মোঃনূর ইসলাম নয়ন, দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ দিনাজপুর সদরের ঘুঘুডাঙ্গা এলাকায়
সম্পূর্ণ নিয়মবর্হিভুভাবে চলছে বালু উত্তোলন। এছাড়াও ড্রেজার মেশিন দিয়ে
দেদারসে দিন-রাত বালু উত্তোলন হচ্ছে সমান তালে। বালু উত্তোলনের ফলে নদী সংলগ্ন
৪৭নং ঘুঘুডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ঘুঘুডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় ও
কলেজটি যে কোন সময় ধসে পড়তে পারে এমনটি আশঙ্কা করছেন স্থানীয়
এলাকাবাসী। বার বার ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করতে নিষেধ করলেও কথাশুনতে নারাজ বালু মহালের ইজাদার মোঃ নূর আলম ও কেয়ারটেকার মোঃ আলতাফ
হোসেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দিনাজপুর বিরল উপজেলার পূর্ণভবা (কাঞ্চন) নদীর তীর
ঘেঁষে ১১নং পলাশবাড়ী ইউনিয়নের সাকইড় এলাকায় মধ্যে পড়ে বালু মহলের
জায়গাটি। বালু মহালের ইজাদার উক্ত ইউনিয়ন হতে বালু উত্তোলন করেন এবং
দিনাজপুর সদরের ঘুঘুডাঙ্গা থেকেও বালু উত্তোলন করছেন বলে এলাকাবাসী
অভিযোগ করেছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ দিনাজপুর সদরের ঘুঘুডাঙ্গা স্কুল ও
কলেজের পাশ থেকে দিনে ও রাতে প্রায় ২শ’ থেকে আড়াই শ’ ট্রলি বালু উত্তোলন করে
শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি করা হচ্ছে। এমনকি নদী সুরক্ষা বাধ কেটে বানানো
হয়েছে ট্রলি চলাচলের রাস্তা। ট্রলি চলাচলের ফলে ঘুঘুডাঙ্গা এলাকার বিভিন্ন রাস্তা
ভেঙ্গে গেছে। এদিকে ৪৭নং ঘুঘুডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং
ঘুঘুডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকা এ
প্রতিনিধিকে জানান, যে হারে দিন-রাত ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা
হচ্ছে এতে করে নদীর গভীর ভু-গর্ভস্থ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সুরক্ষিত নদীর বাধ অরক্ষিত
হয়ে পড়েছে। যে কোন সময় স্কুল এবং কলেজের ৬তলা ভবনটি ধসে যেতে পারে। ঘটে
যেতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা।
ঘুঘুডাঙ্গা এলাকাবাসীর পক্ষে আশাদুজ্জামান দিনাজপুর সদর ইউএনও বরাবর লিখিত
অভিযোগে জানা গেছে, দিনাজপুর সদরের ঘুঘুডাঙ্গা স্কুল ও কলেজ সংলগ্ন
এলাকায় ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে ট্রলি বোঝাই করে বিক্রি করছেন
যথাক্রমে-দিনাজপুর শহরোস্থ পাহাড়পুরের আশিকুর রহমান, সুইহারির গফুর,
ঈদগাহবস্তির কামরুল হাসান ববিন, ৬নং আউলিয়াপুর ঘুঘুডাঙ্গার হালিম। স্থানীয়
গ্রামবাসী, স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকেরা এ প্রতিনিধিকে জানান,
নদীর বঁাধ কেটে রাস্তা বানিয়ে ট্রলির যাতায়াতের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। ধীরে
ধীরে স্কুল-কলেজের মাটি সরে যাচ্ছে। ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। মাটির উর্বরতা হ্রাস
পাচ্ছে। ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করায় রাস্তার আশ-পাশ ভেঙ্গে গেছে।
হুমকির মুখে পড়েছে ঘুঘুডাঙ্গা এলাকাটি। এলাকাবাসী আরও জানান, আমরা
যতটুকু শুনেছি এই ঘুঘুডাঙ্গায় সরকার কাউকে বালু মহাল ইজারা দেননি। তবু
এরা বালু তুলে বিক্রি করছে দেদারছে। আমরা জেলা প্রশাসক এবং দিনাজপুর সদর
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করছি। যাতে করে দ্রুত ঘুঘুডাঙ্গা
থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেয়। প্রায় ২ বছর আগে বালু উত্তোলন বন্ধ ছিল। হঠাৎ
করেই আবার তারা বালু তুলছে। আমরা শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং এলাকার স্থানীয় জনগণ
আতঙ্কের মধ্যে আছি।
দিনাজপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা এস.এইচ.এম. মাগফুরুল হাসান
আববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, পুর্নভবা বালু মহালটি বিরল
উপজেলার মধ্যে পড়ে। তার পরেও বিষয়টি যেহেতু স্পর্শকাতর তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা
গ্রহণ করা হবে বলে জানা গেছে।