রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশ, চীন ও আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর অংশগ্রহণে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সাবেক ও বর্তমান আইনপ্রণেতাদের সংগঠন আসিয়ান পার্লামেন্টারিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস (এপিএইচআর)।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এপিএইচআরের প্রতিনিধিদল এ প্রস্তাব তোলে।
মালয়েশিয়ার সংসদের সাবেক সদস্য ও এপিএইচআরের কো-চেয়ারপারসন চার্লস সান্তিয়াগো এ সময় বলেন, সংকট নিরসনে দুটি উদ্যোগ জরুরি। এর একটি হলো রোহিঙ্গাদের জন্য অর্থ সংগ্রহে আসিয়ান নেতৃত্বাধীন প্রচেষ্টা, আর অন্যটি হচ্ছে বাংলাদেশ–চীন–আসিয়ানকে নিয়ে উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক সম্মেলনের আয়োজন। তিনি উল্লেখ করেন, “আমরা ২০১৮ সালে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছি এবং তখন থেকেই এ সংকট নিয়ে কাজ করছি। তবে গত দুই–তিন বছর আমরা কিছুটা নীরব ছিলাম, কারণ মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দিকে মনোনিবেশ করেছিলাম।”
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে বলেন, “আমরা আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হতে চাই। এটি আমরা বারবার বলছি। যেহেতু আমরা আসিয়ানের সদস্য নই, তাই নিজেরা এই বিষয়টি সরাসরি তুলতে পারি না। কিন্তু এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি, কারণ সংকটের সমাধান না হলে এটি আমাদের জন্য বড় বোঝা হয়ে থাকবে।”
ড. ইউনূস এপিএইচআরের প্রতি আহ্বান জানান, একটি সংসদীয় গ্রুপ গঠন করে বাংলাদেশকে আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে যুক্ত করতে। তার মতে, আসিয়ানের উচিত এমন একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা, যা বিশ্বের সামনে স্পষ্ট করে জানাবে বাংলাদেশ কী ধরনের সংকটের মধ্যে রয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ার সংসদ সদস্য ওং চেন, ফিলিপাইনের সাবেক কংগ্রেস সদস্য রাউল ম্যানুয়েল এবং এপিএইচআরের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর চোনলাথান সুফাইবুনলার্ড।
এ সময় ড. ইউনূস আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা শুধুমাত্র বাংলাদেশের নয়, এটি গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও মানবাধিকার প্রশ্নের সঙ্গে জড়িত। তাই আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণ এই সংকট সমাধানে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।