• রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:১০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
কলাপাড়ায় শিক্ষার্থী হত্যা মামলার আসামিদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। কলাপাড়ায় লামিয়া হত্যা ঘটনায় নিরীহদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। কুয়াকাটা সড়কে সৌন্দর্য বর্ধনে বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। ৩ বছরেও ঘোড়াঘাট হিলি স্থলবন্দর জাতীয় মহাসড়কের কাজ শেষ হয়নি ভোগান্তিতে মানুষ/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। বাউফলে সেই মাদ্রাসার তালা ভাঙ্গার ভিডিও ভাইরাল, সার্বিক বিষয়ে তদন্ত সম্পন্ন, দ্রুত ব্যবস্থা/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। লোহালিয়া নদীতে পাওয়া রেজাউল বয়াতির লাশের রহস্য উদঘাটন, খুনি আটক/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। চাটখিলে নামাজরত মুসল্লিকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে আওয়ামীলীগ নেতা/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। আমতলীতে অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযান/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। কলাপাড়ায় বিরল প্রজাতির সজারু উদ্ধার/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। আমেরিকা প্রবাসী নারীকে গণধর্ষণ ও ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার-৩/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।।

৩ বছরেও ঘোড়াঘাট হিলি স্থলবন্দর জাতীয় মহাসড়কের কাজ শেষ হয়নি ভোগান্তিতে মানুষ/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।।

রিপোর্টার: / ১৯ পঠিত
আপডেট: শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

মাহতাব উদ্দিন আল মাহমুদ, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ 

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর হিলি থেকে ডুগডুগিহাট হয়ে ঘোড়াঘাট পর‌্যন্ত জাতীয় মহাসড়ক নিয়ে ভোগান্তি কয়েক যুগের। সেই ভোগান্তি লাঘব করতে হিলি থেকে ঘোড়াঘাট পর‌্যন্ত জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণসহ তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের সরু ও জরাজীর্ণ কালভার্ট পুনঃনির্মাণ এবং বাজার অংশে রিজিড পেভমেন্ট ও ড্রেন নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (একনেক)।

একনেকে অনুমোদন পাওয়ার পর সড়কটির কাজ শুরু হবার পর স্বস্তি ফেরে কয়েক লাখ মানুষের। বৃহত্তর স্থলবন্দর হিলি থেকে পণ্য আমদানি-রফতানি করার অন্যতম দুটি রুটের একটি এই জাতীয় মহাসড়ক। হিলি থেকে ঘোড়াঘাটের উপর দিয়ে সহজেই যাতায়াত করা যায় রাজধানী ঢাকা সহ দেশের যেকোন প্রান্তে। রাস্তাটির প্রশস্থকরণ কাজ শেষ হলে হিলি বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পণ্য আমদানি-রফতানিকারক ও ব্যবসায়ীদের যাতায়াত ও পণ্য আনা-নেওয়ার কাজ আরও সহজ হবে। অনেক ক্ষেত্রে কমে যাবে পরিবহন ব্যয়। তবে সেই স্বপ্ন সহসাই বাস্তবায়ন হচ্ছে না। কাজের ধীরগতির কারণে সড়কটির উন্নয়ন কাজ ভোগান্তিতে ভোগান্তিতে পড়েছে স্থানীয় ও ব্যবসায়ীসহ সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করা মানুষ ।

৪৬৩ কোটি ৭১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা বরাদ্দে তিনটি পৃথক প্যাকেজে এই জাতীয় মহাসড়ক উন্নীত হবে। তবে প্রকল্প শুরুর দুই বছর অতিবাহিত হলেও কাজের অগ্রগতি রূপ নিয়েছে চরম ভোগান্তিতে। প্রথম কাজের মেয়াদ ছিল দুই বছর। পরবর্তীতে কাজের মেয়াদ এক বছর বাড়ানো হলেও বর্ধিত সময় চলতি বছরের ডিসেম্বর পর‌্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়ক উন্নীতকরণ প্রকল্পের মেয়াদ। যা শেষ হতে বাকি আছে আর মাত্র চার মাস। কিন্তু কাজের গড় অগ্রগতি একটি প্যাকেজের ৫০ শতাংশ ও অপর দুটি প্যাকেজের মাত্র ৪০ শতাংশ। মেয়াদ শেষের পথে হলেও রাস্তা খুঁড়ে প্রশস্তকরণের কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। যত্রতত্র খুঁড়ে রাখায় একেবারে চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে এই জাতীয় সড়ক। চলতি বর্ষা মৌসুমে কাঁদা পানিতে ভরে আছে পুরো সড়ক। বর্ষা শুরুর আগে তীব্র ধুলোয় অন্ধকার হয়ে থাকত পুরো সড়ক। এতে একেবারেই চলাচলের অনুপোযুক্ত হয়ে আছে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি।

সড়ক বিভাগের তথ্য বলছে, প্রকল্পের তিনটি প্যাকেজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব পেয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জামিল ইকবাল প্রাইভেট লিঃ এবং অপর আরেকটি প্যাকেজ বাস্তবায়ন করবে আরেক প্রতিষ্ঠান মাসুদ হাইটেক। কিন্তু সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন, তিনটি প্যাকেজই একাই করছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জামিল ইকবাল গ্রুপ। প্রকল্প শুরু হয়েছে ২০২২ সালের ১ জুলাই এবং প্রকল্প শেষ হবার কথা ছিল ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর। এখন ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হবার কথা থাকলেও, তিনটি প্যাকেজের কাজের গড় অগ্রগতি মাত্র ৪০ শতাংশ বলে জানায় সওজ কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অনেক জায়গায় এখনো রাস্তার পুরনো পিচগুলো উঠানো হয়নি। আবার কোনো কোনো জায়গায় পিচ না উঠিয়ে রাস্তা কার্পেটিং করা হয়েছে।রাস্তায় ব্যবহার হচ্ছে নিম্নমানের কাঁচামাল। এছাড়াও পিচ করার পর রাস্তার মাঝে অনেক ফাঁক রয়ে গেছে। বেশির ভাগ জায়গায় সমান না করায় দেবে গেছে সাইড।

উপজেলার ওসমানপুর এলাকার মেহেদী হাসান, রাকিবুল বলেন, কাজের নামে এরা শুধু লুটপাট করছে। এদের কাজের কোনো সিস্টেম নেই-কোথায় আগে করতে হবে আর কোথায় পরে করতে হবে, এর কোনো সিরিয়াল নেই। এদের নাটকীয়তার কারণে আমাদের ভোগান্তি বাড়ছে। অপরদিকে উপজেলার সীমানা দেয়াল তৈরি করার কারণে রাস্তা সংকীর্ণ হচ্ছে, সেটার কোনো বাধা নেই।

সূরা মসজিদ এলাকার সিদ্দিক, বলাহার এলাকার রায়হান, ডুগডুগি এলাকার আজিজার রহমানসহ একাধিক ব্যক্তি দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, সঠিক সময়ে কাজ না হওয়ায় মানুষসহ যান চলাচলে ব্যাপক সমস্যা দেখা দিয়েছে। কাজ হচ্ছে খুবই নিম্নমানের। এটা নাকি জাতীয় মহাসড়ক? মনে হয় এগুলো দেখার কেউ নেই। যারা আসে তারা মনে হয় ম্যানেজ হয়ে চলে যায়।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জামিল ইকবাল গ্রুপের প্রকল্প ব্যবস্থাপক আনিসুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করেও তার দেখা মেলেনি। পরে প্রতিষ্ঠানের ইনচার্জের সাথে কথা হলে তিনি বর্ষা মৌসুমের দোহাই দেন এবং বলেন, সময়মতো বালু না পাওয়ায় কাজের বিলম্ব হয়েছে। এছাড়াও বেশিরভাগ প্রশ্নই তিনি এড়িয়ে যান।

দিনাজপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মনসুর আজিজ বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে আমরা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নিয়মিত তাগাদা দিচ্ছি। তিনটি প্যাকেজের কাজের গড় অগ্রগতি মাত্র ৪০ শতাংশ। প্রকল্পের মেয়াদ দ্বিতীয়বারের মতো বাড়ানো হলেও আর চার মাসে কাজ সম্পন্ন করতে পারবে না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়াও আমাদের অফিস থেকে কাজের তদারকি করা হচ্ছে। কাজের অনিয়ম ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রশ্নগুলো তিনিও এড়িয়ে যান।

কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হলেও সড়কটির উন্নয়ন স্বপ্ন এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। বর্ষা-শুকনো মৌসুমে মানুষের ভোগান্তি, ব্যবসায়ীদের ক্ষতি আর অনিয়মের ছাপ স্পষ্ট। এখন প্রশ্ন হচ্ছে-এই কোটি টাকার প্রকল্পের দায়ভার কে নেবে, আর সাধারণ মানুষ কখন পাবে টেকসই ও নিরাপদ সড়ক?


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ