আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) শুক্রবার রাজধানীর বিজয়নগরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে ড. ইউনূসের পদত্যাগ নয়, বরং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সব পক্ষকে সমঝোতামূলক সমাধানে পৌঁছার আহ্বান জানিয়েছেন। এ আহ্বান জানান দলের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।
তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের আগ্রহ প্রকাশকে কেন্দ্র করে জাতির মধ্যে যে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, অনিশ্চয়তা ও জটিল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে এই জরুরি সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করা হয়। গত কয়েক মাস ধরে দেশে যে পরিস্থিতি ঘুরপাক খাচ্ছিল এবং সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন পক্ষের যে দূরত্ব দৃশ্যমান হচ্ছিল তাতে আমরা উদ্বিগ্ন ছিলাম। আমরা বলেছিলাম এটা বন্ধ না হলে ক্রমশ জটিলতা ও সংকট দেখা দেবে।”
মজিবুর রহমান মঞ্জু আরও যোগ করে বলেন,
“প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ নেই বলেও আমরা দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম। গত কয়েকদিনে বিএনপি ও এনসিপির পাল্টাপাল্টি বক্তব্য, ছয়জন উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি, যমুনা অবরোধ করে গত কয়েক মাসের নানা দাবি-দাওয়া-আন্দোলন এবং সর্বশেষ সোশ্যাল মিডিয়া ও কিছু সংবাদপত্রে সেনাপ্রধানের অফিসার্স অ্যাড্রেসে দেওয়া বক্তব্য প্রচার ব্যাপক ধুম্রজাল তৈরি করেছে। স্পষ্টত সরকারের সঙ্গে বিএনপি ও এনসিপির সম্পর্কের অবনতি লক্ষ্য করা গেছে। সেনাপ্রধানের নামে প্রচারিত বক্তব্য থেকে বোঝা গেছে সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সমন্বয়গত ঘাটতি রয়েছে।”
“গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রসমাজকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য সরকারের উপদেষ্টারা কোনো উদ্যোগ নেননি। কোনো কোনো উপদেষ্টার তৎপরতা ও কর্মকাণ্ডে রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পর সংহতি ও জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হয়েছে। ছাত্রদের সমন্বয়ে গঠিত নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি কিছু কিছু বিষয়ে অহেতুক বিবাদে লিপ্ত হয়ে নিজেদের ইমেজ ও গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। বিএনপিসহ বড় কয়েকটি রাজনৈতিক দল সংস্কার, বিচার, নির্বাচন এবং আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক তৎপরতা নিষিদ্ধকরণ প্রসঙ্গে একেকবার একেক রকম বক্তব্য দিয়েছে। বড় দুটি দল নিজেদের ক্ষমতাকেন্দ্রিক বিভেদে লিপ্ত হয়ে প্রশাসনকে অকার্যকর ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিঘ্ন ঘটিয়েছেন। এসব বিষয়ে সরকারের অবস্থান ছিল অস্পষ্ট ও দুর্বল। ”
“নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না আসায় এবং সরকার অনির্দিষ্ট মেয়াদে দীর্ঘকাল ক্ষমতায় থাকতে চায়- এরকম একটি সন্দেহ-সংশয় কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের মধ্যে প্রকটভাবে দেখা দিয়েছে। এসব বিষয়ে আমরা বারবার অনুরোধ জানানো সত্ত্বেও বিবদমান পক্ষগুলো বসে ভুল বোঝাবুঝি দূর করার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।”
সেনাবাহিনী প্রধানের সর্বশেষ বক্তব্য প্রসঙ্গে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, উনার বক্তব্যটা আমরা সোশ্যাল মিডিয়া ও সংবাদপত্রের মাধ্যমে জেনেছি। কোনো সরকারি তথ্যসূত্র বা সংস্থার অফিসিয়াল বক্তব্য আকারে পাইনি। বিস্তারিত বক্তব্যটা আইএসপিআর বা সরকারি তথ্যসূত্রের আলোকে এলে ভালো হতো। সেনাপ্রধান এর আগেও ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছিলেন। বিডিআর বিদ্রোহের বিচার, ইনক্লুসিভ ইলেকশন ও সংস্কার বিষয়ে তিনি খোলামেলা কথা বলেছেন