• সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
আগামী জাতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে আমাদের জন্য মাইলফলক: সিইসি,,,, রাজনাথ সিংয়ের মন্তব্য ‘কূটনৈতিক সৌজন্যের পরিপন্থী’: ঢাকা,,, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশের জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড, আহত অর্ধশতাধিক শিক্ষক,,,, মেহেরপুরে বিলে শাপলা তুলতে গিয়ে ৪ স্কুলশিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু,,,, বৈষম্য বিরোধী আইন প্রণয়নে রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার চাইলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান,, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিতে হবে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম,,, সরকারের আহ্বানে সাড়া দেবে বিএনপি, কোনো দলের ডাকে নয়: সালাহউদ্দিন আহমদ,,, পটুয়াখালীর মহিপুরে কোস্ট গার্ডের অভিযানে ইয়াবাসহ এক মাদক কারবারি আটক,,, সাতক্ষীরা সীমান্তে ভারতীয় মালামাল জব্দ করেছে বিজিবি,,, ক্ষমতায় এলে ১৮ মাসে এক কোটি মানুষের চাকরির ব্যবস্থা করবে বিএনপি: আমীর খসরু,,,

সন্‌জীদা খাতুন আর নেই,,,,,দৈনিক ক্রাইম বাংলা

রিপোর্টার: / ১০৬ পঠিত
আপডেট: মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫

বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, প্রখ্যাত সংগীতজ্ঞ, শিক্ষাবিদ ও ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সন্‌জীদা খাতুন আর আমাদের মাঝে নেই। মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর মৃত্যুতে সাংস্কৃতিক মহলে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

সন্‌জীদা খাতুনের পুত্রবধূ ও ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। ছায়ানট তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক শোকবার্তায় জানায়, ‘সংস্কৃতিকর্মী, শিল্পী, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও ছায়ানটের সভাপতি সন্‌জীদা খাতুন-এর প্রয়াণে ছায়ানট গভীর শোক প্রকাশ করছে।’

১৯৩৩ সালের ৪ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করা সন্‌জীদা খাতুন এক সংস্কৃতিমুখর পরিবারে বড় হন। তাঁর পিতা কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক, আর মা সাজেদা খাতুন ছিলেন একজন গৃহিণী। শৈশব থেকেই সংগীতের প্রতি গভীর অনুরাগী ছিলেন তিনি। মাত্র পাঁচ বছর বয়স থেকেই রবীন্দ্রসংগীতের চর্চা শুরু করেন।

শিক্ষাজীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৪ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক এবং ১৯৫৫ সালে ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। শিক্ষকতা দিয়েই তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়, দীর্ঘদিন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন।

বাংলাদেশে রবীন্দ্রসংগীত চর্চা, প্রসার ও বিকাশের ক্ষেত্রে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। ১৯৬৩ সালে বাংলা একাডেমির বারান্দায় তাঁর উদ্যোগেই প্রথম সংগীত শিক্ষার ক্লাস শুরু হয়। সেখানে রবীন্দ্রসংগীত শেখাতেন তিনি ও ফরিদা মালিক, নজরুল সংগীত শেখাতেন সোহরাব হোসেন, তবলা শেখাতেন বজলুল করিম, এবং বেহালা ও সেতার শেখাতেন মতি মিয়া। এই উদ্যোগই পরবর্তীতে ছায়ানট সংগীতবিদ্যায়তনের জন্ম দেয়।

পুরস্কার ও স্বীকৃতি

সংস্কৃতির অঙ্গনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সন্‌জীদা খাতুন বহু পুরস্কারে ভূষিত হন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-

 

• একুশে পদক
• বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার
• রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার (পশ্চিমবঙ্গ, ভারত)
• দেশিকোত্তম পুরস্কার (পশ্চিমবঙ্গ, ভারত)
• ১৯৮৮ সালে কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট কর্তৃক ‘রবীন্দ্র তত্ত্বাচার্য’ উপাধি
• ২০১৯ সালে ‘নজরুল মানস’ প্রবন্ধ গ্রন্থের জন্য ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার
• ২০২১ সালে ভারত সরকারের ‘পদ্মশ্রী’ সম্মাননা

 

সন্‌জীদা খাতুনের মৃত্যুতে জাতি হারাল এক সংস্কৃতি-প্রাণ ব্যক্তিত্বকে, যিনি তাঁর সারাজীবন সংগীত, শিক্ষা ও সংস্কৃতির জন্য নিবেদিত রেখেছেন। তাঁর অবদান আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনে তাঁর অভাব অপূরণীয়। তিনি আমাদের মাঝে থাকবেন তাঁর কর্ম ও আদর্শের মধ্য দিয়ে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ