তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃবরগুনার তালতলী থানার মালী হিসেবে কর্মরত আলী হোসেন নামের এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে মৃত্যু ব্যক্তির টিপসই জাল করে জমাজমি নিজের নামে নিয়ে তা বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগির জমি ফিরে পাওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন।
সোমবার (৮ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার অংকুজান পাড়া এলাকায় ভুক্তভোগীর পক্ষে এলাকাবাসি মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগী পরিবার বলেন,উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের বড় অংকুজানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো.আমজেদ হোসেন নামের এক ব্যক্তি গত ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর মারা যায়। এই সুযোগে তালতলী থানার মালী হিসেবে কর্মরত আলী হোসেন নামের এক প্রভাবশালী গত ২০১৪ সালের ১৫ জানুয়ারী মৃত্যু আমজেদ হোসেনের টিপসই জালিয়াতি করে ১৮ শতাংশ জমি মাত্র ৪ হাজার টাকায় বায়নার একটি সাদা কাগজ তৈরি করেন। তৈরি করা বায়নার কাগজ সূত্রে ঐ জমি প্রভাবশালী আলী হোসেন,ইউসুফ হাং ও হারুন অর রশিদের যোগসাজেসে ভূয়া দলিলের মাধ্যমে অন্যত্র বিক্রী করে দেন। ভুক্তভোগীরা বিষয়টি গত কয়েক বছরেও জানতে পারেনি তাদেরই জমি এভাবে জাল-জালিয়াতি করে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও ১৯৯৪-৯৫ সালের একটি ভুয়া দলিল দেখিয়ে সেই জমিও জোরপূর্বক দখল করেছেন এই প্রভাবশালী আলী হোসেন গং।
মানববন্ধনে মৃত্যু আমজেদের বড় মেয়ে আকলিমা বেগম বলেন, আমাদের জমিজমা ভূয়া কাগজ পত্র দেখিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে দেওয়ার সংবাদ পেয়ে আদালতে জালজালিয়াতির একটি মামলা দায়ের করি। আদালত মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা সুরজিৎ বিশ্বাস প্রভাবশালী আলী হোসেনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে অনৈতিক পথ অবলম্বন করে সত্যিটা ধামাচাপা দিয়ে আদালতে মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ঐ তদন্ত রিপোর্টে আমি আপত্তি দিলে আদালত তদন্ত কারি কর্মকর্তাকে চলতি বছরে অক্টোবর মাসের ১৭ তারিখে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা ঐ তারিখে হাজির না হয়ে সময় আবেদন করেন।
মৃত আমজেদ হোসেনের স্ত্রী সেতারা বেগম বলেন, প্রভাবশালী আলী হোসেন জালিয়াতির মাধ্যেমে আমার স্বামীর টিপসই জালিয়াতি করে ১৯৯৪-৯৫ সালের একটি দলিল এবং তার মৃত্যুর দুই মাস পর অন্য একটি জমির বায়না নিয়ে গেছেন। মামলার পর এখন বায়না পত্রটি আলী হোসেন অস্বীকার করে। তবে ১৯৯৪-৯৫ সালের দলিলটি স্বীকার করে জমি দখল রেখেছে। তিনি আরও বলেন, প্রভাবশালী আলী হোসেন তালতলী থানায় মাঝির কাজ করেন এই ক্ষমতা দেখিয়ে আমাদের হুমকি দামকি দিয়ে আসছে। সরকারের কাছে অনুরোধ করবো যাতে আমার জমি আমি ফিরিয়ে পাই।
এ বিষয়ে আলী হোসেন বলেন, তারা যে অভিযোগ করেছেন সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ভিক্তিহীন। ১৮ শতাংশ জমির বিষয়ে কোনো বায়না পত্র হয়নি। তবে তাদের থেকে ১৯৯৪-৯৫ সালে আমি জমি কিনেছি।
তদন্তকারী কর্মকর্তা সুরজিৎ বিশ্বাস বলেন, আলী হোসেন যে সাদা কাগজে বায়না করেছে তার আইনগত কোনো ভিক্তি নেই। এই আলোকেই সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে তার প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়েছে। টাকা খেয়ে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করার বিষয়ে বলেন, এগুলো মিথ্যা ও ভিক্তিহীন।