কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি।। দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে এক যুগ ধরে
কর্মহীন তৃষ্ণা রানীর স্বামী খোকন গাইন। সে পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌর শহরের
ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন ছোট্ট একটি ঘরে বসবাস করে। কয়েকটি শিশুকে প্রাইভেট
পড়ানোর আয়ে চলে তার সংসার। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় রিমাল সেই মাথা গোঁজার
ঠাঁইটুকু তছনছ করে দিয়েছে। ঘরের মালামাল ভেসে গেছে পানিতে। এখন ঘর মেরামত
করার মত তার হাতে টাকা নেই, তাই মাথার উপর আচ্ছাদন দেয়ার চেষ্টা করছেন
নিজেই। তৃষ্ণা রানী জানান, সিডরের পর থেকেই চার দফা তার ঘর ভেঙেছে ঝড়ে।
কিন্তু এবারে তার শেষ সম্বলটুকুও ভেসে গেছে ঘূর্নিঝড় রিমাল’র তান্ডবে।
একই এলাকার বিধবা দিপালী রানীর ঘর চাপা পড়েছে ভেঙে পড়া গাছের নিচে। বৃদ্ধ
শাশুড়ি ও ছেলে মেয়ে নিয়ে এখনও পার্শ¦বর্তী কলেজের একটি রুমে রাত
কাটাচ্ছেন তারা। দিপালী রানী জানান, গত তিন বছর আগে তার স্বামী মারা
গেছে। ছেলে চয়ন ডাকুয়া লোখাপড়ার পাশাপাশি ফুটপথে বসে চা বিক্রি করে সংসার
চালায়। ঘূর্নিঝড় রিমাল’র তান্ডবে গাছ পড়ে ঘরের সব ভেঙে তছনছ হয়ে যায়। সে
এখন কিভাবে এই ঘরে থাকবেন, তা তিনি বুঝে উঠতে পারছেননা। তাদের মতই
ক্ষতিগ্রস্থ নিম্নআয়ের পরিবারগুলোর মাঝে চলছে নিরব এমন কান্না। এ উপজেলার
১২ টি ইউনিয়ন ও দু’টি পৌরসভার সবখানেই যেন ঘূর্ণিঝড় রিমাল রেখে গেছে
ধ্বংসের ছাপ।
এদিকে প্রলয়ংকারী ঘূর্নিঝড় রিমাল’র তান্ডবে উপজেলার ১৬৭১টি ঘর বাড়ী
সম্পূর্ন এবং ২৬ হাজার ৯টি ঘর বাড়ী আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। উপজেলায়
দুর্গত মানুষের সংখ্যা দাড়িয়েছে প্রায় ৭৫ হাজার বলে জানিয়েছে উপজেলা
প্রশাসন সূত্র। দুর্গত এসব মানুষের কাছে ত্রান সুবিধা পৌঁছে দিচ্ছে
স্থানীয় প্রশাসন সহ জন প্রতিনিধিরা।
উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো.হুমায়ুন কবির জানান,
ক্ষতিগ্রস্থদের গৃহনির্মাণ বাবদ টিন এবং অন্যান্য উপকরণ ত্রাণ
মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য বরাদ্দ আছে, যা দ্রæতই তাদের
দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হবে।