• সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
৩ মে ঢাকায় হেফাজতের মহাসমাবেশ: নতুন কর্মসূচির ইঙ্গিত,,,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারে আইন মন্ত্রণালয়ে সরাসরি আবেদন করা যাবে,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা। ধর্মনিরপেক্ষতার প্রস্তাবেও আপত্তি, পঞ্চদশ সংশোধনীর আগের অবস্থান চায় বিএনপি,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা। সংগ্রাম শেষ হয়নি, গণতন্ত্র এখনো দূরে: ফখরুল,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা। ভোলা-বরিশাল সেতু, মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগের দাবীতে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ সমাবেশ/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের ইতিহাসে ‘সেরা নির্বাচন’ আয়োজন করবে : প্রধান উপদেষ্টা,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা। নওগাঁর বদলগাছীতে ভাঙা কালভার্টে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন- জনদূর্ভোগ চরমে/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধের পর বিমানের কার্গো সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে বাংলাদেশ,,,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা ফ্যাসিস্ট আ.লীগ সভাপতির ইসলামী আন্দোলনে যোগদান/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। কলাপাড়ার দ্বীন এলাহী দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি হলেন মোস্তাফিজ/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।।


হুজুগে বাঙালি—কথায় কথায় “বয়কট” এটা কি কোন সমাধান?/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।।

মোশাররফ হোসাইন রাজু।। / ৬৪ পঠিত
আপডেট: বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫


মোশাররফ হোসাইন রাজু:

আসলে বয়কট কি ও কেন? কথায় কথায় বয়কট মূল ফোকাস টা কিসে? আসুন একটু আলোচনা করি।
প্রথম বয়কট শব্দটা শুনি যখন 11 Sept 2001 এর ঘটনার প্রেক্ষিতে আমেরিকা, আফগানিস্তান আক্রমণ করে। সব মসজিদে হুজুররা কান্নাকাটি করে আমেরিকান প্রোডাক্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত দিলেন। তারপর ফ্রান্সে হিজাব নিষিদ্ধ হওয়ায় আবার ফ্রান্সের পণ্য বয়কটের তাগাদা এলো। ইরাক আক্রমণ হলো, আবারও এলো বয়কটের ডাক। এখন গাযা তছনছ হয়ে যাওয়ায় আবারও বয়কট!!! অর্থাৎ প্রায় ২৫ বছর ধরে আমেরিকান, ইসরায়েলী পণ্যসামগ্রী বয়কট মাথায় নিয়ে ব্যাবসা করে যাচ্ছে, তাদের ব্যবসা কমেনি বরং বেড়েছে বহুগুণ।

এজন্যই বললাম- বয়কট কি কোন সমাধান?? সিলেটে যে বাটার শোরুম চুরি হলো, কেএফসি ভাঙা হলো তাতে নেতানিয়াহুর কি ক্ষতি হলো?? আমাদের দেশে বাটা, ইউনিলিভারে কি ইহুদীরা চাকরি করে?? যখনই কোন ধর্মীয় আন্দোলনের ডাক আসে, আমরা কি নিজেদের মস্তিষ্ককে একটু ব্যবহার করে চিন্তা করি যা করছি তা আদৌ কোন কাজে আসছে কি না???

অবস্থা এমন যেন কোকাকোলা, পেপসি পান করা মানে বিশাল গুনাহর কাজ। কারণ এদেশে আমরা সবাই চোখ বুজে বিশ্বাস করি সফ্ট ড্রিংকস মানেই ইহুদী পণ্য। একটু গুগল করে যে মালিকানা কার সেটা দেখারও সময়, জ্ঞান আমাদের নেই। যেমন গত ২৫ বছর ধরে কোকাকোলা বয়কট চলছে, তাতে কোকাকোলা কোম্পানির একটা লোমও ছেঁড়ে নাই, বরং ব্যাবসা, উৎপাদন বেড়েছে বহুগুণ। তাহলে আমাদের ভুলটা কোথায়?? আমরা তো বয়কট করছি তাতে লাভ হচ্ছে না কেন??

লাভ হচ্ছে না আর হবেও না। কারণ আল্লাহ তাআলা যেমন জালিমদের সাথে থাকেন না, তেমনি মূর্খ, অকর্মা, ভন্ডদের সাথেও থাকেন না। আমরা হচ্ছি সেই মূর্খ, অকর্মা যারা জানি না কোথায় আঘাত করতে হবে। আমরা ইহুদীদের পণ্য বয়কট করা মানে বুঝি আমাদের আশেপাশে কিছু খাদ্য সামগ্রী বয়কট করা। যেমন: কোকাকোলা, পেপসি, ম্যাকডোনাল্ডস, ডমিনোজ, ইউনিলিভার এসব হাবিজাবি।
আসলে এর একটাও ইহুদী পণ্য না। কোকাকোলা, পেপসি মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি, ইউনিলিভার ইউকে কোম্পানি যার সিইও একজন ডাচ ব্যবসায়ী, বাটা কানাডিয়ান কোম্পানি। আমাদের দেশে বাটা শুধু ট্রেডমার্ক, জুতোগুলোর কাঁচামাল, পণ্য, কারখানা, শ্রমিক সবই এদেশের। আমাদের ধারণা ৮০ লক্ষ ইহুদীকে আমরা ১৮০ কোটি মুসলমান কোকাকোলা না খেয়ে, বাটার জুতা পায়ে না দিয়ে পরাজিত করব!!! এমন গণ্ডমূর্খের সাথে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যে থাকবেন না, এদের দোয়া উনি শুনবেন না- এটাই স্বাভাবিক হওয়া উচিত।
ইহুদীরা আমাদের মত গর্দভ না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ক্ষুধার্ত, শুন্যহাতে, অর্ধনগ্ন হয়ে তারা ফিলিস্তিনে আশ্রয় নিলেও পরিশ্রম আর জ্ঞানার্জনে তারা কোন কমতি রাখেনি। মাত্র ৮০ লক্ষ ইহুদী আমাদের নাকে তেল দিয়ে কিভাবে ঘুরাচ্ছে সেটা একবার বোঝার চেষ্টা করি। তারা দখল করে আছে পুরো বিশ্বের ব্যাংকিং সিস্টেম। ডলারের উপরে যে লেখা “ফেডারেল ব্যাংক”; এটার মালিক রথচাইল্ড ফ্যামিলি। ধারণা করা হয় এই ইহুদী পরিবার পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী পরিবার। যদিও তারা সবসময় পর্দার আড়ালে থাকে। পুরো ইউরোপের ব্যাংক, ইন্সুইরেন্স তাদের দখলে। শিপিং সেক্টরে চার্টারার, লজিস্টিক, মালিকের খোঁজ যদি করেন দেখবেন বেশিরভাগই ইহুদীদের দখলে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ শিপিং কোম্পানি “Maersk Line” এর মালিক ডেনমার্কের বিখ্যাত মোলার ফ্যামিলি যারা আসলে ইহুদী। যারা শিপ নিয়ে ব্যবসা করেন বা চার্টারার তাদের অন্যতম কোম্পানি হলো ZIM যেটা পুরোটাই ইসরাইলের। কিছুদিন আগে তারা ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে কানাডার এটলাস কর্পোরেশনের সাথে। ওষুধ কোম্পানি, টেক্সটাইল কোম্পানির একটু খোঁজ লাগান দেখবেন সব নামীদামী কোম্পানির গভর্নিং বডিতে ইহুদী বসে আছে!! অস্ত্র-গোলা বারুদ, অপরিশোধিত তেল, কয়লার খনি ব্যবসায় যদি খোঁজ নেই তাহলে একটি আমেরিকান বিখ্যাত পরিবারের নাম চলে আসবে, সেটা হলো রকফেলার ফ্যামিলি; এরাও ইহুদী। আর আমরা ঝার ফুঁক ও ঝোলা কাঁধে নিয়ে তাবলীগ করতে করতে ভুলেই গেছি মুসলিম উম্মাহর সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করাও মুসলমানের দায়িত্ব।
সুতরাং আমি আপনি কোকাখোলা না খেয়ে, কেএফসিতে ঢিল ছুঁড়ে, বাটার জুতা চুরি করে যে সওয়াবের জিহাদ করছি- তাতে ইসরাইলের কিছু ই হবে না (একটা বা* ও ছিঁড়বে না)। ইহুদীদের সাথে যদি জিহাদ করতেই হয়, আসেন অর্থনৈতিক জিহাদ করি। বয়কট না করে কোকাকোলার চেয়েও ভালো প্রোডাক্ট বানাই। যেটা বানিয়ে দেখিয়েছে আফগানিস্তান। তাদের তৈরী পামীর কোলা এখন আমেরিকা সহ সারা পৃথিবীতে এক্সপোর্ট হয়। তারা আমাদের মত রাস্তা আটকায়ে স্লোগান না দিয়ে বরং কাজে নেমেছে। আসেন আমরাও নামি। নিজেদের কোম্পানি তৈরী করি, সিইও হওয়ার স্বপ্ন দেখি। বাইরের বিজ্ঞানী, এক্সপার্টদের উপর ভরসা করা বন্ধ করি। কারণ মুসলমানের লোকবলের অভাব নাই, ইন শা আল্লাহ কোনদিন হবেও না। অভাব হচ্ছে আমাদের শক্তিশালী অর্থনৈতিক ব্যাকআপ নেই, শক্তিশালী হওয়ার স্বপ্ন নাই যেটা ইসরাইলের আছে।
আর এতক্ষণ আমার লেখা পড়ে, এখনও যদি বয়কটের পক্ষে থাকেন তাহলে ফেসবুকটাও বয়কট করেন। কারণ এটার মালিকও ইহুদী!!!

সবশেষে ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের একটা কথা বলি- “ইসলাম আবেগের ধর্ম না, ইসলাম গবেষণার ধর্ম”। সুতরাং আবেগের মাধ্যমে মূর্খের মত কাজ আর অকর্মার ঢেঁকি হয়ে বেঁচে থাকলে আর যাই হোক, ইসলামের কোন উপকার হবে না। আমরা কতটা মূর্খ তার একটা উদাহরণ দেই। মসজিদে আকসার নামে আমরা যেই ছবি শেয়ার করছি, লাইক করছি, পোস্ট করছি সেটা কি আদৌ মসজিদে আকসা?? নাকি ডোম অব দ্যা রক??

ভালো লাগলে শেয়ার করুন। ফিলিস্তিনবাসীদের জন্য দোয়ার পাশাপাশি খাদ্য সহোযোগিতায় হাত বাড়ান। নিজ দেশে ভাংচুর করা বাদ দেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ