মনির হাওলাদার কুয়াকাটা
উপকূলের জেলে পরিবার অভাব-অনটন আর চরম হতাশার মধ্যে দিন পার করছে। হাহাকার চলছে কলাপাড়ার জেলে পল্লীগুলোতে। বঙ্গোপসাগর ও নদীর মাছকে ঘিরেই এখানকার জেলেদের জীবন ও জীবিকার চাকা ঘুরে।
এদিকে সমুদ্রে মাছ শিকার বন্ধ, অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যের লাগামহীন বৃদ্ধি। যার ফলে জেলেদের চরম দুর্দিন যাচ্ছে।
সংসারের ব্যয়ভার বহন ও মহাজনের কাছ থেকে নেয়া দাদনের (ঋণ) টাকা শোধ নিয়েও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন হাজার হাজার জেলে। আয় রোজগারহীন ভাবে দীর্ঘদিন বেকার সময় কাটানোর ফলে অনেকের ঘরের চুলায় এখন আগুন জ্বলছে না।তাছাড়া অবরোধ উপেক্ষা করে যেসমস্ত জেলেরা সমূদ্রে মাছ শিকার করছে তাদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে উপজেলা মৎস্য অফিসের বিভিন্ন অভিযানে।
মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দেশের মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিবছর সাগরে সব ধরনের মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। এ বছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত টানা ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে বর্তমানে সাগরে মাছ শিকার বন্ধ রয়েছে।অবরোধ শেষ হওয়ার বাকি আর মাত্র ১৩ দিন।
জেলে রহমান জানান, সরকার যে সহায়তা প্রদান করে তাতে আমাদের কিছুই হয় না।অনেক দিন ধরে বেকার হয়ে আছি। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাকি দিনগুলো কি হবে জানি না।
কুয়াকাটার মেলাপাড়া গ্রামের জামাল হোসেন বাড়ির উঠানে জাল বুনছেন আর বলছেন, কার্তিক থেকে বৈশাখ মাস পর্যন্ত মাত্র ২২ হাজার টাকা ভাগে পাইছি, সাগরে তেমন কোনো মাছ পাওয়া যায় নাই। সরকার তো বছরে তিনবার অবরোধ দেয়। মুই এহন পোলা-মাইয়া লইয়া খুব কষ্টে দিন পার করছি।
এ প্রসঙ্গে কলাপাড়ার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু শাহ বলেন, উপজেলায় মোট ১৮ হাজার ৩০৫ জন নিবন্ধিত ও ১৪ হাজার অনিবন্ধিত জেলে রয়েছেন।মাছের সাথে সরাসরি ৬০ হাজার মানুষ,মাছ সম্পর্কিত কাজে আর ও ১লক্ষ মানুষ জড়িত রয়েছেন।নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে প্রতিজন নিবন্ধিত জেলে ২ ধাপে ৮৬ কেজি করে বিশেষ ভিজিএফ চাল পাবেন। ইতোমধ্যেই প্রথম ধাপে প্রতিজন জেলেকে ৫৬ কেজি করে চাল বিতরন সম্পন্ন হয়েছে। ২য় ধাপে খুব শিঘ্রই ৩০ কেজি করে চাল বিতরন করা হবে। এসময় তিনি বলেন বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য উপজেলার ১১৭ জন জেলেকে বকনা গরু ও ৭৮ জিআইএফ জেলেকে বৈধ জাল বিতরন করা হয়েছে মৎষ্য বিভাগের পক্ষ থেকে।