
বিএনপির প্রচারণায় তারেক রহমানের ছবি ব্যবহারে আপত্তি এনসিপির
নিজস্ব প্রতিবেদক
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির প্রার্থীদের প্রচারণায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ছবি ব্যবহারের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আনুষ্ঠানিক আপত্তি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বুধবার (১৯ নভেম্বর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে এনসিপি নেতারা বিষয়টি তুলে ধরেন।
সংলাপে দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মূসা অভিযোগ করেন, নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী প্রার্থীরা কেবল নিজের ছবি, দলীয় প্রতীক এবং দলীয় প্রধানের ছবি ব্যবহার করতে পারেন। তার ভাষায়, “বেগম খালেদা জিয়ার ছবি ব্যবহার করলে নিয়ম লঙ্ঘন হয় না, তবে তারেক রহমান বা জিয়াউর রহমানের ছবি ব্যবহার স্পষ্টতই আচরণবিধিবিরোধী।”
তিনি আরও বলেন, লিফলেট, পোস্টার, বিলবোর্ডসহ বিভিন্ন প্রচারসামগ্রীতে তারেক রহমানের ছবি নিয়মিত ব্যবহার করা হলেও ইসি তাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। “কমিশন যদি দুর্বল অবস্থান নেয়, তাহলে আচরণবিধি বাস্তবায়ন শুধু কাগজেই সীমাবদ্ধ থাকবে,”—মন্তব্য করেন জহিরুল ইসলাম মূসা।
সংলাপে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক ও কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী একাধিক ইস্যুতে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, নির্বাচনের দিন গণভোট আয়োজনের কথা থাকলেও ইসি এখনো প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির ইঙ্গিত দেয়নি। “শিগগিরই প্রক্রিয়া শুরু না হলে গণভোট বাস্তবায়ন অসম্ভব হয়ে পড়তে পারে।”
জোটবদ্ধ নির্বাচনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জোট করলেও প্রত্যেক দলকে নিজস্ব প্রতীকেই ভোটে অংশ নিতে হবে। অন্য দলের প্রতীক ব্যবহার করা জনগণের কাছে বিভ্রান্তিকর এবং রাজনৈতিকভাবে অসঙ্গত। “নিজস্ব প্রতীকেই মাঠে নামাই রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা স্পষ্ট করে,”—বলেন তিনি।
এছাড়া আচরণবিধির অস্পষ্টতা, ব্যয়ের সীমা, মাইকের শব্দমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, অস্ত্রবাজি দমনসহ বিধি বাস্তবায়নের সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে এনসিপি। তাদের দাবি, শাস্তির বিধান থাকলেও তা বাস্তবায়নের যথাযথ প্রক্রিয়া বা প্রশাসনিক নির্দেশনা নেই।
সংলাপে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার নিয়েও উদ্বেগ জানানো হয়। এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা বলেন, মেটা ও টিকটকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে ভুয়া তথ্য ও এআই–উৎপন্ন বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট ঠেকাতে ইসিকে উদ্যোগী হতে হবে।
সংলাপের সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।