কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।।
কলাপাড়ায় বণ্যানিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধের ভাঙন ক্রমশ বাড়ছে। বিরামহীন বৃষ্টি, অস্বাভাবিক জোয়ারে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের ঝাপটায় উপজেলার অন্তত পাঁচটি স্পটের সাড়ে চার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্তদশায় রয়েছে। ইতোমধ্যে রিভার সাইটসহ মূল বাঁধের ৮০ শতাংশ বিলীন হয়ে গেছে। ফলে ওইসব এলাকার মানুষ তাদের সম্পদ দূর্যোগে ঝুঁকিতে রয়েছে। যে কোন সময় জলোচ্ছ্বাসে গোটা এলাকায় প্লাবণের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে ১২ গ্রামের কৃষক আমন ফসলহানির শঙ্কায় রয়েছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড এসব বাঁধের ভাঙন ঠেকাতে জরুরি মেরামতের কাজ করলেও তা ভাঙনের তোড়ে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
সরেজমিনে খোঁজ-খবর নিয়ে দেখা গেছে, নীলগঞ্জের গৈয়াতলা, বালিয়াতলীর চরবালিয়াতলী, চম্পাপুরের করমজাতলা ও দেবপুরে ভাঙনের যেন তান্ডব চলছে। এছাড়া নিজামপুরে অন্তত পাঁচ শথ মিটার বেড়িবাঁধ অত্যন্ত ঝুঁকিতে রয়েছে। গত মাসাধিককালের কয়েকদফা জলোচ্ছ্বাসের ঝাপটায় রাবনাবাদ পাড়ের করমজাতলার প্রায় এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধের রিভার সাইটের স্লোপসহ মূল বাঁধ ৮০ শতাংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বাঁধের পাড়ের মানুষ চরম বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। বাঁধ ঘেঁষা ২৭টি পরিবার এখন ভেসে যাওয়ার শঙ্কায় বিনিদ্র রাত কাটাচ্ছেন।
পাউবোর স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, ওই স্পটে বাঁধের প্রটেকশন দেওয়া হলেও টিকছে না। আর বিকল্প বাঁধ করার মতো কোন জমি কিংবা মাটি নেই। দেবপুরের গোটা এলাকা ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। দেড় কিলোমিটার বাঁধের অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। গৈয়াতলার প্রায় দেড় শথ মিটার বেড়িবাঁধ প্রটেকশন দেওয়া হলেও ফের রিভার সাইট ধসে গেছে। একটি স্লুইসসহ গোটা বাঁধ ফের সোনাতলা নদীতে বিলীন হতে চলছে। এলাকার মানুষ কৃষিজমির ফসলহানির শঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। চরবালিয়াতলীর বেড়িবাঁধটি রক্ষায় জিও ব্যাগ দেওয়া হলেও তা ভেসে গেছে ৭৫ শতাংশ। এখন প্রায় আড়াই শথ ফুট বাঁধের স্লোপসহ টপ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সেখানকার মানুষ চরম শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন। নিজামপুরে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে অন্তত পাঁচ শথ মিটার বেড়িবাঁধ। কৃষকরা জানান, এবছর গত এক মাস ধরে প্রবল বৃষ্টিপাত চলছে। চলছে নিম্নচাপের প্রভাব। অস্বাভাবিক জোয়ারের তোড় বাড়ছে। ভাঙছে নদীতীর। দূর্যোগ ঝুঁকি ক্রমশ বাড়ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহআলম জানান, এমনিতেই প্রাকৃতিকভাবে নদীর পশ্চিম তীরের বরাবর ভাঙনপ্রবণতা বেশি থাকে। একারণে রাবনাবাদ পাড়ের বাঁধ ঝুঁকিতে থাকছে। তারপরও করমজাতলায় ইতিপূর্বে জরুরি মেরামত করা হয়েছে। কিন্তু টিকছে না। ওখানে আর বাঁধ করার উপযোগিতা নেই। মাটি নেই, জমিও নেই। দেবপুরের বাঁধ মেরামত করার পরিকল্পনা রয়েছে। চরবালিয়াতলীতে জিওব্যাগ দেওয়া হয়েছে। নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। শুনেছেন। সরেজমিনে পরিদর্শণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া গৈয়াতলার বাঁধের ধ্বস ঠেকানো হচ্ছে। ওখানকার স্লুইসটা বন্ধ করে জলোচ্ছ্বাস প্রতিরোধ করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।