
কুয়াকাটায় ১২ বছর আগে বিক্রি হওয়া জমি ফের দখলের চেষ্টায় দুশ্চিন্তায় ক্রেতা শ্যামলী বেগম
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কুয়াকাটার আলিপুর এলাকায় প্রায় ১২ বছর আগে বিক্রি হওয়া জমি নিয়ে নতুন করে তৈরি হয়েছে উত্তেজনা। অভিযোগ উঠেছে—জমির বিক্রেতা মোনোয়ারা বেগম হ্যাপি ও তাঁর ভাই হানিফ মেম্বার দলিল সম্পাদন না করে উল্টো ওই জমি জবরদখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ক্রেতা শ্যামলী বেগম।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১১ জুলাই লতাচাপলী মৌজার (জেএল নং–৩৪) এসএ ৯৫৯ খতিয়ানভুক্ত ৯২৫সহ কয়েকটি দাগের মোট ৫ শতাংশ জমি ৫ লাখ টাকায় বিক্রি করেন মোনোয়ারা বেগম হ্যাপি। ক্রেতা শ্যামলী বেগম নগদ ৪ লাখ টাকা বায়না প্রদান করে ৩০০ টাকার নন–জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে হাতবায়না চুক্তিপত্র সম্পাদন করেন। জমির দখলও তখনই তাঁকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
কুয়াকাটাসহ আশপাশের পাঁচটি মৌজার জমি বিক্রিতে বিভাগীয় কমিশনারের পারমিশন প্রয়োজন হওয়ায় দলিল সম্পাদন দীর্ঘদিন ঝুলে থাকে। এর মধ্যেই পর্যটননগরী কুয়াকাটায় উন্নয়নকাজের কারণে জমির দাম বেড়ে গেলে বিক্রেতার মনোভাব পরিবর্তন হয় বলে দাবি শ্যামলীর।
শ্যামলী বেগম জানান,
“জমি কিনে দীর্ঘদিন ভোগদখলে থাকলেও সম্প্রতি ঘরের ভিটা উঁচু করতে গেলে হ্যাপি ও তার ভাই লাঠিয়াল নিয়ে এসে বাধা দেয়। তারা আমার ঘরের আসবাবপত্র ভেঙে ফেলে, অশালীন গালিগালাজ করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়।”
তিনি বলেন, এসব নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে স্থানীয়দের সহায়তা চান এবং লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগও দেন। তবে তিনবার নোটিশ দেওয়ার পরও বিবাদীপক্ষ গ্রাম্য আদালতে হাজির হয়নি।
লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান,
“শ্যামলীর কাগজপত্র যাচাই করে দেখা যায়—তিনি ২০১৩ সালে জমির হাতবায়না নিয়েছেন। পারমিশন পেলে দলিল দেওয়ার কথা থাকলেও তা কেন হয়নি, তা রহস্যজনক।”
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে বিক্রেতা মোনোয়ারা বেগম হ্যাপি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন,
“শ্যামলী বেগম আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। এখন তিনি দাবি করছেন যে তিনি নাকি জমি কিনেছেন।”
এ বিষয়ে মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মাহমুদ হাসান বলেন,
“এ ঘটনাটি এসপি অফিসের মাধ্যমে হাতে এসেছে। উভয়পক্ষকে কাগজপত্রসহ হাজির হতে বলা হয়েছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জমিতে জবরদখলের আশঙ্কা, হুমকি-ধমকি এবং দীর্ঘদিন দলিল না পাওয়াসহ বিভিন্ন হয়রানিতে শ্যামলী বেগম বর্তমানে চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন। তিনি দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।