• শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৫৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
কলাপাড়ায় বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতার পুজা মন্ডপ পরিদর্শন/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। বৈরী আবহাওয়ার মাঝেও কুয়াকাটায় পর্যটকদের বাঁধভাঙা উল্লাস/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। সৌদি আরবের বিখ্যাত ‘খেপসা’ খাওয়ালেন বিএনপির নেতা ইন্জিনিয়ার ফারুক/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। বাউফলে সেই আলোচিত হত্যা মামলার পলাতক আসামি গোবিন্দ ঘরামি গ্রেফতার/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। সক্রিয় হয়ে উঠেছে জাল নোট চক্রের সদস্যরা, মিলছে না প্রতিকার/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। বোরহান উদ্দিন পৌর ছাত্রদলের উদ্যোগে আলহাজ্ব হাফিজ ইব্রাহিমের নির্দেশে উপহার বিতরণ/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। নারীদের অংশগ্রহণ ছাড়া রাষ্ট্র কখনোই এগুতে পারবেনা …. তানিয়া রব/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। দাউদকান্দিতে কাইয়ুম মেম্বারের বিরুদ্ধে ভাতা বাণিজ্যের অভিযোগ,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা জয় দিয়ে আফগানিস্তান সিরিজ শুরু করতে চায় টাইগাররা,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা নতুন সিরিজে নিয়ে আসছেন টিম রবিনসন,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা

নামাজ শেষে মিছিলে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ হন হাফেজ সাজ্জাদ,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা

রিপোর্টার: / ১৩২ পঠিত
আপডেট: শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৪

চাঁদপুর, ১১ অক্টোবর ২০২৪ (: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বর এলাকায় মসজিদে আসর নামাজ আদায় করে মিছিলে গিয়ে পুলিশের গুলিতে শহিদ হন হাফেজ সাজ্জাদ হোসেন সাব্বির (১৯)। তিনি চাঁদপুরের শহরের রঘুনাথপুর গ্রামের রাজা বাড়ীর মো. জসিম উদ্দিন রাজার ছেলে।

ছেলেকে হারিয়ে শোকে কাতর মা শাহনাজ বেগম বলেন ‘পুলিশ যেন পরিবারের একজনকে না, বরং সকলকে গুলি করে হত্যা করেছে। কারণ, ছেলেকে হারিয়ে আমাদের পরিবার এখন জিন্দালাশ।’

সম্প্রতি শহিদ সাব্বিরের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে পুরো বাড়িতেই নিরবতা। ছেলে কুরআনে হাফেজ হওয়ার কারণে পরিবারটি ধার্মিক। প্রথমে ছেলে শহিদ হওয়ার বর্ণনা দিতে রাজি হননি সাব্বিরের মা। অনেক অনুরোধের পরে এই প্রতিবেদককে ছেলের ছোট থেকে বড় হওয়ার স্বপ্নের কথা জানান তিনি।

স্বজনদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, শহিদ হফেজ সাব্বির এর বাবা মো. জসিম উদ্দিন রাজা পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। নিজ এলাকায় বিভিন্ন স্থানে কাজ করে সংসারের খরচ বহন করেন। মা শাহনাজ বেগম গৃহিনী। সাব্বির বড়। তার ছোট ভাই ৮ বছর বসয়ী সাফায়েত হোসেন (সামি) স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়ে।

সাব্বিরের বাবা জসিম উদ্দিন জানান, আমার দুই ছেলে। সাব্বিরকে মাদ্রাসায় পড়ানোর স্বপ্ন ছিল আমাদের। যে কারণে ছোট বেলায় স্থানীয় মাদ্রাসায় ভর্তি করাই। এরপর হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলা ফুলছোঁয়া মাদ্রাসার হিফজ খানায় ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে সে কোরআনের হিফজ সম্পন্ন করে। এরপর একই মাদ্রাসায় মিজান শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে।

তিনি জানান, ছেলে মাওলানা হবে এটা ছিলো আমাদের স্বপ্ন। কিন্তু সাংসারিক অভাব অনটন দেখে ছেলে আমার পড়া শেষ হওয়ার আগেই ঢাকা মিরপুর ইউসুফ খান নামে ব্যাক্তির ‘ঢাকা মটরস’ নামে প্রতিষ্ঠানে কাজ শিখতে যায়। সংসারের হাল ধরার আগেই আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে পরপারে চলে গেল। ছেলেকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে। আমার পরিবারের মত অনেক পরিবার সন্তান হারা হয়েছে। আমি এই বিচার আল্লাহর কাছে চাইব।

সাব্বিরের খুবই ঘনিষ্ঠ বন্ধু সম্পর্কে ফুফাত ভাই জিল্লুর রহমান সিফতা। তিনি চাঁদপুর কারিগরি বিদ্যালয় ও কলেজের দ্বাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। সিফাত বলেন, ছোট বেলা থেকেই সাব্বির আমার সাথে চলাফেরা করতো। পুরো শৈশবে আমাদের অনেক স্মৃতি আছে। গত ঈদুল ফিতরের পরে বন্ধুদের নিয়ে আমরা বান্দরবান ভ্রমনে গিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের সাথে সাব্বিরও ছিলো। পরবর্তী ভ্রমনে আমরা কক্সবাজার যাব এমন পরিকল্পনা ছিলো। সাব্বির শহিদ হওয়ার পর আমাদের সেই পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে।

সিফাত আরও বলেন, গত ১৭ জুলাই আমার সাথে সব শেষ কথা হয় সাব্বিরের। আমাদের বন্ধুদের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছিলো। ওই গ্রুপেই কথা হয় তার সাথে। আমি সাব্বিরের কাছে জানতে চাই কি অবস্থা ঢাকার। সে পরিস্থিতি জানায়। তাকে কয়েক বার নিষেধ করেছি তুমি আন্দোলনে যাবে না। কিন্তু সে আমাদের কথা শুনেনি। ঘটনার দিন বিকেলে আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়।

শহিদ সাব্বিরের মা শাহনাজ বেগম বলেন, আমার দুই ছেলে ও স্বামীকে নিয়ে আল্লাহ ভালই রেখেছিলো। আমার স্বামী মাঝে মাঝে অসুস্থ হয়ে যেতেন। যে কারণে ছেলে পড়াবস্থায় কাজে যোগ দেয়। আমার বড় ভাই জাহাঙ্গীর ঢাকায় থাকেন। তিনিই সাব্বিরকে ওয়ার্কশপের কাজ নিয়ে দেয়। আমাদের স্বপ্ন ছিলো ছেলে আলেম হবে এবং ইসলামের খেদমত করবে। সেটি আর হলো না।

শহিদ সাজ্জাদের বাবা জসিম রাজা জানান, চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী মেজিস্ট্রেট প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের সাথে দেখা করেন। আর রাজনৈতিক দলের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর নেতারাসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ তাদের সাথে দেখা করে সহমর্মিতা জানিয়েছেন।  এরমধ্যে প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ যাওয়ার সময় বিভিন্ন আইটেমের ফল নিয়ে যান এবং ১০ হাজার টাকা আর্থিক সহযোগিতা করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ