মো.নাহিদুল হক, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।।
কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালি নদী তীরবর্তী একটি গ্রাম পশ্চিম লোন্দা। এই গ্রামের রিং বেড়িবাঁধটি তিন বছর ধরে ভাঙ্গা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াও অমাবস্যা কিংবা পূর্ণিমায় নদীর পানি বাড়লেই প্লাবিত হয় গোটা গ্রাম। তাই টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মানের দাবিতে কলার ভেলায় ভেসে সংবাদ সম্মেলন করেছে গ্রামবাসী। সোমবার বেলা ১১ টায় এমন ব্যাতিক্রমি সংবাদ সম্মেলন করেন তারা। পানিতে ভেসে অভিনব সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ওই এলাকার বাসিন্দা হালিমা আয়শা।
তিনি বলেন, প্রায় ৪০ বছর ধরে পশ্চিম লোন্দা গ্রামের টিয়াখালী নদী তীর সংলগ্ন এলাকায় বসবাস করে আসছে ২৫০টি পরিবার। এ নদীর তীরে বেড়িবাঁধ না থাকায় বহু বছর ধরে প্রতিনিয়ত দুথদফা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয় ওই এলাকায়। তলিয়ে যায় ২০০ একর কৃষি জমি, রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বসত ভিটা। বর্ষাকালীন সময়ে অনেকের চুলোয় জলেনা উনুন। নষ্ট হয়ে যায় জমির ফসল। তখন চলাচলের একমাত্র বাহন হয় ভেলা কিংবা নৌকা। ওই গ্রামের ৩ কিলোমিটার এলাকায় টেকসই রিং বেড়িবাঁধ নির্মাণ করলে এ অসহনীয় দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাবে বানভাসী মানুষ। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে বেড়িবাঁধ নির্মানের দাবি জানান সংবাদ সম্মেলনে। এসময় ওই গ্রামের শতাধিক ভূক্তভোগী মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
বানভাসী মানুষ ও কৃষকরা বলেন, দুইশ একরের বেশি চাষের জমি। কিন্তু এ বছর আমন চাষাবাদ করতে পারেনি তারা। বীজতলা নষ্ট হয়ে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গোটা গ্রামে পায়ে হাঁটা ছাড়া কোন যান চলাচল করতে পারেনা এ ভাঙ্গা বাঁধের কারনে। শিক্ষার্থীরা যেতে পারে না স্কুল কলেজে। ভাঙ্গা বাঁধের উপর নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো পার হতে গিয়ে প্রতিদিন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। জরুরী প্রয়োজনে অসুস্থদের হাসপাতালে নিয়ে যেতেও পারছে না তারা। অবিলম্বে এই ভাঙ্গা বাঁধ সংস্কার করা না হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসের সামনে অবস্থান ধর্মঘট করবেন বলে তারা জানান।
উল্লেখ্য গত বছর অক্টোবর মাস থেকে এসব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো মানবন্ধন, জোয়ারের পানিতে দাড়িয়ে প্রতিবাদ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে আবেদন সহ বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মানের দাবী জানিয়ে আসছেন।