শিশু-কিশোরদের কোলাহলে মুখরিত জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পুরনো জিমনেসিয়াম। ম্যাটের ওপর রিদমিক জিমন্যাস্টিকসে ব্যস্ত এক কিশোরী। পাশের ফ্লোরে বসে তাকে সমস্বরে উৎসাহ দিচ্ছে আরেক দল ছেলেমেয়ে।
পল্টনের এই জিমনেসিয়ামে আজ মঙ্গলবার দিনব্যাপী হয়ে গেল ‘বঙ্গবন্ধু ১ম আন্তঃস্কুল জিমন্যাস্টিকস্ প্রতিযোগিতা। এতে অংশ নিয়েছে সারা বাংলাদেশ থেকে আসা ৫৬টি স্কুলের ২৫০ জন জিমন্যাস্টস। এ উপলক্ষ্যে জিমনেসিয়ামে সারা দিন লেগে ছিল কচিকাচার মেলা।
বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিকস্ ফেডারেশন প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর এই প্রথম আয়োজন করা হলো স্কুলের প্রতিযোগিতা।
দিনাজপুর কালেক্টরেট হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ঢাকায় এসেছে তাসকিন আহমেদ। পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র ফ্লোর এক্সারসাইজে সোনা জয়ের পর বলছিল, ‘এখানে খেলতে এসে খুবই ভালো লাগছে। আমার আনন্দ আরও বেড়ে গেছে যখন মেডেলটি পেয়েছি।”
দিনাজপুর থেকে উঠে এসেছেন কিংবদন্তি জিমন্যাস্ট রওশন আক্তার ছবি। সেই জেলা থেকেই এবার স্কুল জিমন্যাস্টিকসে এসেছে ৩২ জন জিমন্যাস্টস। এদের মধ্যে ৬টা পদক জিতেছে স্কুলটি।
স্কুলটির কোচ আজমেরি সুলতানা নিজেও একজন সাবেক জিমন্যাস্ট। ঢাকায় এসে উচ্ছ্বসিত আজমেরি বলছিলেন, “মাত্র ৩ মাসের প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি। এখানে এসে খুব ভালো লাগছে। আমরা ভাবতেও পারেনি এত চমৎকার প্রতিযোগিতা হবে।”
দিন ব্যাপী আয়োজনে যারা ইভেন্টে জিতেছে তারা স্বাভাবিকভাবেই পদক পেয়েছে। কিন্তু অংশ নেওয়া সব জিমন্যাস্টদেরই দেওয়া হয়েছে একটি করে সার্টিফিকেট ও পদক।
রূপকথা মল্লিক পড়ছে রাজধানীর বনশ্রী ড্রেক্সেলা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেনীতে। খুদে এই জিমন্যাস্ট প্রথমবার অংশ নিয়েই জিতেছে ব্রোঞ্জ। বাবা রিপন লাল মল্লিক ল ফার্মে চাকরি করেন। মেয়েকে জিমন্যাস্টিকসে আনতে পেরে খুশি তিনি, ‘গত দুই বছর ধরে সে জিমন্যাস্টিকস শিখছে। ওর আগ্রহের কারণে এখানে খেলা শেখাই। আজই প্রথম প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে। এবং পদকও পেয়েছে। খুব ভালো লাগছে আমার।”
জ্যোতি সাহার মেয়ে নবনীতা সাহা পড়ছে ভিকারুন নিসা নূন স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীতে। মোবাইল ফোন, ভিডিও গেমসসহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্লাাটফর্মের আসক্তি ছেড়ে মেয়েকে জিমন্যাস্টিকসে দিতে পেরে আনন্দিত তিনি, “এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, ইউটিউবে আসক্ত হয়ে পড়ছে। কিন্তু এসব নেশা থেকে দূরে রাখতে আমি মেয়েকে জিমন্যাস্টিকসে এনেছি। সে এখানে সময় যেমন কাটাতে পারছে, খেলাধুলার মাধ্যমে শরীরও ফিট রাখতে পারছে। এটা অনেক ইতিবাচক দিক আমাদের জন্য