মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবে মোসাদের অভিযান পরিকল্পনা কেন্দ্র ও সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার কার্যালয়ে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দাবি করেছে ইরানের ইসলামিক রেভুল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি)। মঙ্গলবার (১৭ জুন) এই হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে ইরানি কর্তৃপক্ষ।
ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা তাসনিম এবং আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানায়, আইআরজিসি এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, তারা তেল আবিবে অবস্থিত ইসরায়েলি সেনা ঘাঁটি ও গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের ‘অপারেশন প্ল্যানিং সেন্টার’-এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
আইআরজিসির বিবৃতিটি ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়েছে। এতে বলা হয়, হামলায় ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে সফলভাবে আঘাত হেনেছে এবং সংশ্লিষ্ট স্থাপনাগুলোতে এখনো আগুন জ্বলছে।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এখনো এই হামলা নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। তবে ইসরায়েলি গণমাধ্যমের একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, দেশটির উপকূলীয় শহর হার্জলিয়ায় একটি ‘সংবেদনশীল স্থানে’ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে বলে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ভোরে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে সোমবার (১৬ জুন) ইরানের রাজধানী তেহরান ও পার্শ্ববর্তী আলবোর্জ প্রদেশে অভিযান চালিয়ে মোসাদের দুটি ড্রোন তৈরির কারখানা ধ্বংস করার দাবি করেছে ইরান। এ সময় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী দুইজন মোসাদ এজেন্টকে গ্রেপ্তার করে বলে জানিয়েছে সরকারি বার্তা সংস্থা আইআরএনএ।
ইরানি পুলিশের মুখপাত্র সাঈদ মন্তাজের আল-মেহদি আইআরএনএ-কে জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে:
• ২০০ কেজিরও বেশি বিস্ফোরক
• ২৩টি ড্রোনের যন্ত্রাংশ
• লঞ্চার
• অন্যান্য কারিগরি সরঞ্জাম
• একটি নিসান পিকআপ ট্রাক
ইরানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই এজেন্টরা ড্রোনের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা করছিলেন।
ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। তবে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ এবং পরস্পরের ভূখণ্ডে হামলার দাবি–প্রতিদাবির মধ্যে এই উত্তেজনা নতুন মাত্রা পাচ্ছে। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, সরাসরি সামরিক সংঘাতে গড়াতে পারে এই বিরোধ।