• বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৩৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
নিউইয়র্কে রাজনৈতিক নেতাদের হেনস্থায় গভীর দুঃখ প্রকাশ, সরকারের আইনি ও কূটনৈতিক ব্যবস্থা গ্রহণের অঙ্গীকার,,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা মনোনয়ন চূড়ান্ত করবে পার্লামেন্টারি বোর্ড, বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান রিজভীর,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আনার কোনো সুযোগ নেই: নাহিদ ইসলাম,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা আপৎকালীন সময়ের জন্য ডলার মজুত যথেষ্ট নয়: অর্থ উপদেষ্টা,,,, দৈনিক ক্রাইম বাংলা আলহাজ্ব জালাল উদ্দিন কলেজ ছাত্রদলের নিন্দা ও প্রতিবাদ,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা কলাপাড়ায় ভূয়া ছাত্রদল সভাপতি দাবীর অভিযোগে বিজ্ঞপ্তি/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। দশমিনায় গছানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের স্মরণে শোকসভা ও দোয়া মোনাজাত/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। বাউফলে ভূমি জরিপে ঘুষ আর দালালদের দৌরাত্ম, সাংবাদিকদের হাতে আটক দালাল/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। আমতলীতে দুই সন্তানের জনক দশম শ্রেনীর ছাত্রী নিয়ে উধাও/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। জুলাই যুদ্ধো পরিবারের সাথে মতবিনিময় করেন -হাফিজ ইব্রাহিম/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।।

নেই শিক্ষার্থী পাঠদান হয় না মাদ্রাসায়, ১৩ বছর ধরে বেতন ভাতা উত্তোলন/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।

রিপোর্টার: / ১৬০ পঠিত
আপডেট: শুক্রবার, ৩ জুন, ২০২২

এম.জাফরান হারুন, , পটুয়াখালী:: মাদ্রাসাটিতে পাঠদান হয় না। কারণ, কোনো শিক্ষার্থী নেই। কৌশলে অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন করে ওই মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষা দেওয়ানো হয়। ২০০৯ সাল থেকে এভাবেই চলছে এমপিওভুক্ত মাদ্রাসাটি।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির নাম পূর্ব ইন্দ্রকূল ফিরোজা কামাল বালিকা দাখিল মাদ্রাসা। এর অবস্থান পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার সূর্যমণি ইউনিয়নে। ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মাদ্রাসাটি। এমপিওভুক্ত হয় ২০০৪ সালে। ইবতেদায়ি ও দাখিল শাখায় সুপার ও ৯ জন শিক্ষকসহ মোট শিক্ষক-কর্মচারী সংখ্যা ১৩ জন। তাঁরা প্রতি মাসে দুই লাখ আট হাজার টাকা উত্তোলন করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাদ্রাসার সঙ্গে এলাকার লোকজনের সম্পৃক্ততা কম। এটি পারিবারিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। শুরু থেকে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি একজন। তাঁর পরিবারের চারজন সদস্য সেখানে শিক্ষক ও কর্মচারী পদে রয়েছেন। এ ছাড়া মাদ্রাসার দুজন শিক্ষকের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর তাঁদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ওই দুই শিক্ষক পরে বিয়ে করেন। ২০০৯ সালে আবার তাঁরা চাকরিতে বহাল হন। যদিও পরে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। ওই ঘটনার পর অনেক অভিভাবক সন্তানকে এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাচ্ছেন না।

শুরু থেকেই মাদ্রাসাটির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হিসেবে আছেন আবদুল মোতালেব। মাদ্রাসাটির সুপার হলেন সভাপতির ছেলের বউ মাহফুজা বেগম। আরেক ছেলের বউ নুরজাহান বেগম হলেন কারি শিক্ষক। সভাপতির দুই ছেলের একজন দপ্তরি, অন্যজন নৈশপ্রহরী।

হারুন অর রশিদ নামের স্থানীয় একজন বলেন, এলাকার অভিভাবকেরা মাদ্রাসায় তাঁদের মেয়েদের ভর্তি করাচ্ছেন না। কষ্ট হলেও প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে অন্য দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে তাঁদের মেয়েরা পড়াশোনা করে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই মাদ্রাসার একজন শিক্ষক বলেন, ২০০৯ সাল পর্যন্ত মাদ্রাসাটি খুবই ভালো চলছিল। দুই শিক্ষকের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্কের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আশপাশের এলাকার অভিভাবকেরা তাঁদের মেয়েদের এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাচ্ছেন না।

এ বিষয়ে মাদ্রাসার সুপার মাহফুজা বেগম বলেন, প্রতিষ্ঠানটি টিকিয়ে রাখার জন্য অনেক চেষ্টা করছি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের পা ধরেছি। এরপরও তাঁরা মেয়েদের ভর্তি করাচ্ছেন না। এ কারণে অন্য মাদ্রাসার কিছু শিক্ষার্থীকে ধার করে দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে টিকিয়ে রাখছি।

মাহফুজা বেগম জানান, ২০২১ সালে ১৫ জন শিক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ১০ জন উত্তীর্ণ হয়। ২০২২ সালের দাখিল পরীক্ষায় ১৫ জন ফরম পূরণ করেছে।

গত ২৫ মে দুপুর সোয়া ১২টা থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা মাদ্রাসায় অবস্থান করে কোনো শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী পাওয়া যায়নি। মাদ্রাসাটির টিনশেড ভবনটি দেখলে বোঝার কোনো উপায় নেই, এটি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। মাদ্রাসাটির নামসংবলিত কোনো সাইনবোর্ড নেই। সুপারের কক্ষে চারটি চেয়ার ও ছোট একটি টেবিল। সব মিলিয়ে ১০-১৫ জোড়া বেঞ্চ রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে সুপার মাহফুজা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়ে মুঠোফোনে বলেন, গত বুধবার (২৫ মে) একটু আগে ছুটি দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকেরা মাদ্রাসায় আসেন। তবে মাঝেমধ্যে অসুস্থতার কারণে এক-দুজন আসেন না।

পরদিন ২৬ মে দুপুর ১২টায় গিয়ে দেখা যায়, ছয়জন শিক্ষক বসে আছেন। দুজন কর্মচারী ঘোরাঘুরি করছেন। তবে কোনো শিক্ষার্থী নেই। খবর পেয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আবদুল মোতালেব আসেন। তিনিসহ অন্য শিক্ষকেরা স্বীকার করেন, পাঠদান হয়নি।

আবদুল মোতালেব বলেন, অনেক চেষ্টা করছি। কিন্তু অভিভাবকেরা তাঁদের মেয়েদের ভর্তি করাতে না চাইলে কী করার আছে?

চক, ডাস্টার, ব্ল্যাকবোর্ড, ছাত্রী হাজিরা খাতাসহ কোনো শিক্ষা উপকরণ দেখাতে পারেননি শিক্ষকেরা। শিক্ষক হাজিরায় দেখা যায় আইরিন বেগম নামের এক সহকারী শিক্ষক ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর শেষ উপস্থিতি স্বাক্ষর করেছেন। তিনি মুঠোফোনে বলেন, আমি একা নই, অনেক শিক্ষকই মাদ্রাসায় যান না। আমি মাদ্রাসায় উপস্থিত হলেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিতে দেন না সুপার ও সভাপতি। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওই মাদ্রাসার ভবন নেই। মাটির রাস্তা। এ কারণে ছাত্রীরা এই মাদ্রাসায় ভর্তি হতে চায় না।

মাদ্রাসাটির বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হক বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এ বিষয়ে তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ