• মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৪১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
সিজারের সময় নবজাতকের পা ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। দশমিনায় পানিতে ডুবে প্রাণ হারাল প্রথম শ্রেণির ছাত্রী তাসমিয়া/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। রামগতিতে পরকীয়ার অভিযোগে গণধোলাইয়ের শিকার বিএনপি নেতা/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। দূরশিক্ষণে বাউবির অগ্রযাত্রা: প্রতিবন্ধকতা ও আমার অভিজ্ঞতা: ড. মহাঃ শফিকুল আলম/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ থাকবে এমন আর্থিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা,,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা শারদীয় দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নেই উদযাপিত হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা,,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা কুয়ালালামপুরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটদান বিষয়ক মতবিনিময় সভা ও জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ,,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সাথে ঐকমত্য কমিশনের সভা অনুষ্ঠিত,,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা ফেব্রুয়ারিতেই মহোৎসবের জাতীয় নির্বাচন : প্রধান উপদেষ্টা,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা নির্ধারিত ছয় মাসের আগেই নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত হবে: প্রধান উপদেষ্টাকে কমিশন চেয়ারম্যান,,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা

লালমোহনে পর্যটন সম্ভাবনা নুরুল আমিন।

রিপোর্টার: / ৫৪৫ পঠিত
আপডেট: শুক্রবার, ২৪ জুলাই, ২০২০

লালমোহন প্রতিনিধিঃ প্রকৃতির এক অপূর্ব সৌন্দর্যের লীলাভূমি লালমোহনে রয়েছে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা। দ্বীপ জেলা ভোলার মধ্যমনি লালমোহন উপজেলার পশ্চিমে তেঁতুলিয়া আর পূর্বে মেঘনা নদীর উতাল-পাতাল ঢেউ, দুরন্ত বাতাসে প্রাণ জুড়ায়। এ দুই নদীর টাটকা ইলিশের স্বাদ সত্যি অমৃত। প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য রয়েছে অপরূপ নৈসর্গ। এখানকার প্রাকৃতিক সুশোভায় শোভিত মনোরম স্থানগুলোকে ঘিরে পর্যটন শিল্পের যে অপার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, তা খুবই আনন্দদায়ক ও লাভজনক।
লালমোহন উপজেলার ধলীগৌর নগর ইউনিয়নের মঙ্গল শিকদার এলাকায় মেঘনা নদীর তীর জুড়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত স্থান প্রকৃতিপ্রেমী মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দু হয়ে ওঠেছে। অত্র এলাকায় মেঘনা নদীর তীর ঘিরে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানো গেলে স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে বলে আশা করা যায়। এখানে যেমনি রয়েছে নৈসর্গিক রূপ, তেমনি রয়েছে নদী, পুকুর ও বিলে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির সুস্বাদু মাছের ছড়াছড়ি। এছাড়া এখানে দেশি হাঁস-মুরগি পাওয়া যায়। গরু-মহিষের দুধ ও খেজুর রস পাওয়া যায়।
নদীর তীরে রয়েছে নানারকম শাকসবজি ও ফসলের ক্ষেত। বেড়িতে এবং মাঝ দরিয়ায় অপূর্ব সবুজের বেষ্টনি দর্শনার্থীর মন কেড়ে নেয়। নদীর বুকে অথৈ জলের মাঝে ছোট ছোট বন বাতাসের দোলায় কেঁপে ওঠে। এসব বনে পাখির মেলা। বক, চিল, মাছরাঙা, পানকৌড়ি, বালিহাঁস, ময়না, টিয়া, ঘুঘুসহ আরও কত রকমের পাখি রয়েছে! এখানে শীতকালে অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে ওঠে। জেলেদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পাখিরাও মাছ শিকার করে। মাঝিমাল্লার গান আর মুক্ত পাখির কিচিরমিচির নদীর তরঙ্গে মিশে যেন অমৃত সুধায় সারাবেলা কথা কয়। দলবেঁধে পাখিদের উড়াউড়ি মন কেড়ে নেয়।
এখানে কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী ও জেলেসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ বসবাস করে। এখান দিয়ে নদী পথে যাতায়াতের সুব্যবস্থা আছে। মনপুরা, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, লেতরা, দক্ষিণ আইচা ও চরফ্যাশন, নোয়াখালী, এমনকি অনেক লোকজন মঙ্গল শিকদার ঘাট দিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে লঞ্চে যাতায়াত করে। এখানকার জেলে পল্লী দিয়ে হাঁটার সময় ভাজা ইলিশের সে কী ঘ্রাণ! অনেকেই এখানে জেলেদের থেকে সরাসরি মাছ কিনতে আসেন। লালমোহনের মেঘনা ও তেঁতুলিয়ার রূপালী ইলিশ দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। তাছাড়া তেঁতুলিয়া নদী দিয়ে লঞ্চে কালাইয়া, পটুয়াখালী, ঘোষের হাট, দশমিনা, বাউফল, রাঙাবালী, বেতাগী, উজিরপুর,  মঠবাড়িয়া, গৌরনদী, বরিশাল ও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করা যায়।
অনেক দূরদূরান্ত থেকে মানুষ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন। নৌকায় চড়ে নদীর বুকে ঘুরে বেড়ানো কিংবা পায়ে হেঁটে মনোরম দৃশ্য উপভোগ করার আনন্দই আলাদা। এখানে মুক্ত বাতাসে ঘোরাফেরা করে মানুষ মুগ্ধ হয়। সন্ধ্যার আগ মূহুর্তে আকাশের রংধনু নদীর বুক জুড়ে মিতালী গড়ে তোলে। সকালের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখে প্রাণ জুড়ায়। মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর বুকে জেগে উঠা ছোট ছোট চর মানুষের বুকে জাগায় নতুন আশা, নতুন স্বপ্ন। দ্বীপের মত এসব চরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মানুষকে বিমোহিত করে, মনে আলোড়ন জাগায়। প্রাণের নির্জনতায় মানুষ ছুটে যায় এবং মন ভরে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যে উপভোগ করে।
লালমোহনে মনোমুগ্ধকর ডিজিটাল পার্কসহ দেখার মতো অনেক কিছু আছে। মেঘনার বুকে মনপুরার বনে হরিণের মুক্ত বিচরণ নজর কেড়ে নেয়। সৌন্দর্য পিয়াসি মানুষ অবসরে মনের তৃষ্ণা মিটাতে আসেন।
লালমোহনের পূর্বে মেঘনা নদীর পাড়, পশ্চিমে তেঁতুলিয়া নদীর পাড় এবং কালমা ইউনিয়নের ফরাজি বাজারের পশ্চিম পাশে দেবনাথের বিলের অনুপম নৈসর্গিক সৌন্দর্য ঘিরে পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা রয়েছে। এসব এলাকার শস্য শ্যামল নয়নাভিরাম দৃশ্য দর্শনার্থীদের মন কেড়ে নেয়। পর্যটন শিল্পের হাতছানি পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। অনেক মানুষ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন। এখানে পর্যটন কেন্দ্র করা গেলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আরও বিকশিত হবে। সেই সঙ্গে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হবে। ইতিহাস ঐতিহ্যে ভরা লালমোহনের সকল শ্রেণি পেশার মানুষ এখানে একটি পূর্ণাঙ্গ পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রত্যাশা করেন।

লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট, কথাসাহিত্যিক, কবি ও প্রাবন্ধিক, লালমোহন, ভোলা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ