নিজস্ব প্রতিবেদন।।
চিকিৎসা অবহেলার রোগী মৃত্যুর অভিযোগে বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকদের কক্ষে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে মৃত রোগীর স্বজনরা। রোববার দুপুরে হাসপাতালের মেডিসিন ইউনিট-২ এর চিকিৎসকদের কক্ষে ভাংচুরের ঘটনায় হামলাকারী মৃত রোগীর ছেলেকে পুলিশ আটক করলেও পরবর্তীতে চিকিৎসকদের নির্দেশে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
মৃত শহিদুল ইসলাম (৫০) বরিশাল সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের কলসগ্রাম এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। মৃত শহিদুল ইসলামের শ্যালক ফারুক হাওলাদার জানান, তার বোন জামাতা শনিবার দিবাগত রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। রোববার সকাল নয়টার দিকে তাকে শেবাচিম হাসপাতালের মেডিসিন ইউনিট-২ এ ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর রোগীর বুকে ব্যাথা ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে দ্রুত অক্সিজেন দেয়ার নির্দেশ দিলেও কর্মরত নার্সরা অক্সিজেন দিতে দেরি করায় শহিদুল ইসলামের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ সময় চিকিৎসক এসে কর্তব্যরত নার্সদের বকাবকিও করেছে। বাবার মৃত্যুর পর তার ভাগ্নে জুম্মান হোসেন ক্ষুদ্ধ হয়ে চিকিৎসকের কক্ষে ভাংচুর করেছে। পরে পুলিশ তাকে আটক করলেও পরবর্তীতে তাকে ছেড়ে দিয়েছে।
হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, মৃত রোগীর ছেলে জুম্মান চিকিৎসকের কক্ষের টেবিলের গ্লাসসহ আসবাবপত্র ভেঙে ফেলেছে। জুম্মানকে আটক করা হলেও বাবার মৃত্যুর কারণে মানবিক দৃষ্টিতে চিকিৎসকের নির্দেশে পরবর্তীতে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
মেডিসিন ইউনিটের রেজিস্ট্রার ডা. সোলায়মান হোসেন বলেন, মেডিসিন ওয়ার্ডে প্রতিদিনই রোগীর মৃত্যু হয়। চিকিৎসকরা সর্বদা নিজেদের সাধ্যমতো চিকিৎসা সেবা দিতে চেষ্টা করেন। তবুও রোগীর স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়। তাই এ ওয়ার্ডের নিরাপত্তা বাড়ানোসহ সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা জরুরি হয়ে পরেছে।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসকের তুলনায় রোগীর সংখ্যা অনেক। চিকিৎসক তিনজন হলে রোগী থাকে চার শতাধিক। তাই চিকিৎসকরা রোগীদের পর্যাপ্ত সময় দিতে পারেনা। কিন্তু চিকিৎসকদের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর যে অভিযোগ করা হয় তা সঠিক নয়। তিনি আরও বলেন, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে দ্রুত সময়ের মধ্যে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।