• শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:১৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
জানুয়ারির তাপমাত্রা বিস্ময়কর রকমের গরম: ইইউ মনিটর,,,, দৈনিক ক্রাইম বাংলা বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্ট সংবিধান সংশোধনীর প্রস্তাব সংস্কার কমিশনের,,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা বদলগাছীর কোলা ইউনিয়নে বিএনপি’র সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। কলাপাড়ায় যুগান্তরের রজতজয়ন্তী উৎসব পালিত/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। কলাপাড়ায় প্রথম বিভাগ ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট’র উদ্বোধন/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। সংবাদ প্রকাশের একদিন পর প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বন্ধ হলো সরকারি জায়গায় পুকুর খনন/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। বদলগাছি উপজেলা ৫৩ তম জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ক্রিয়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। ঢাবি’র জগন্নাথ হলে সরস্বতী পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে সরকারের দুই উপদেষ্টা,,, দৈনিক ক্রাইম বাংলা এবার বাংলাদেশে আসছে দূষণ পরিমাপক যন্ত্র, চুক্তি সই,,,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা বিক্ষোভ আন্দোলন যাই হোক গুলি করে হত্যা বন্ধ করতে হবে,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা


ফিচার আইটেম- হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর বরেণ্য কৃষক নেতা তেভাগা দানেশের অভাগা বাড়ি!দৈনিক ক্রাইম বাংলা।

রিপোর্টার: / ২৮৫ পঠিত
আপডেট: রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১


মোঃনূর ইসলাম নয়ন, দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি ঃ ইতিহাসে হাজী মোহাম্মদ
দানেশের অবদান অনেকের জানা। কৃষকদের অধিকার আদায়ে তেভাগা আন্দোলনের
পথিকৃৎ ছিলেন দানেশ-এটাও অনেকের জানা। এই ঐতিহাসিক রাজনীতিবিদের
স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি দিনাজপুরের বালুবাড়ি মোড়ে, আর তা এখন ধ্বংসের
মুখে।
বহু পুরনো বাড়িটি সংস্কারের অভাবে ভগ্নপ্রায়। ক্রমশ ক্ষয়ে এসেছে এর শান,
জৌলুস। সংস্কারের অভাবে ইতোমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব হাজী
দানেশের অমূল্য অনেক স্মৃতি।
একই মোড়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মায়ের বাড়ি ‘তৈয়বা
ভিলা’ এবং হাজী দানেশের বাড়িটি পাশাপাশি। আসা-যাওয়ার পথে অনেকেই
এটি দেখেন। তবে জানেন না এর সঙ্গে দানেশের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি। ‘তৈয়বা
ভিলা’ সবার কাছে যথেষ্ট পরিচিত হলেও দানেশের বাড়িটি ততোটা নয়।
ভাঙাচোরা শরীর নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা নিতান্ত অবহেলিত এ বাড়িটির চুন,
সুড়কি ঝরে পড়ছে অবিরাম। একতলা বাড়িটির অবস্থা যেমন করুণ, এর বাইরের
ঘের দেয়ালের অবস্থাও তেমন।
এর সামনের খালি জায়গাটিতে অযত্নে ঘাস, লতাপাতা বেড়ে উঠেছে, জঙ্গলের
রূপ নিয়েছে। দেখে বোঝার উপায় নেই যে, এখানে কখনো হাজী দানেশের মতো
রাজনীতিবিদ বসবাস করেছিলেন। বর্তমানে বাড়ির কোথাও যত্নের কোনো
ছাপ যে নেই, তা যে কেউ দেখেই বুঝতে পারবে।
জানা গেলো, বাড়িটি এখন ওয়ার্কার্স পার্টির সদস্যরা দলীয় সভার কাজে
ব্যবহার করছেন। ভেতরে ঢুকে কথার সত্যতাও পাওয়া গেল, সভা করছিলেন ক’জন
সদস্য।
সদস্যরা জানালেন, নিজেদের প্রয়োজনেই যতোটা সম্ভব বাড়িটির সাফাই ও
তদারকি করছেন তারা। কিন্তু এমন ঐতিহাসিক একটি বাড়ির জন্য সেই তদারকি
মোটেই পর্যাপ্ত নয় বলেও স্বীকার করলেন উপস্থিত অনেকে।
নাম না প্রকাশের শর্তে ওয়ার্কার্স পার্টির এক নেতা জানান, বাড়ির মূল
ভিত্তি ক্রমশই দুর্বল হয়ে পড়ছে। বাড়িটিতে কোনো স্মৃতিফলক পর্যন্ত নেই।
বাড়িটি কখন নির্মিত, দানেশের এই বাড়িতে বসবাসের সময়সীমাসহ
গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্যই উল্লেখ নেই বাড়িটির কোথাও।
তিনি আরও জানান, দানেশের ছেলেরা সংস্কারের কাজ করবে বলে শুনেছি, কিন্তু
চূড়ান্ত কিছুর নজির এখনো দেখছি না। বাড়িতে যদিও চুরির কিছু নেই, তবু
নষ্ট হওয়ার মতো অনেক কিছুই আছে বলেই এর দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন বলে তারাও
মনে করছেন বলে জানান এই নেতা। হাজী দানেশ- অথচ এটি সংস্কারের মাধ্যমে
‘দানেশ স্মৃতি জাদুঘরে’ রূপান্তর করা যেতে পারে এবং দানেশের স্মৃতি ও
বর্ণিল ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে ভালোভাবে উপস্থাপন করা যেতে পারে বলেও
মনে করেন স্থানীয় লোকজন।
উল্লেখ্য, হাজী মোহাম্মদ দানেশ দিনাজপুরের সুলতানপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ
করেন। আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৩১ সালে ইতিহাসে এমএ সম্পন্ন
করেন দানেশ। ১৯৩২ সালে বিএল ডিগ্রি অর্জন করে দিনাজপুর জেলা বার-এ
যোগ দেন।এরপর দানেশ ১৯৩৮ সালে কৃষক সমিতিতে (তৎকালীন বাংলার একটি প্রথম সারির
সমাজতান্ত্রিক দল) যোগ দেন। একপর্যায়ে উত্তরবঙ্গের কৃষকদের নিয়ে আন্দোলন
সংগঠিত করেন, ইতিহাসে যা কৃষক আন্দোলন নামে পরিচিত।
দানেশের নেতৃত্বে দিনাজপুর জেলা টোল আদায় বন্ধ ও জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ
আন্দোলন জোরদার হয়। এসবের জন্য তাকে বন্দিও করা হয়।
হাজী দানেশ-১৯৪২ সালে নীলফামারীর ডোমার-এ আয়োজিত বঙ্গ কৃষক সম্মেলন
আয়োজকদের একজন ছিলেন দানেশ। সম্মেলনের পরপরই তাকে আবার গ্রেফতার করা
হয় এবং দীর্ঘ সময় জেলে রাখা হয়। দানেশ বর্গা কৃষকদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য
১৯৪৬-এ উত্তরবঙ্গে তেভাগা আন্দোলন-এর সূত্রপাত করেন।
১৯৪৫ সালে তিনি মুসলিম লীগে যোগ দেন। কিন্তু তেভাগা আন্দোলনে
নেতৃত্বদান অব্যাহত রাখার কারণে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। ১৯৫৪ সালের
নির্বাচনে হাজী দানেশ দিনাজপুর জেলা থেকে পূর্ববঙ্গ আইন পরিষদের সদস্য
নির্বাচিত হন।
কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক পূর্ববঙ্গ যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভা ভেঙে দেওয়ার পর তিনি
গ্রেফতার হন এবং ১৯৫৬ সালে মুক্ত হন।
১৯৫৭ সালে তিনি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে গঠিত ন্যাশনাল
আওয়ামী পার্টিতে যোগ দেন এবং দলের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। এর আগে
তিনি গণতন্ত্রী দলের অস্তিত্ব বিলুপ্ত করেন।
১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি হওয়ার পর তিনি আবারও কারাবরণ করেন।
১৯৬৪ সালে তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির পূর্ব পাকিস্তান শাখার সাধারণ
সম্পাদক এবং ১৯৬৫ সালে পুনরায় কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি নির্বাচিত
হন।
হাজী দানেশ ১৯৭১ সালে তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি থেকে পদত্যাগ করেন
এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুজিবনগরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেন।
১৯৭৩ সালের ডিসেম্বর মাসে দানেশ জাতীয় গণমুক্তি ইউনিয়ন নামে নতুন
একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন।
১৯৮০ সালে এই দল বিলুপ্ত করে গণতান্ত্রিক পার্টি নামে নতুন একটি দল গঠন
করেন এবং দলের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালে গণতান্ত্রিক পার্টি
জাতীয় পার্টির সাথে একীভূত হয়ে যায়।
দানেশ জাতীয় পার্টির অঙ্গ সংগঠন জাতীয় কৃষক পার্টির প্রধান উপদেষ্টা
নিযুক্ত হন। ১৯৮৬ সালের ২৮ জুন বরেণ্য এই কৃষক নেতা মৃত্যুবরণ করেন।
হাজী দানেশ আজীবন বৈপ্লবিক রাজনৈতিক দর্শনের সংগ্রামী অনুশীলন
ছাড়া আত্মসুখের জন্য জীবনে কিছুই করে যাননি। তিনি আইন পাশ করেও
ছিলেন না পেশাদার আইনজীবী বরং ছিলেন মানুষের সুখে দুঃখে ও প্রয়োজনে,
অভাব অভিযোগের প্রতিবিধানের পটভূমিতে একজন হাফ-খোরাকি
স্বেচ্ছাকর্মী।
দিনাজপুরের কৃষি কলেজটি হাজী মোহাম্মদ দানেশ প্রতিষ্ঠা করেন, যা
পরবর্তীকালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়।
সর্বশেষ জানা গেছে, এই বরেণ্য কৃষক নেতার বাড়ির সাথে কে বা কাহারা
একটি ডায়গনস্টিক সেন্টার স্থাপন করেছে। তঁার অবদানের কথা ভোলেনি
দিনাজপুরবাসী। অমর গাঁথা রাজনৈতিক জীবন নিয়ে একটি যাদুঘর নির্মাণ
করা এখন সময়ের দাবী। এই মহান নেতা দানেশের কবরটি দিনাজপুর গৌর-এ শহীদ
ময়দানের উত্তর পাড়ে অবস্থিত। কিন্তু আফসোস অযত্ন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ


You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page