বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে চলছে অঘোষিত যুদ্ধ। ঘরে বসেই তারকারা নানাভাবে অসহায় মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। অসহায় মানুষের জন্য নিলামে তুলেছেন নিজের প্রিয় জিনিসগুলো। কেউবা নিজের সেঞ্চুরি হাঁকানো ব্যাট, কেউ আবার প্রথম অ্যালবামের গীতিকথা। কেউই যেন থেমে নেই, যে যার সাধ্যমত ঘরে বসেই যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ঘরে বসে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার নিজের হাতে আঁকা বেশ কয়েকটি চিত্রকর্ম নিলামে তুলেছেন এ্যাডভোকেট সুনাম দেবনাথ।
একে একে সুনাম দেবনাথের নিজ হাতে আঁকা ছয়টি ছবি নিলামে বিক্রি হয়। ছবিগুলো বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া গেছে তা পুরোটাই ব্যয় করা হবে সংকটাপন্ন করোনা রোগীদের চিকিৎসা জন্য। এবার হাতে আকাঁ সপ্তম ছবিটি নিলামে তুলেছেন তিনি। এ্যাডভোকেট সুনাম দেবনাথ বরগুনা ১ আসনের সাংসদ এ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু’র একমাত্র পুত্র।
গতবছর ২৬ শে জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রিফাত শরীফকে। এর কিছুদিন পরে পেন্সিল দিয়ে নিহত রিফাত শরীফের একটি ছবি আঁকেন সুনাম দেবনাথ, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এছাড়াও বেশকিছু দিন যাবত সুনাম দেবনাথের আঁকা কয়েকটি চিত্রকর্ম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রসংশিত হয়। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধুর স্কেচ, প্রয়াত রাজনৈতিক- কিংবদন্তীদের স্কেচ, প্রয়াত কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পীদের স্কেচ উল্লেখযোগ্য।
বিগত দিনেও সুনাম দেবনাথ নানা ধরনের মানব-সেবাধর্মী কাজ করে আলোচনায় এসেছেন। এবার নিজের হাতে আঁকা চিত্রকর্ম নিলামে বিক্রি করেছেন তিনি। ইতিমধ্যে ছয়টি ছবি নিলামে বিক্রি করে ৮৭ হাজার টাকা এসেছে। যার পুরোটাই দান করা হবে সংকটাপন্ন করোনা রোগীদের চিকিৎসায় হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা মেশিন কেনার জন্য। রবিবার (২ আগষ্ট) তার সপ্তম ছবিটি নিলামে তোলা হয়, যার সর্বনিম্ন মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৬ হাজার টাকা।
এই ছবিটিই নিলামের জন্য তার শেষ ছবি হতে পারে, এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
এপ্রসঙ্গে এ্যাডভোকেট সুনাম দেবনাথ বলেন, নিলামের জন্য এটাই হয়তবা আমার আঁকা শেষ ছবি, কারন ৫ই আগষ্ট তারিখ থেকে সকল আদালত খোলার কথা রয়েছে। যেহুতু আমি পেশায় একজন আইনজীবী তাই কর্মব্যস্ততার কারনে আঁকা আঁকিতে আগেরমতো সময় হয়তো দিতে পারবোনা। এই ল্যান্ডস্কেপ ছবিটি আগের ছবিগুলোর থেকে অনেক বড় ক্যানভাসে আঁকা হয়েছে। আগের ৬টি ছবির মতো এই ছবিটির নিলামের টাকাও বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের “হাই ফ্লো ন্যাসেল ক্যানুলা মেশিন” ক্রয় করার ফান্ডে যুক্ত হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা অদৃশ্য শত্রু করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছি। আমাদের সবার উচিত নিজ সাধ্যমত এগিয়ে আসা। যদিও আমি কোন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিত্রশিল্পী না, অনলাইনে এবং নিজে নিজে এ পর্যন্ত এসেছি। জানিনা আমার আঁকা কেমন হয়, তবুও আমার আঁকা পছন্দ করায় সকলের কাছে কৃতজ্ঞ।
প্রসঙ্গত, আগের ছয়টি ছবি বিক্রি করে মোট ৮৭ হাজার টাকা পাওয়া যায়। এই ৮৭ হাজার টাকাসহ সপ্তম ছবিটির নিলামে বিক্রির টাকা বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে করোনা ইউনিটে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ‘হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা’ মেশিন কেনার জন্য ব্যায় করা হবে বলে জানিয়েছেন।