• সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:০০ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
রামগতিতে পরকীয়ার অভিযোগে গণধোলাইয়ের শিকার বিএনপি নেতা/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। দূরশিক্ষণে বাউবির অগ্রযাত্রা: প্রতিবন্ধকতা ও আমার অভিজ্ঞতা: ড. মহাঃ শফিকুল আলম/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ থাকবে এমন আর্থিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা,,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা শারদীয় দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নেই উদযাপিত হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা,,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা কুয়ালালামপুরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটদান বিষয়ক মতবিনিময় সভা ও জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ,,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সাথে ঐকমত্য কমিশনের সভা অনুষ্ঠিত,,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা ফেব্রুয়ারিতেই মহোৎসবের জাতীয় নির্বাচন : প্রধান উপদেষ্টা,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা নির্ধারিত ছয় মাসের আগেই নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত হবে: প্রধান উপদেষ্টাকে কমিশন চেয়ারম্যান,,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় জাতীয় ঐক্যের আহ্বান তারেক রহমানের,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা প্রথমবার ফরাসি সিনেমায় জোডি ফস্টার,,,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা

তীব্র শিক্ষক সঙ্কটে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোয় কমছে শিক্ষার মান,,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা

রিপোর্টার: / ৬ পঠিত
আপডেট: সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

তীব্র শিক্ষক সঙ্কটে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোয় কমছে শিক্ষার মান
তীব্র শিক্ষক সঙ্কটে দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার মান কমে যাচ্ছে। শিক্ষক সংকট দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মূল সমস্যা। মানসম্মত শিক্ষক সংকটের জেরে একদিকে যেমন নতুন প্রতিষ্ঠানগুলো কাঙ্ক্ষিত অবস্থায় পৌঁছতে পারছে না, আবার পুরনো প্রতিষ্ঠানগুলোও মান বজায় রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬২৮টি। তার মধ্যে বিগত সরকারের আমলে ৩১৭টি প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা হয়। এক যুগে ৫০ শতাংশেরও বেশি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সরকারীকরণ করা হয়েছে। কিন্তু গত ১৫ বছরে অবকাঠামো উন্নয়ন ও জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয়ের সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়লেও মানসম্পন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার ফলেও ফুটে ওঠে ওই চিত্র। সামপ্রতিক বছরগুলোয় দেশের প্রতিটি জেলাতেই পাসের হার ও জিপিএ ৫-এর সংখ্যায় পুরনো সরকারি বিদ্যালয়গুলোই এগিয়ে থাকছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশের মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থা মূলত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক। বিগত সরকার ২০১৩ সালে যেসব উপজেলায় সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় বা কলেজ নেই, সেখানে একটি করে মাধ্যমিক বিদ্যালয় বা কলেজ জাতীয়করণের প্রক্রিয়া শুরু করে। লক্ষ্য ছিলো ওসব এলাকার শিক্ষার মানোন্নয়ন। গত বছর পর্যন্ত ৩৭৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। তবে ওসব বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হলেও নতুন শিক্ষক নিয়োগ বা সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হয়নি। অনেক বিদ্যালয়ে পদ শূন্য থাকলেও নিয়োগসংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে। যে কারণে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। তাতে বিদ্যালয়গুলোর সংকট আরো বেড়েছে।

সূত্র জানায়, ১৯৪৭ সালের পূর্ববর্তী সময়ে দেশে মাত্র ২৮টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছিল। আর ১৯৪৭-১৯৭১ সাল পর্যন্ত ১০৪টি নতুনভাবে সরকারি বিদ্যালয় করা হয়। ১৯৭২-১৯৯০ সাল পর্যন্ত আরো ১৭৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে সরকারীকরণ করা হয়। ১৯৯১-২০০০ সাল পর্যন্ত নতুনভাবে চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি করা হয়। তবে ২০০১-১০ পর্যন্ত নতুন করে কোনো প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা হয়নি। আর ২০১১-২৩ পর্যন্ত ৩১৭টি প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা হয়। বর্তমানে দেশে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬২৮টি। বর্তমানে ফরিদপুর জেলা শহরে মোট ১২টি সরকারি বিদ্যালয় রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন ফরিদপুর জিলা স্কুল। প্রতিষ্ঠানটি এখনো জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত। তাছাড়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরনো ফরিদপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। ওই প্রতিষ্ঠানেরও স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে ভালো ফলের সুনাম রয়েছে। তারপর গত চার দেশকে জেলাটিতে জাতীয়করণ করা হয়েছে আরো ১০টি বেসরকারি বিদ্যালয়কে। তবে এখনো অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষে ফরিদপুর জিলা স্কুল ও ফরিদপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। কারণ নতুন বিদ্যালয়গুলো শিক্ষক সংকটসহ বিভিন্ন কারণে তুলনামূলক পিছিয়ে রয়েছে। তাছাড়া পটুয়াখালী জেলায় মোট ১১টি সরকারি বিদ্যালয় থাকলেও নতুন সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তুলনামূলক পিছিয়ে রয়েছে। অন্যান্য জেলায়ও একই চিত্র দেখা যায়।

সূত্র আরো জানায়, বিগত এক দশকে যেসব প্রতিষ্ঠান সরকারি করা হয়েছে সেগুলোর বড় অংশ ওই এলাকার স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান ছিল। কিন্তু ওসব বিদ্যালয় সরকারি হওয়ার পর আরো ভালো অবস্থানে যাওয়ার কথা থাকলেও সরকারের কার্যকর উদ্যোগের অভাবে কিছু ক্ষেত্রে অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে। বেশির ভাগ বিদ্যালয়ে প্রয়োজনের তুলনায় কম পদ তৈরি করা হয়েছে। নতুন শিক্ষক নিয়োগ তো দেয়াই হয়নি, বরং যে শিক্ষকরা ছিলেন তাদেরও অনেককে আত্তীকরণ করা হয়নি। অনেক শিক্ষকের বেতন কমে গেছে। অনেকের বেতন বন্ধ হয়েছে। তাছাড়া নীতিমালাসংক্রান্ত জটিলতায় এ সময়ের মধ্যে অবসরজনিত কারণে পদ শূন্য হলেও শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। এ বিষয়গুলো আরো খারাপ করেছে বিদ্যালয়গুলোর অবস্থা। মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোয় বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হয়। বর্তমানে দেশে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোয় মোট শিক্ষকের পদ রয়েছে ১০ হাজার ৯০০টি। তার মধ্যে ৫ হাজার ৪৫২টি সহকারী শিক্ষকের পদ। তার বিপরীতে ২ হাজার ৭১০ জন কর্মরত আছেন এবং ২ হাজার ৭৪২টি পদ শূন্য রয়েছে।

এদিকে শিক্ষাবিদরাও শিক্ষক সঙ্কটকে দেশে নতুনভাবে জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয়গুলো ভালো অবস্থানে পৌঁছতে না পারার মূল কারণ বলছেন। তাছাড়া মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা পুরোপুরি বেসরকারি খাতনির্ভর রাখা হয়েছে। তাছাড়া মাধ্যমিক পর্যায়ে বিদ্যালয়গুলোতে ভালো মানের শিক্ষকের অভাব রয়েছে। আর নিয়োগে নানা দুর্নীতি-অনিয়ম শিক্ষক হিসেবে অনেকে ঢুকে পড়েছে। তাছাড়া এখন মেধাবীরা বিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় আসতে চায় না। বরং যারা কোথাও চাকরি পায় না তারাই বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার জন্য আসে। তাছাড়া মাধ্যমিক শিক্ষায় শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে শিক্ষক বদলি, পেনশন সর্বত্র ঘুস বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম রয়েছে। যথাযথ মনিটরিং করা হয় না। পাশাপাশি মাধ্যমিক শিক্ষায় আরেকটা সংকট কোচিং বাণিজ্য। শিক্ষকরা ক্লাসের তুলনায় কোচিংয়ে অধিক আগ্রহী। এ বিষয়গুলোর কারণেই গত কয়েক দশকে অনেক বিদ্যালয় সরকারি করা হলেও প্রতিষ্ঠানগুলোয় গুণগত মান নিশ্চিত করা যায়নি।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আরিফুল ইসলাম জানান, সরকারি বিদ্যালয়গুলোয় এখন অবকাঠামোসহ প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা থাকলেও বড় সমস্যা শিক্ষক সংকট। অধিকাংশ বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয়সংখ্যক শিক্ষক নেই। আমাদের বিদ্যালয়েও প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পদ শূন্য। নতুন বিদ্যালয়গুলোর অবস্থাও এমন। শিক্ষা কার্যক্রমে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ