মনির হাওলাদার।।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশের আগের দিন রাতে হাসপাতালে রোগী দেখতে গিয়ে বিপাকে পরেছেন পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য মশিউর রহমান শিমুল। ২৮ অক্টোবরে বিএনপির পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশে অংশ নিতে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে ২৭ অক্টোবর রাতেই জড়ো হয় নেতাকমীরা। আর সেই সড়ক দিয়ে ইসলামী ব্যংক স্পেশালাইজড এন্ড জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি অসুস্থ নানাকে দেখতে হেঁটে যাচ্ছিলেন যুবলীগ নেতা শিমুল। এসময় একটি বেসরকারী টেলিভিশনের সরাসরি সম্প্রচারিত ফুটেজে তার ছবি উঠে। আর সেই ফুটেজ স্কিনসট করে অপপ্রচার শুরু করে দেন তার প্রতিপক্ষরা। এতে বিপর্যস্ত হন সে।
জানাগেছে, রাঙ্গাবালী উপজেলা যুবলীগের সম্মেলনে সভাপতি পদ প্রত্যাশী মশিউর রহমান শিমুল। আসন্ন কমিটিতে সভাপতি পদ প্রত্যাশীদের মধ্যে অন্যতম সে। তাই তাকে বিতর্কিত করার জন্য এই সুযোগে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নানানভাবে অপ প্রচার চালাচ্ছেন প্রতিপক্ষরা।
এব্যাপারে যুবলীগ নেতা মশিউর রহমান শিমুল জানান, ‘আমি শান্তি সমাবেশে অংশ নেয়ার জন্য ঢাকায় যাই। আমার নানা মোয়াজ্জেম হোসেন (মজনু মৃধা) অসুস্থ অবস্থায় ইসলামী ব্যাংক স্পেশালাইজ হাসপাতাল নয়াপল্টনে ৫ অক্টোর থেকে ভর্তি রয়েছে। তাই তাকে দেখার জন্য নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যলয়ের সামনের সড়ক দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম আর বিএনপির পাগলামির ভিডিও করতে ছিলাম। এসময় বেসরকারী টেলিভিশন এটিএন বাংলা’তে সরাসরি সম্প্রচার চলছিল। সেখানে আমার হাঁটা এবং ভিডিও ধারণের দৃশ্যটিও দেখা যায়। আর এটাকে নিয়ে অপপ্রচার শুরু করে প্রতিপক্ষরা। উপজেলা যুবলীগের কমিটিকে সামনে রেখে নোংরা রাজনীতি শুরু করে দিয়েছে একটি পক্ষ। আমাকে বিতর্কিত করার জন্য নানানভাবে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ছোটবেলা থেকে ছাত্রলীগ করে যুবলীগে আসছি, সুতারং আমার ব্যাপারে বিএনপির সমাবেশে যাওয়ার অপপ্রচার হাস্যকর ছাড়া আর কিছু নয়!’
এব্যাপারে উপজেলা যুবলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ও অসুস্থ মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে মন্নান মৃধা জানান, ‘আমার বাবা অসুস্থ হয়ে অনেকদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি। শিমুল সম্পর্কে আমার ভাগিনা হয়। আমি শিমুলের সাথে যুবলীগের রাজনীতি করি। আমার বাবাকে দেখার জন্য সে হাসপাতালে গিয়েছিল। সড়ক দিয়ে যাওয়ার পথে টেলিভিশনের লাইভে ক্যামেরাবন্দী হন। আর এ নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে ফায়দা নিতে চায় একটি চক্র।’
রাঙ্গাবালী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন জানান, ‘সামনে উপজেলা যুবলীগের কমিটি হবে। সেখানে শিমুল সভাপতি প্রার্থী। সে কারণে শিমুলকে বিতর্কিত করতে এই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। মূলত সে হাসপাতালে রোগী দেখার জন্য নয়াপল্টন বিএনপির কার্যালয়ের সামনে দিয়ে হেটে যাচ্ছিলেন। যে কেউ সড়ক দিয়ে হাঁটতেই পারেন, এতে দোষের কিছুই নেই। ্এই ছবি দিয়ে অপপ্রচার চালানোটা ষড়যন্ত্র ছাড়া অন্য কিছু নয়। একজন ত্যাগী নেতার বিরুদ্ধে এধরণের অপপ্রচার করা ঠিক নয়। তাছাড়া শিমুলের বাবা মরহুম নাসির উদ্দিন ২০০০ সাল থেকে শুরু করে আমৃত্যু রাঙ্গাবালী সদর ্ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আন্দোলন সংগ্রামে দলের পক্ষে কাজ করেছেন।’
পটুয়াখালী-৪ (রাঙ্গাবালী-কলাপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মহিববুর রহমান জানান, ‘মশিউর রহমান শিমুল রাঙ্গাবালী উপজেলা যুবলীগের পরীক্ষিত সৈনিক। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে সামনের কাতারে থেকে রক্ত দিয়েছে। ছাত্র জীবন থেকে দলের জন্য মামলা-হামলার শিকার হয়েছে। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও উপজেলা নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কাজ করতে গিয়ে বিএনপি-জামায়াতের হাতে মার খেয়ে রক্তাক্ত হয়েছে। আমাদের সকল মিছিল-মিটিংয়ে সবচেয়ে বেশি পরিশ্রম করেন এই ছে আওয়ামীলীগের নিবেদিতপ্রাণ একজন কর্মীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন। বিএনপি সড়কে অবস্থান করছে বলে সড়কে পথচারী হাঁটলে সেও বিএনপি হয়ে যাবে এটা কেমন কথা? আসলে এটি একটি ষড়যন্ত্র মাত্র। দলের নিবেদিত প্রাণ একজন নেতার বিরুদ্ধে গুজব না ছড়িয়ে দলের স্বার্থে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।