
মোঃ জালাল হোসেন।।
নওগাঁ–৪ (মান্দা) আসনের চার দশকের রাজনৈতিক ইতিহাসে যে নামটি ধারাবাহিকভাবে আলোচনায় থাকে, তিনি ডাঃ ইকরামুল বারী টিপু। ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে আজকের দায়িত্বশীল সাংগঠনিক ভূমিকা সব ক্ষেত্রেই তাঁর রাজনৈতিক সক্রিয়তা ও নেতৃত্ব মান্দার রাজনীতিতে বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৯৩ সালে তাঁর নেতৃত্বে মান্দা উপজেলা ছাত্রদলের প্রথম আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়। মোস্তাফিজুর রহমান ফিরোজকে সভাপতি এবং নূরবক্স মণ্ডলকে সাধারণ সম্পাদক করে তৎকালীন কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা হারুনুর রশিদ হারুন ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোচিত নেত্রী সৈয়দা আশিফা আশরাফী পাপিয়ার উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সেই সম্মেলনই মান্দায় ছাত্রদলের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে।
পরে যুবদলের সাংগঠনিক কাঠামো গঠনের ক্ষেত্রেও তাঁর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। মাহবুব আলম চৌধুরী সভাপতি ও মাহফুজুর রহমান সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নেন রাজশাহী সিটি মেয়র মিজানুর রহমান মিনু এবং জেলা যুবদলের সভাপতি নাজমুল হক সনির উপস্থিতিতে যার উদ্যোক্তা ছিলেন ডাঃ টিপু।
নওগাঁ সদরের সাবেক এমপি আলহাজ্ব সামস উদ্দিন আহম্মেদ ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হকসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের সহযোগিতায় তিনি মান্দায় বিএনপির সংগঠনকে সুদৃঢ় করেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী মরহুম সামসুল আলম প্রাং-এর দেশে প্রত্যাবর্তনে তাঁর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১৯৯৭ সালে ১৭তম বিসিএস উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি চাকরিতে যোগ দিলেও মানুষের পাশে থাকার অঙ্গীকার থেকে চাকরি ত্যাগ করেন তিনি। পরবর্তীতে ষড়যন্ত্রমূলক হত্যা মামলায় জড়িয়ে পড়লেও ২০১০ সালে আদালত তাঁকে সম্পূর্ণ বেকসুর খালাস দেন।
২০০৯ সালে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে তিনি মান্দা উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং দায়িত্ব পালনকালে রাজশাহী বিভাগের শ্রেষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যানের সম্মাননা অর্জন করেন। করোনাকালেও তিনি ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে ছিলেন এবং মানবিক অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ চিকিৎসক হিসেবে স্বীকৃতি পান।
২০১৮ সালে দল তাঁকে ধানের শীষের প্রার্থী ঘোষণা করলেও তিনি দলীয় স্বার্থে মনোনয়ন থেকে সরে দাঁড়ান-যা স্থানীয় রাজনীতিতে বিরল ত্যাগের উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়। আন্দোলন–সংগ্রামের কঠিন সময়েও নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন তিনি।
চিকিৎসা সেবা ও রাজনৈতিক দায়িত্ব-দুটি ক্ষেত্রেই তিনি সমানভাবে সক্রিয়। নিয়মিত উঠান বৈঠকে অংশ নিয়ে দলের রাজনৈতিক নির্দেশনা জনগণের কাছে পৌঁছে দেন।
বর্তমানে তিনি মান্দা উপজেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, ড্যাব নওগাঁ জেলার সাধারণ সম্পাদক, জাতীয়তাবাদী সমবায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং নওগাঁ–৪ (মান্দা) আসনের ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী।
মান্দার রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন একটাই প্রশ্ন-
কে হতে চলেছেন মান্দার ভবিষ্যৎ অভিভাবক?
অভিজ্ঞতা, সততা, ত্যাগ এবং মানুষের প্রতি নিবেদন-এই চার স্তম্ভে দাঁড়িয়ে বহু মানুষের কাছে সেই উত্তরের প্রতীক হয়ে উঠেছেন ডাঃ ইকরামুল বারী টিপু।