
প্রধান উপদেষ্টাকে বিবৃতিতে সংযত থাকার আহ্বান ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর
ঢাকা, ৮ নভেম্বর ২০২৫:
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের শব্দচয়ন নিয়ে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।
ভারতের সংবাদমাধ্যম নেটওয়ার্ক ১৮ গ্রুপের প্রধান সম্পাদক রাহুল জোশির কাছে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে রাজনাথ সিং বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও সাম্প্রতিক কূটনৈতিক ইস্যু নিয়ে কথা বলেন।
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন,
> “আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো বিরোধ চাই না। তবে ড. ইউনূসের উচিত তাঁর বিবৃতির শব্দচয়ন নিয়ে সচেতন থাকা। ভারত যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম। তবুও আমাদের মূল লক্ষ্য প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা।”
২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশের গণআন্দোলনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ড. ইউনূস ও ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সম্পর্কে কিছুটা টানাপোড়েন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনাকে ঘিরে সেই সম্পর্ক আরও শীতল হয়েছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।
সম্প্রতি ঢাকায় পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফস কমিটির চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা এবং তুরস্কের পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইলমাজের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন ড. ইউনূস। পাকিস্তান ও তুরস্ক—দুটি দেশই দীর্ঘদিন ধরে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিকভাবে টানাপোড়েনের মধ্যে রয়েছে।
বৈঠকের পর তুর্কি প্রতিনিধিদের হাতে ড. ইউনূস উপহার দেন ‘আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ শিরোনামের একটি গ্রন্থ, যেখানে ২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টের আন্দোলনের ছবি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।
তবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮ দাবি করেছে, বইটিতে একটি বিতর্কিত মানচিত্র সংযোজন করা হয়েছে—‘গ্রেটার বাংলাদেশ’ নামে পরিচিত সেই মানচিত্রে ভারতের আসাম রাজ্যকে বাংলাদেশের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বইটিতে আসাম নিয়ে “যুদ্ধ পরিকল্পনা” এবং “যুদ্ধ-পরবর্তী প্রশাসনিক কাঠামো” সম্পর্কিত বিষয়ও উল্লেখ রয়েছে।
এই অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনো পাওয়া যায়নি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এমন বিতর্কিত উপস্থাপন দুই দেশের সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলতে পারে।