সুপার টাইফুন রাগাসার তাণ্ডবে বিপর্যস্ত তাইওয়ান ও হংকং, নিহত ১৪, নিখোঁজ ১২৪
দক্ষিণ চীন সাগরে সৃষ্ট সুপার টাইফুন ‘রাগাসা’ তাণ্ডব চালিয়ে তাইওয়ান ও হংকংয়ে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে এনেছে। টাইফুনের আঘাতে তাইওয়ানে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন অনেকে এবং এখনও ১২৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এএফপি ও রয়টার্স জানিয়েছে, মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) তাইওয়ানের পূর্বাঞ্চলীয় জেলা হুয়ালিয়েনে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়। এখানকার প্রশাসনিক কর্মকর্তা লি কুয়ান-তিং জানান, ঝড়ের আঘাতে শুধু হুয়ালিয়েনেই নিহত হয়েছেন ১৪ জন। আহত হয়েছেন অন্তত ১৮ জন।
তাইওয়ানের ফায়ার সার্ভিস এক বিবৃতিতে জানায়, প্রবল বর্ষণে হুয়ালিয়েনের একটি হ্রদের বাঁধ ভেঙে শহরের বড় একটি অংশ পানিতে তলিয়ে যায়। অনেক জায়গায় পানির উচ্চতা দো’তলা ভবনের সমান হয়ে যায়। নিখোঁজের সংখ্যা প্রাথমিকভাবে ৩০ বলা হলেও পরে তা বেড়ে ১২৪ জনে দাঁড়ায়।
রয়টার্স জানায়, টাইফুন রাগাসার প্রভাবে তাইওয়ান ছাড়াও হংকং ও দক্ষিণ চীনের উপকূলীয় এলাকায় তীব্র ঝড়ো হাওয়া ও ভারী বর্ষণ শুরু হয়। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) থেকেই হংকংয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে হুয়ালিয়েনে একটি বাঁধ ভেঙে গুয়াংফু টাউনশিপে আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়।
হংকং অবজারভেটরি বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ভোরে সর্বোচ্চ টাইফুন সতর্কতা “টি–১০” জারি করে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ৫ মিটার উঁচু ঢেউ আছড়ে পড়ে। জলোচ্ছ্বাসে একজন মা ও তার পাঁচ বছরের সন্তান সাগরে ভেসে যান। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে হংকং বিমানবন্দর থেকে সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়।
চীনের গুয়াংডং প্রদেশে জরুরি সতর্কতা জারি করে চার লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। শেনজেনসহ একাধিক শহরে স্কুল-কলেজ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ফিলিপাইন, চীন ও তাইওয়ানের আবহাওয়াবিদরা রাগাসাকে “সুপার টাইফুন” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেল ৩টার দিকে ফিলিপাইনের কাগায়ানের বাতানিজ দ্বীপে প্রথম আঘাত হানে রাগাসা। সে সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৩০ কিলোমিটার। ফিলিপাইন উপকূল থেকে তাইওয়ানের পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলের দূরত্ব মাত্র ৭১০ কিলোমিটার।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাগরে সৃষ্ট এই ঘূর্ণিঝড়কে যুক্তরাষ্ট্রে হারিকেন বলা হয়। আর যখন কোনো হারিকেন বিপুল এলাকা জুড়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে সক্ষম হয়, তখন সেটিকে “ক্যাটাগরি–৫” হারিকেন হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। রাগাসার শক্তিকেও সেই মাত্রার সঙ্গে তুলনা করেছেন চীন ও ফিলিপাইনের আবহাওয়াবিদরা।