
গুলিবিদ্ধ হওয়ার ছয় দিন পর মারা গেলেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি আর নেই। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন ওসমান হাদি। মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়, সেখানে অস্ত্রোপচার করা হয়। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় এবং ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়।
ওসমান হাদির মৃত্যুতে ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে শোকবার্তায় বলা হয়, “ভারতীয় আধিপত্যবাদের মোকাবিলায় মহান বিপ্লবী ওসমান হাদিকে আল্লাহ শহীদ হিসেবে কবুল করেছেন।” সিঙ্গাপুরে তার চিকিৎসা তদারকিতে ছিলেন সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা ও এনসিপি স্বাস্থ্য সেলের প্রধান।
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সন্তান শরিফ ওসমান হাদি শুরুতে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে তিনি শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত হন। জুলাই অভ্যুত্থানের পর ইনকিলাব মঞ্চের সঙ্গে যুক্ত হয়ে শহীদ ও আহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন এবং ধারাবাহিক গণসমাবেশের মাধ্যমে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেন।
গত নভেম্বর মাসে তিনি প্রকাশ্যে জানান, দেশি-বিদেশি অন্তত ৩০টি নম্বর থেকে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। জীবননাশের আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও তিনি ‘ইনসাফের লড়াই’ থেকে পিছিয়ে যাননি। নির্বাচনী প্রচারণাকালে তার ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনাকে বিশ্লেষকরা নির্বাচনের প্রাক্কালে রাজনৈতিক সহিংসতার সতর্ক সংকেত হিসেবে দেখছেন।
ইনকিলাব মঞ্চের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক সাঈদ হাসান বলেন, “দেশের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ওসমান হাদির অবদান ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”