এম জাফরান হারুন, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি।।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার সূর্যমনি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডভূক্ত পশ্চিম ইন্দ্রকুল গ্রামের করিম উদ্দিন ওয়াকফ ষ্টেটের নাল জমি জবরদখল পূর্বক ভিটি বাড়ি থেকে এখন উচ্ছেদের পায়তারা চালাচ্ছে সেলিম মৃধা গং ও মতি খলিফা গং নামের লোকজন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ভুক্তভোগীরা জবরদখল হওয়া নাল জমি পুনরায় ফেরত সহ ভিটি বাড়ি থেকে উচ্ছেদের পায়তারার বিচার চেয়ে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানা যায়।
অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার (৮ই মার্চ) প্রতিবেদক সরেজমিনে আসলে ভুক্তভোগীদের মধ্যে ওই ষ্টেটের বর্তমান মোতাওয়াল্লি মোঃ মোশাররফ হোসেন মৃধা বলেন, আজ থেকে ১৯৩৬ সনের দলিল মোতাবেক এ ষ্টেটের ওয়ারিশ ছিল একজন মাত্র ভাগিনা। তার নাম ছিল করিম উদ্দিন মৃধা। তার নামেই ষ্টেটের দলিল মূলে নাম হয় করিম উদ্দিন ওয়াকফ ষ্টেট। পরে তার মৃত্যুে ওই সম্পত্তি মাইনুদ্দিন মৃধা মোতাওয়াল্লি হয়ে ভোগদখল করেন। পরে মাইনুদ্দিন মৃধার মৃত্যুে দুই ছেলে এক মেয়ে সম্পত্তি ভোগদখল করেন। তাদের মধ্যে বড় ছেলের মৃত্যুে ওয়ারিশ হয় তার দুই ছেলে এক মেয়ে। তাদের ভীতর আমি মোশাররফ হোসেন মৃধা বড় ছেলে। যাহার দরুন ২০২৩ সন থেকে বর্তমান মোতাওয়াল্লি নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছি। কিন্তু মাইনুদ্দিন মৃধা যিনি আমার দাদা ছিলেন এবং মোতাওয়াল্লি হিসেবে নিয়োগ হন ১৫/১০/১৯৫৩ সনে। যাহার নথিপত্র আমার কাছে রয়েছে।
বর্তমান মোতাওয়াল্লি আরও বলেন, এদিকে প্রতিপক্ষের সেলিম মৃধা গং ও মতি খলিফা গং নামের লোকজন ভূয়া ওয়ারিশ সেজে ভয়ভীতি দেখিয়ে ষ্টেটের নাল জমি জবরদখল করে। এবং ভিটি বাড়ি থেকে এখন উচ্ছেদের পায়তারা চালাচ্ছে। আসলে ওই ষ্টেট সম্পত্তির কোনও প্রকার তারা ওয়ারিশ না। আবার কখনো তারা কবলা মূলে মালিক বলে বেড়ান। কিন্তু ওয়াকফ ষ্টেটের জমি কখনো দলিল দেওয়া যায় না। তাহলে তারা আসলেই ভূয়া ওয়ারিশ সেজে এখন বিভিন্ন টালবাহানা সহ বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে এবং বিভিন্ন ভাবে ষড়যন্ত্র সহ আমাকে ও আমার পরিবারের লোকজন কে জীবননাশের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। এজন্য আমি এর প্রতিকার চেয়ে ঢাকা ও পটুয়াখালী ডিসি রেভিনিউ বরাবর এবং বাউফল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। যাহা ডিসি রেভিনিউ দ্রুত তদন্ত পূর্বক রিপোর্ট দেওয়ার জন্য বাউফল ইউএনওকে নির্দেশ দিয়েছেন। আমি এর সঠিক বিচার দাবি করছি।
আরও কথা থাকে যে, ওয়াকফ ষ্টেট ঢাকা প্রধান কার্যালয় থেকে ওই ভূয়া ওয়ারিশ সাজা সেলিম মৃধা গং ও মতি খলিফা গং নামে লোকজনের বিরুদ্ধে তলব পূর্বক নোটিশ দিলে তারা সেখানে হাজির হয়ে কোনও প্রকার কাগজপত্র কিংবা কোনও জবাব দিতে পারেননি।
সরেজমিনে স্থানীয়রা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে এমনকি সেই ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি মাইনুদ্দিন মৃধা মোতাওয়াল্লি হয়ে সম্পত্তি গুলো ভোগদখল করতেন। পরে তার ওয়ারিশরা ভোগদখল করতো। এখন মোশাররফ মৃধা মোতাওয়াল্লি হয়ে ভোগদখল করে আসছেন। কিন্তু এদিকে সেলিম মৃধা গং ও মতি খলিফা গংরা দলিল মূলে মালিক হয়ে সম্পত্তির নাল জমি ভোগদখল করছেন। তাদের মধ্যে এনিয়ে বিরোধ চলমান রয়েছে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে প্রতিপক্ষ সেলিম মৃধা গং ও মতি খলিফা গংদের পক্ষে মতি খলিফার ছেলে মোঃ রুহুল আমিন বলেন, আমরা কবলা সূত্রে মালিক হয়ে সম্পত্তি ভোগদখল করছি। এবং এব্যাপারে মামলা হলে সেখান থেকে আমরা রায় পেয়ে ভোগদখলে আছি। তবে ওয়াকফ ষ্টেটের সম্পত্তি দলিল করা হয় না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি।
এব্যাপারে বাউফল থানার ওসি শোনিত কুমার গায়েন বলেন, ওয়াকফ ষ্টেটের সম্পত্তি প্লাস বর্তমান মোতাওয়াল্লিকে জীবননাশের হুমকি বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তবে মোতাওয়াল্লি কে আদালতে আশ্রয়ের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং তার জীবননাশের হুমকি জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ বশির গাজী বলেন, এমুহূর্তে আমি কেশবপুর নির্বাচনে আছি। বিষয়টি আমার সঠিক মনে নেই। তবে অফিসে গিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।