সেলিম মিয়া, রংপুর প্রতিনিধি।।
আঁশবিহীন সুস্বাধু হাঁড়িভাঙা আম। গাছে গাছে ফুটেছে মুকুল, যা মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণ। সেই ঘ্রাণে চাষিদের মনও চাঙ্গা। প্রকৃতিও বেশ অনুকূলে।
শীতের বিদায়ের সাথে সাথে বসন্তের আগমনে ফাল্গুনের হাওয়া চারিদিকে দুলছে আমের সোনালী মুকুল রংপুরে গ্রাম অঞ্চলে বিভিন্ন এলাকায় গাছে গাছে আমের মুকুল, ছড়াচ্ছে পাগল করা ঘ্রাণ, মৌ মৌ করছে মৌমাছির দল ।
প্রকৃতিতে ক্যালেন্ডারের পাতায় বাজছে শীতের বিদায়ী ঘণ্টা। কিছুদিনের মধ্যে বেলা ফুরাবে অতিথি পাখিদের, ফিরবে নিজ মাতৃভূমিতে। শীতের বিদায়ের সাথে সাথে বসন্তের আগমনে ফাল্গুনের হাওয়া চারিদিক মুখরিত। সময়ের পালাবদলে প্রকৃতির এই খেলায় ঋতুরাজ বসন্তে প্রকৃতি সেজেছে নতুন রূপে। আগুন ঝরা ফাল্গুনের আহ্বানে শিমুল গাছে ফুটেছে পলাশ। গ্রামের মেটো পথের দূর সীমানা থেকে ভেসে আসছে কোকিলের কুহু কুহু সুরে বাজছে। নানা ফুলের সঙ্গে সূর ছড়াচ্ছে আমের গাছের মুকুলও। সোনালী হলুদ রঙের আমের মুকুলের মনকাড়া ঘ্রাণ। মুকুলের সেই সুমিষ্ট সুবাস আলোকিত করে তুলছে মানুষের হৃদয়।মৌমাছির দল ঘুরে বেড়াচ্ছে গুনগুন শব্দে। ছোট পাখিরাও মুকুলে বসেছে মনের আনন্দে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, রংপুরে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার ২১৫ হেক্টরের বেশি জমিতে আম চাষ হয়েছে। এর মধ্যে হাড়িভাঙ্গার হয়েছে ১ হাজার ৮৮৭ হেক্টর জমিতে। প্রতি হেক্টরে গড় উৎপাদন হয় ২০ থেকে ২২ মেট্রিক টন। ৪ মাসের মধ্যে আম কৃষকের ঘরে ওঠে।
এ এলাকাতেই এখন কম-বেশি রয়েছে আমের বাগান। দুরন্ত শৈশবে কাঁচা-পাকা আম পাড়ার আনন্দ অনেকেরই স্মৃতিতে চির অমর। তাছাড়া বর্তমানে আম বাংলাদেশের প্রধান চাষযোগ্য অর্থকরী ফলগুলোর মধ্যে অন্যতম।
কৃষকরা বলেন, হাড়িভাঙ্গা আম বেশি দিন সংরক্ষণে রাখা যায় না। এই আম কীভাবে বেশি দিন সংরক্ষণে রাখা যাবে, এ নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন। তাহলে এই আম বিদেশে রপ্তানি করা যাবে।
রংপুরে সদর উপজেলায় অযোধ্যাপুর, চন্দনপাট,শ্যামপুর,পালিচড়,বদরগঞ্জ,এলাকায় বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্যের দেখা মিলেছে আম বাগানে। দৃশ্যটি যে কাউকেই কাছে টানবে।
বসন্তের ফাল্গুন আর আমের মুকুল তাই যেন একই সূত্রে গাঁথা। বছরের এই নির্দিষ্ট সময় জুড়ে প্রায় চারিদিকে শ্রেণী পেশার মানুষেরও দৃষ্টিও থাকে চির সবুজ আম গাছের মগডালে।
এ ক্ষেত্রে ম্যানকোজেব গ্রুপের ছত্রাক নাশক ২ গ্রাম অথবা এমাডোক্লোরিড গ্রুপের দানাদার প্রতি লিটার ২ গ্রাম তরল .২৫ মিলি মিটার ও সাইপারমেথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি লিটার মিশিয়ে স্প্রে করা যেতে পারে। আবার মুকুল গুটিতে রূপান্তরিত হলে একই মাত্রায় ২ বার স্প্রে করতে হবে। এতে ছত্রাক জাতীয় রোগ থেকে আমের মুকুলগুলো রক্ষা পাবে সেই সাথে বাম্পার আমের ফলন হবে বাগান মালিকরা জানান।