না। ২৮ জুন থেকে শাট ডাউন শুরু হচ্ছে না। করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সুপারিশ অনুসারে ২৮ জুন থেকে সারা দেশে শাট ডাউনের ঘোষনা দিয়েছিল সরকার। কিন্তু ২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেট পাশ ও জুন ক্লোজিংয়ের কারনে এ শাট ডাউন শুরু হবে ১ জুলাই থেকে। চলবে এক সপ্তাহ। যদিও পরামর্শক কমিটি ১৪ দিনের জন্য সুপারিশ করেছিল। অবশ্য পরবর্তীতে শাট ডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। সারা দেশের দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ থাকায় আসন্ন ঈদুল আজাহার পালন ও শাট ডাউনের সুযোগে আপনজনদের সাথে থাকার মানসে স্বাস্থঝুকি নিয়েই মানুষ ঢাকা ছাড়ছে। যে যে ভাবে পারছে গাদাগাদি করে নাড়ির টানে দেশে ফিরছে। এ থেকে যে সংক্রমন বাড়তে পারে তা গত ঈদুল ফিতরের সময়ই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সাবধান করেছিলেন এবং তা বাস্তবে দেখাও গেছে। হঠাৎ করেই সংক্রমনের হার বেড়ে যাওয়ায় এবং মৃত্যুর মিছিলে অসংখ্য মানুষের নাম যুক্ত হওয়ায় এ শার্ট ডাউন দেয়া হয়েছে। কিন্তু মানুষের মাঝে তা পালন করার কোনো লক্ষন দেখা যাচ্ছে না।
দেশে করোনা সংক্রমনের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রনে সরকার গত ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য গনপরিবহন চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। পরে তা আরো দু’দিন বাড়ানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে না আসায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরো কঠোর বিধি-নিষেধ দিয়ে ‘সর্বাত্মক লক ডাউন’ শুরু হয়। পরে তা আরো আট দফা বাড়িয়ে আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত করাহয়। এর মধ্যে আবার স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ বিধিনিষেধ আরোপ করে। সর্বশেষ ১৯ জুন মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ নতুন করে ঢাকার আশেপাশের চার জেলা সহ মোট সাত জেলায় সার্বিক কার্যাবলি ও জনগনের চলাচলে বন্ধ ঘোষনা করে ৩০ জুন পর্যন্ত। জেলাগুলো হলো- মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ি ও গোপালগঞ্জ। এর মধ্যে ২৪ জুন পরামর্শক কমিটি সুপারিশ করলে সরকার আবার শাট ডাউন ঘোষনা করে।
সর্বশেষ সাপ্তাহিক রোগতাত্ত্বিক বিশ্লেষনে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, একসপ্তাহে (১৪-২০) জুন বৈশি^কভাবে সংক্রমন কমেছে ৬ শতাংশ। একই সময় মৃত্যু কমেছে ১২ শতাংশ। এই সময়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতে সংক্রমন কমেছে ৩০ শতাংশ এবং মৃত্যু কমেছে ৩১ শতাংশ। এর বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে। আগের তুলনায় বাংলাদেশে নতুন শনাক্ত রোগী বেড়েছে ৫৫ শতাংশ এবং মৃত্যু বেড়েছে ৫৪ শতাংশ। তারপরও জনগন বেপরোয়া হয়ে স্বাস্থ্য ঝুকি নিয়ে ঢাকা ছাড়ছে। করোনা সংক্রমনের কথা ভুলে স্বাস্থবিধি না মেনে নিরাপদ দূরত্ব বজায় না রেখে ছুটছেন আপন জনের কাছে। ভাবছেন না এতে তার আপনজনও সংক্রমিত হতে পারে। আগে করোনার প্রাদুর্ভাব শহরে পরিপাক্ষিত হলেও এখন গ্রাম পর্যায়েও তা ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে হাসপাতালগুলো রোগী পরিচর্যার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। সব কিছু চলে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রনের বাইরে। তাই আজ সময় এসেছে সবার সচেতন হবার। তাছাড়া ভারতীয় ডেলটা ভেরিয়েন্ট খুব দ্রুত সংক্রমনশীল হওয়ায় লক ডাউনকে শাট ডাউন পর্যায়ে নিয়ে যেতে চান স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এখন প্রয়োজন জনগনের সর্বাত্মক সহযোগীতা।
You cannot copy content of this page