
মুক্তিযোদ্ধা চাচাকে বাবা দেখিয়ে চাকরি, ইউএনও কামাল হোসেনের ডিএনএ টেস্টের সিদ্ধান্ত
মুক্তিযোদ্ধা চাচাকে নিজের পিতা পরিচয় দিয়ে সরকারি চাকরিতে যোগদানের অভিযোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামাল হোসেনের ডিএনএ পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের মহাপরিচালক (তদন্ত) আখতার হোসেন।
তিনি বলেন, “নাচোলের ইউএনও কামাল হোসেন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরির সুবিধা নিতে নিজের চাচাকে পিতা হিসেবে দেখিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য কমিশন ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পারিবারিক সম্পর্ক নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদে চাকরির অভিযোগ
দুদকের কর্মকর্তারা জানান, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ে সরকারি চাকরি ও অন্যান্য সুবিধা নেওয়ার বেশ কয়েকটি মামলা বর্তমানে তদন্তাধীন। এরই ধারাবাহিকতায় ইউএনও কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে আনা প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগের তদন্ত চলছে।
এর আগে ২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ ব্যবহারের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, কামাল হোসেন ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সময় মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধা পেতে নিজের জন্মদাতা পিতা-মাতা— মো. আবুল কাশেম ও মোছা. হাবীয়া খাতুনের পরিবর্তে চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আহসান হাবীব এবং চাচি মোছা. সানোয়ারা খাতুনকে পিতা-মাতা হিসেবে উল্লেখ করেন।
এই প্রতারণার মাধ্যমে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, সরকারি চাকরি ও অন্যান্য সুবিধা গ্রহণ করেছেন বলে তদন্তে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
শিগগিরই আদালতের অনুমতিতে ডিএনএ পরীক্ষা
দুদকের অনুমোদন অনুযায়ী, আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে ইউএনও কামাল হোসেন, তার জন্মদাতা পিতা-মাতা এবং চাচা-চাচির ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। কমিশন জানিয়েছে, ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতেই পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বর্তমানে কামাল হোসেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি মাগুরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সিনিয়র সহকারী কমিশনার এবং নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ইউএনও হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।