মাহতাব উদ্দিন আল মাহমুদ ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে স্ত্রী স্বীকৃতির দাবিতে টানা ৪৫ দিন যাবত স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করছেন সালমা আক্তার সুমাইয়া (২৫) নামের এক নারী। ওই নারীকে স্বীকৃতি না দিয়ে বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছেন স্বামী মামুনুর রশিদসহ তার পরিবারের লোকজন। ঘটনাটি ঘটেছে পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের মোল্লাপাড়া এলাকায়।
স্বামী মামুনুর রশিদ ওই এলাকার বাবলুর ছেলে। অপরদিকে স্ত্রী স্বীকৃতির দাবিতে শশুর বাড়িতে অবস্থিত সুমাইয়া ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ মান্দ্রাজ গ্রামের আমজাদ হোসেনের মেয়ে। মানুনুরের আগেরও একজন স্ত্রী রয়েছে। স্ত্রীর দাবীতে মামুনুরের বাড়িতে আসা স্বামী পরিত্যক্তা সুমাইয়া মামুনুরের ২য় স্ত্রী।
দীর্ঘ সময় স্বামীর বাড়িতে অবস্থানরত এই নারী খাবারের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে। মানুষের বাড়িতে চেয়ে দু‘মুঠো খেয়ে দিন যাচ্ছে তার। সুমাইয়ার অভিযোগ বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য তাকে একাধিকবার মারপিট করেছে স্বামী মামুনুর রশিদের নিকট আত্মীয়রা। এ নিয়ে ঘোড়াঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এই নারী।
রবিবার দুপুরে শশুর বাড়িতে গিয়ে তার সাথে কথা বললে সুমাইয়া দাবী করেন, তার বোনের বিয়ে হয়েছে বগুড়া জেলায়। গত বছর ঢাকা থেকে বাসে চড়ে বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন তিনি ও তার মা। তখন ওই বাসের হেলপার ছিলেন মামুনুর। মামুনুর টিকেট কাউন্টার থেকে সুমাইয়ার নাম্বার সংগ্রহ করে তাকে কল দেন। টানা একমাস কথা বলার এক পর্যায়ে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তারা দুজনে। এরপর গত বছরের কুরবানির ঈদের পর মামুনুর ভোলায় গিয়ে সুমাইয়াকে ঢাকায় নিয়ে আসেন ও সেখানে ৩ লাখ টাকা কাবিনমূলে তাকে বিয়ে করেন। এরপর কিছু সময় বাড়ি ভাড়া নিয়ে তারা ঢাকায় সংসারও করেছেন। সুমাইয়ার মা একবার মামুনুরের বাড়িতেও এসেছিলেন তিনি।
গত মাসে মামুনুর সুমাইয়াকে তার নিজ বাড়ি ঘোড়াঘাটে আসতে বলেন। স্বামীর কথা অনুয়ারী গত ১০ জানুয়ারী তিনি মামুনুরের বাড়িতে আসেন। শশুর বাড়ির লোকজন তাকে পুত্রবধূ হিসেবে অস্বীকার করেন। স্ত্রী স্বীকৃতির দাবিতে সুমাইয়া শশুর বাড়িতে অবস্থান নিলে মামুনুর সহ তার পরিবারের লোকজন বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়। এ বিষয়ে জানতে মানুনুর রশিদের মুঠো ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
ঘোড়াঘাট থানার ্অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘ভূক্তভোগী নারী সুমাইয়া একদিন থানায় ফোন করেছিলেন, যে তাকে তার শশুর বাড়ি থেকে জোরপূর্বক বের করে দিচ্ছে। তাৎক্ষনিক আমরা গিয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত থাকতে বলেছি। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলের সাথে কথা বলেছি। তাকে উভয়পক্ষকে নিয়ে সমস্যা স্থায়ী সমাধানের জন্য বলা হয়েছে। এরপরেও যদি ভূক্তভোগী নারী থানায় অভিযোগ দাখিল করেন। তবে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’