সিলেট মহানগর প্রতিনিধি:
আতিকুর রহমান, পেশায় একজন বাংলাদেশি ব্যবসায়ী, বর্তমানে কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন। তার পরিবার সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে তিনি ও তার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক নিপীড়ন, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং মিথ্যা মামলার শিকার হয়ে আসছেন।
২০২৩ সালে আতিকুর রহমানের বড় ভাই, মো. মাহবুবুর রহমান, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তার এই রাজনৈতিক পদক্ষেপে অসন্তুষ্ট হয়ে ওঠেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো. ইকলাল আহমেদ এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী তারা মিয়া। ফলস্বরুপ, তাকে নির্বাচন থেকে সরে আসতে হয়। নির্বাচনের পর থেকে, তারা মাহবুবুর রহমান এবং তার পরিবারের প্রতি বৈরী মনোভাব গ্রহণ করেন এবং নানাভাবে হয়রানি করতে থাকেন।
আতিকুর রহমানের মা জানান, আতিকুর রহমানের ওপর নির্যাতন তীব্র হয় মাহবুবুর রহমান দেশত্যাগের পর থেকে। ২০২৪ সালে, স্থানীয় ছাত্রলীগ প্রেসিডেন্ট আকতার মিয়া আতিকুর রহমানের বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রীকে (আতিকের স্ত্রীকে) যৌন হয়রানির চেষ্টা করে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুনু মিয়া অভিযোগ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান এবং উল্টো ভুক্তভোগী নারীর চরিত্র নিয়ে অশোভন মন্তব্য করেন।
পুলিশি সহায়তা না পেয়ে, আতিকুর রহমান আদালতে আকতার মিয়া ও ওসি নুনু মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এর পরপরই, আতিক ও তার পরিবারের ওপর ধারাবাহিক হুমকি, হামলা এবং চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটতে থাকে। আতিকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসভবনে একাধিকবার হামলা চালানো হয়। এসব ঘটনার ফলে তার স্ত্রী মারাত্মক মানসিক চাপের মধ্যে পড়েন।
এই পরিস্থিতিতে, পরিবারের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আতিকুর রহমান কানাডায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন। কানাডায় পৌঁছানোর পরও বাংলাদেশে তার পরিবারের ওপর নির্যাতন বন্ধ হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, ওসি নুনু মিয়া তার বিরুদ্ধে থানায় ভাঙচুর ও পুলিশের যানবাহনে অগ্নিসংযোগের মতো গুরুতর অভিযোগ এনে একটি মিথ্যা মামলা রুজু করেন। অন্য একটি বানোয়াট মামলার প্রেক্ষিতে আতিকের পিতা মো. মোজাম্মেল আলীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়।
আতিকুর রহমানের মা জানান , “বাংলাদেশে আমার ছেলেদের কোনো নিরাপত্তা নেই। রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ও পুলিশের কিছু অসাধু সদস্য আমার ছেলেদের বারবার নিপীড়ন করেছে। আমরা শুধু শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ জীবন চাই।”
তিনি আরও জানান, বর্তমানে উক্ত প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে তাদের রাজনৈতিক প্রতিপত্তি বজায় রাখার চেষ্টা করছে এবং আগের মতোই আতিক ও মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা পরিচালনা করছে।
বর্তমানে, আতিকুর রহমান ও তার পরিবার কামনা করছে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনের।