শ্রীঃ মিশুক চন্দ্র ভুঁইয়া, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি।
৮ ডিসেম্বর পটুয়াখালী হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে সকাল ৯ টায় আনন্দ শোভাযাত্রা ও পতাকা মিছিল সহ এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। র্যালিটি শহীদ আলাউদ্দিন শিশুপার্কে থেকে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন শেষে শেখ রাসেল শিশুপার্কে গিয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পটুয়াখালী জেলা প্রেসক্লাবের আয়োজনে আয়োজিত আলোচনা সভায় পটুয়াখালী জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সাধারন সম্পাদক আব্দুস ছালাম আরিফের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাড.মোঃ হাফিজুর রহমান, বিশেষ অথিতি অতিরিক্ত জেলা প্রশসক শিক্ষা শেখ আবদুল্লা ছাদীদ, জেলা পুলিশের প্রতিনিধি মোঃ শওকত আনোয়ার, জেলাপরিষদ সদস্য মোঃ জামাল হোসেন সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সভায় ৮ ডিসেম্বর পটুয়াখালী হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে দিবসের প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বিশেষ অথিতি জেলা আওয়ামিলীগের সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান খান বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে শহরকে হানাদার মুক্ত করে পটুয়াখালীর শহীদ আলাউদ্দিন শিশুপার্কে লাল সবুজের পতাকা ওড়ান পটুয়াখালীর সূর্য সন্তানেরা। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা সহ মাতৃভূমির সম্মান রক্ষার্থে জীবন বিলিয়ে দিয়েছিল অনেকে। আর স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫১ বছর অতিবাহিত হলেও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থান ও গণকবর গুলো সংস্কার করার দাবী মুক্তিযোদ্ধাদের।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাক সেনারা দেশব্যাপী পরিকল্পিত বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। গভীর রাতেই এ বার্তা এসে পৌঁছে পটুয়াখালী জেলা সংগ্রাম কমিটির হাতে। পরের দিন ২৬ মার্চ পটুয়াখালী মহিলা কলেজে কন্ট্রোল রুম খোলেন মুক্তিযোদ্ধারা।এরই পাশে জুবিলী স্কুলে শুরু হয় মুক্তি সেনাদের সশস্ত্র প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণে যোগ দেয় স্থানীয় অকুতোভয় তরুণ যুবকরা। বর্তমান ডিসি বাংলোর পূর্ব পাশে পাক বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে ৭ আনসার ও মাতবর বাড়ির সামনে ১৭ মুক্তিসেনা শহীদ হন। ১৯৭১ সালের ২৬ এপ্রিল সোমবার। আকাশের উত্তরদিক থেকে গগণবিদারী আওয়াজ তুলে ধেয়ে আসে বেশ কয়েকটি পাকিন্তানি জঙ্গী বিমান। বৃষ্টির মতো গোলাবর্ষণ, শেলিং ও মেশিনগানের গুলি ছুঁড়ে ধবংস করে দেয় পটুয়াখালী শহর। পটুয়াখালীর পুরনো বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় ঘর-বাড়ি। চাঁদমারী, কালিকাপুর, মাতবর বাড়ি, ও ডিসি বাংলোর দক্ষিন পাশে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে হাজারও মানুষ।
৭ ডিসেম্বর রাতে পটুয়াখালী ও বরগুনা অঞ্চলে যুদ্ধকালীন সময়ে পাক হানাদার বাহিনীর দায়িত্বে থাকা মেজর নাদের পারভেজ ও তার সৈন্যরা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে পটুয়াখালী শহর ছেড়ে পালিয়ে যায়।
৮ ডিসেম্বর সকাল থেকেই মুক্তিযোদ্ধারা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে জেলা শহরে মিছিল নিয়ে আসতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথমে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ও পরে বর্তমান আলাউদ্দিন শিশুপার্ক মাঠে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন মুক্তিযোদ্ধারা।
You cannot copy content of this page