
আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়: সরাসরি সম্প্রচার করবে বিটিভি
চব্বিশের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত কথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং রাজসাক্ষী হিসেবে থাকা সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় আজ সোমবার ঘোষণা করা হবে।
গত ১৩ নভেম্বর বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেন। বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারক মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
সরাসরি সম্প্রচার
রোববার সকালে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক ব্রিফিংয়ে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম জানান যে, ট্রাইব্যুনালের অনুমতি সাপেক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) রায়টি সরাসরি সম্প্রচার করবে। দেশের অন্যান্য গণমাধ্যম বিটিভির সিগন্যাল ব্যবহার করে সম্প্রচার করতে পারবে।
এ ছাড়া সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বড় পর্দার ব্যবস্থা করা হবে, যাতে সাধারণ মানুষও রায়প্রক্রিয়া প্রত্যক্ষ করতে পারে।
সূত্র জানায়, এই ঐতিহাসিক মামলার রায় প্রত্যাশায় পুরো জাতি ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর এখন বাংলাদেশের দিকে।
অভিযোগ ও অবস্থান
পাঁচটি অভিযোগে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছে প্রসিকিউশন। অন্যদিকে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীরা আসামিদের পক্ষে নির্দোষ দাবি করে খালাস চান।
রাজসাক্ষী হিসেবে থাকা সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আইনজীবীরাও তার খালাস দাবি করেছেন।
প্রসিকিউশন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, মিজানুল ইসলাম ও গাজী এস এইচ তামিমসহ অন্যান্য প্রসিকিউটর শুনানিতে অংশ নেন। পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। রাজসাক্ষী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে লড়াই করেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
সাক্ষ্য গ্রহণ
এই মামলায় মোট ৫৪ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাদের মধ্যে ছিলেন গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের বাবা, স্বজনহারা পরিবারের সদস্যরা, জুলাই আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ–এর সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থান দমনের সময় তৎকালীন সরকারের নির্দেশনায় নিরাপত্তা বাহিনী, প্রশাসন ও দলীয় ক্যাডারদের সম্পৃক্ততায় হত্যাকাণ্ড ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে—এমন অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে ধারাবাহিকভাবে একাধিক মামলা দায়ের হয়। বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অভিযোগের বিচার চলছে।