
মোহাম্মদ আমিন উল্লাহ আমিন।।
কক্সবাজারের উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. শাহজাহান ও তুর্জয় চৌধুরী রিগ্যানের নেতৃত্বে সাবাড় হচ্ছে শতাধিক পাহাড়। রাতের আঁধারে তারা পাহাড়ের মাটি কেটে পাচার করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে উখিয়ায় রাতের আঁধারে পাহাড় কাটার সময় এক শ্রমিকের মৃত্যুর পর টনক নড়েছে বন বিভাগের। সোমবার গভীর রাতে পাহাড়ের মাটি পাচারকালে উপজেলার হলদিয়া পালং ইউপি সদস্য মো. শাহজাহানের মালিকানাধীন একটি ডাম্পার আটক করেছে বন বিভাগ। কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সারওয়ার আলম অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বন বিভাগ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. শাহজাহান ও তুর্জয় চৌধুরী রিগ্যানের নেতৃত্বে একটি চক্র বন বিভাগের জায়গা থেকে মাটি কেটে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে আসিতেছে।
স্থানীয়রা জানান, এই মেম্বার সিন্ডিকেট পশ্চিম হলদিয়া প্রাইমারি স্কুলের উত্তরে আমির হোসেন পয়েন্ট, জামবাগান ফরেস্ট অফিসের উত্তরে সরকারি পাহাড়, বাগ্গুলা মার্কেটের উত্তরে মাহাবুর বাসায় বিশাল পয়েন্ট, পাগলিরবির, মধুঘোনা, উত্তর, দক্ষিণ বড়বিল, পাতাবাড়িসহ শতাধিক পয়েন্ট থেকে পাহাড় কেটে মাটি পাচার করে আসছে। এমনি করে পার্শ্ববর্তী নাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড়ও সাবাড় করেছে এই চক্র
স্থানীয়রা আরও জানান, ইউপি সদস্য মো. শাহজাহানের দুটি ডাম্পার রয়েছে। মেম্বার নির্বাচিত হওয়ার পর তার ছোট ভাই রহিম নিজস্ব ডাম্পার নিয়ে প্রতিদিন সন্ধ্যার পরই বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে মাটি কেটে পাচার করে থাকে। হলদিয়ার বেশির ভাগ স্থাপনা নির্মাণের জন্য জায়গা ভরাট করে এ চক্র। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রিগ্যান মেম্বারেরও একাধিক ডাম্পার রয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে, হলদিয়া বিট কর্মকর্তা মো. আব্দুস ছালামকে প্রতি গাড়ি মাটি ৩০০ টাকা দেওয়া হয়। তবে আব্দুস ছালাম এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এইসব চক্রের বিরুদ্ধে আগেও একাধিক অভিযান চালানো হয়েছে। এদিকে খবর পাওয়া গেছে চক্রটি মামলা থেকে বাদ দিয়ে গাড়ি ছাড়িয়ে নিতে তৎপরতা শুরু করেছে একটি বিশেষ মহল। সোমবার সকালে উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী মুহাম্মদ শফিউল আলম জানান, হলদিয়াপালং ইউনিয়নের মেম্বার শাহজাহানের ড্রাম ট্রাক অবৈধভাবে পাহাড়ের মাটি কাটার সময় আটক করা হয়। এ ঘটনায় শাহজাহান মেম্বার নিজেই জড়িত এবং সে নিজেই নেতৃত্ব দেন। তিনি আরও বলেন, বন ও পাহাড়খেকোদের দৌরাত্ম্য থামাতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বন বিভাগ। গত এক সপ্তাহে উখিয়ায় ৪টি অবৈধ করাতকল উচ্ছেদ ও বিপুল পরিমাণ কাঠ জব্দ করা হয়েছে। এদিকে দুই মেম্বারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০ জানুয়ারি উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নে পাহাড় কাটার সময় মুসলিম উদ্দিন নামে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন।