখ পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষাগুলো হয় ডিসেম্বর মাসে আর প্রতিবছর ফেব্রুয়ারীতে এসএসসি ও এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষা হয়। কিন্তু করোনা সংক্রমনের কারণে গত বছর থেকে শিক্ষাপুঞ্জি অনুসারে কিছু করাই সম্ভব হচ্ছে না। করোনা পরিস্থিতিতে গত বছর ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। সরকার একাধিকবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার উদ্যোগ নিলেও সার্বিক পরিস্থিতির কারণে খোলা সম্ভব হয়নি। ফলে গত বছরে পরীক্ষা না নিয়েই উপরের শ্রেণীতে উন্নিত করা হয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের। আর এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফল বিশ্লেষণ করে ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীরা উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বা বিশেষায়ীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারে নি। ফলে বিশ^বিদ্যালয়গুলোয় প্রথম বর্ষ সম্মান শ্রেণীতে কোনো ছাত্র-ছাত্রী নেই।
সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডগুলো বলছে, তারা শর্ট সিলেবাস অনুসারে পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সেটা না হলে বিকল্প চিন্তা করা হবে। কিন্তু বিকল্প কি হতে পারে, তা তারা বলতে পারছেন না। দীর্ঘ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় ছাত্র-ছাত্রীরা পড়া শোনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। বিশেষ করে মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা হতাশায় ভুগছে। আর অধুভাই স্টাইলের ছাত্র-ছাত্রীরা পরীক্ষা না দিয়ে পাশ করার আনন্দ সাগড়ে ভাসছে। যদিও এখন আর আধুভাই স্টাইলের ছাত্র-ছাত্রী দেখা যায় না। কারণ এখন সব অভিভাবকই সচেতন তারা তাদের সন্তানদের লেখা-পড়ার বিষয়ে আন্তরিক ভাবে দেখভাল করেন। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি না খোলে তবে ছাত্র-ছাত্রীরা শিখবে কি করে? আর লেখাপড়া না করার কারণে আগামী প্রজন্ম মেধাহীন হয়ে পড়বে। তাই বাজার, গণপরিবহন সহ অফিস আদালত সব কিছু যেহেতু খোলা আছে, সে ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে কি হবে? স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের পরীক্ষা নেবার ব্যবস্থা করাই কি সংগত নয়?
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ আল আমিন খান , নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ নজরুল ইসলাম,
সার্বিক যোগাযোগ: 01867-243396 ই-মেইলঃ dailycrimebangla@gmail.com