
মোঃ আসাদুজ্জামান ভুট্টু,বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি।।
নওগাঁর বদলগাছীতে চার লক্ষাধিক টাকার গাছ মাত্র এক লাখ নব্বই হাজার টাকায় বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বদলগাছী লাবণ্য প্রভা পাইলট ও কমিউনিটি বালিকা বিদ্যালয়ে।
তথ্য সংগ্রহকালে জানা যায়, গত শনিবার (২২ নভেম্বর) বদলগাছী লাবণ্যপ্রভা পাইলট ও কমিউনিটি বালিকা বিদ্যালয়ের পাঁচটি মেহগনি, দুইটি রেইনট্রি ও একটি পিতৃরাজ গাছের নিলাম হয়। যার সরকারি মূল্য ছিল এক লক্ষ একাশি হাজার তিনশত পঁয়ষট্টি টাকা।
নিলামে অংশ গ্রহণকারী ছিল একশত সাতাত্তর জন। সকলের প্রত্যক্ষ উপস্থিতিতে সর্বোচ্চ নিলাম হয় এক লক্ষ নব্বই হাজার টাকা। এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. পলাশ উদ্দীন ও প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলম।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) পলাশ উদ্দিন প্রত্যক্ষ নিলামে এক লক্ষ নব্বই হাজার টাকার গাছগুলো বিক্রি করে চলে যাওয়ার সাথে সাথে একই স্থানে ঐ গাছগুলো তিন লক্ষ সাঁইত্রিশ হাজার টাকায় বিক্রয় হয়। স্কুল প্রাঙ্গনে বসে একই গাছের দ্বিতীয় বার নিলাম হলেও প্রধান শিক্ষক নির্বিকার থাকেন। ফলে তিন লক্ষ সাঁইত্রিশ হাজার টাকায় গাছ বিক্রি হলেও স্কুল পায় মাত্র এক লক্ষ নব্বই হাজার টাকা। অতিরিক্ত এক লক্ষ সাতচল্লিশ হাজার টাকা নিলামে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে বণ্টন করে দেওয়া হয় এবং কিছু টাকা স্কুল কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়। দ্বিতীয়বার নিলামে গাছগুলো ক্রয় করেন সদর ইউপি সদস্য আজাদ হোসেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় গাছ ব্যবসায়ীরা জানান, প্রথম নিলামে আমরা অংশগ্রহণ করতে পারিনি। আমাদের নিরাপত্তার অভাব ছিল। স্কুল চত্ত্বরে দ্বিতীয়বার নিলাম হলে বদলগাছী সদর ইউপি সদস্য আজাদ হোসেন গাছগুলো কিনে নেন।
সরকারি নিলামে গাছ ক্রেতা জুয়েল হোসেন ভুট্টু বলেন, আমি এক লক্ষ নব্বই হাজার টাকায় গাছগুলো কিনেছি। পরবর্তীতে সদর ইউপি সদস্য আজাদ হোসেনের কাছে বিক্রয় করেছি।
বিষয়টি জানতে সদর ইউপি সদস্য আজাদ হোসেন এর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এতে মন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে বদলগাছী লাবন্যপ্রভা পাইলট ও কমিউনিটি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলমকে তিন লক্ষ সাঁইত্রিশ হাজার টাকার গাছ বিক্রি হলেও স্কুল মাত্র এক লক্ষ নব্বই হাজার টাকা পেল মর্মে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন- আমি নিরূপায় ছিলাম। তবে আমি ইউএনও মহোদয়ের সাথে কথা বলবো।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. পলাশ উদ্দীন বলেন, আমি সরকারী নিয়ম অনুযায়ী নিলাম কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। আমি চলে আসার পর কি হয়েছে বলতে পারবো না। বিষয়টি ইউএনও মহোদয়কে জানাবো।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তায় ইসরাত জাহান ছনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে নিলামে গাছ বিক্রয় করা হয়েছে। দ্বিতীয় বার নিলামের বিষয়ে আমি জানি না। প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।