কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিন্মচাপের প্রভাব গত দুইদিন ধরে উপক‚লীয় এলাকায় ঝড়োহাওয়া ও ভড়ি বৃস্টিপাত হচ্ছে। দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পরেছে। সাগর উত্তাল থাকায় সকল মাছধরা সকল ট্রলার নিরাপদ আশ্রয়ে তীরে ফিরে এসেছে। বৃস্টির পানিতে তলিয়ে আছে আমন ক্ষতি, পানি নিষ্কাশনের কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে ক্ষতির শঙ্কা কৃষকদের। পায়রা বন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। গত শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় ৭৮.০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতা রেকর্ড করা হয়েছে। তবে আজ শনিবার দুপুর ১২ টা থেকে বিকাল তিনটা পর্যন্ত ৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর সুত্রে জানাগছে। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত ভাড়ি বৃস্টিপাত ও ঝড়ো হাওয়া বইছে উপকুলীয় কলাপাড়ায়।
সরেজমিন শনিবার শেষ বিকালে মৎস্য বন্দর আলীপুর ও মহিপুরে দেখাগেছে, নিন্মচারেপ প্রভাবে সাগর উত্তাল হওয়ায় শত শত মাছ ধরা ট্রলার নিরাপদ আশ্রয়ে শিববাড়িয়া নদের দুই তীরে নোঙর করে আছে। ঝড়ো হাওয়া আর ভাড়ি বৃষ্টিপাতের কারনে সকল জেলে, মৎস্য ব্যবসায়ি এবং শ্রমিকরা অলস সময় পার করছেন। এসময় মৎস্য ব্যবসায়ি মো. রাজু আহম্মেদ রাজা বলেন, গত দুই দিন ধরে সাগর অস্বাভাবিক উত্তাল হওয়ায় সকল মাছ ধরা ট্রলার নিরাপদে আশ্রয়ে এসেছে। তবে গত আগস্ট মাসের চারটি লঘুচাপ এবং চলতি মাসে দুইটি এই ছয়টি লঘুচাপ ও নিন্মচাপের কারনে আমাদের মৎস্য ব্যবসায় শত কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। এখন এই অবস্থা চলতে থাকলে মৎস্য ব্যবসার সঙ্গে সবাই পেশার পরিবর্তণ করতে বাধ্য হবে।
দিনমজুর মো. লোকমান হোসেন বলেন, গত শুক্র আজ শনিবার দুই দিনের ভাড়ি বর্ষনে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পরেছে। তবে আজ শনিবার সকাল থেকে ঝড়োহাওয়া ও ভাড়ি বৃস্টিপাত হচ্ছে। এতে আমরা শত শত শ্রমিক কাজ করতে না পারায় পরিবারের জন্য সয়সদায় করতে পারিনি। আমরা দিন কাজ করে প্রতিদিনই আট জনের সংসারের সকল সদস্যদের মুখের আহার যোগান দিতে হয়।
এদিকে ভাড়ি বৃষ্টিতে কলাপাড়ার আমন ধান ক্ষেতে পানিতে তলিয়ে গেছে। কলাপাড়ায় ৩০ হাজার ৭শ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদ হয়েছে। তবে দু এক দিনে কৃষি জমিতে আটকে পড়া পানি নিষ্কাশন করা না হলে সদ্য রোপন করা আমন ধানের চারার গোড়ায় পঁচন ধরতে পারে এমন শঙ্কার কথা নিশ্চিত করছেন উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর। তবে কৃষকদের দাবি ভাড়ি বৃষ্টির পানিতে চাকামইয়া, নীলগঞ্জ ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের আমান ধানের চারা তলিয়ে আছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করা হলে ক্ষতিকর মুখে পতিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানায় চাকামইয়া ইউনিয়নের কৃষক মো. মামুন হাওলাদার।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, কলাপাড়ায় গত শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যটন্ত ৭৮.৬ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তব শনিবার দুপুর ১২ টা থেকে বিকাল তিনটা পর্যন্ত ৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বর্তমানে নিন্মচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকুলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। উপক’লীয় সমুদ্র বন্দর সমূহের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। একই সঙ্গে পায়রা, চট্রগ্রাম, ক·বাজর, মোংলাসমুদ্র বন্দর কে তিন নম্বর স্থানীয় সর্তক সংকেত দেখে যেতে বলা হয়েছে। তবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরা ট্রলার সমূহকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর বিশেষ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।