
নিজস্ব প্রতিবেদক |
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, সংস্কারের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোটে যাওয়া সম্ভব নয়। তিনি জানিয়েছেন, জুলাই সনদের আইনি ও রাজনৈতিক ভিত্তি তৈরি করতে হলে সেটি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মাধ্যমেই জারি করতে হবে।
রবিবার (২ নভেম্বর) রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, “নির্বাচন ও সংস্কারকে আলাদা কার্যক্রম হিসেবে দেখলে ঐক্যের জায়গা সংকুচিত হয়। সংস্কারের পক্ষে না থাকলে তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো ঐক্য বা জোট সম্ভব নয়।”
নাহিদ ইসলাম জানান, এনসিপি ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং তিনি নিজেও ঢাকা থেকে প্রার্থী হবেন। “আমরা এই মাসের মধ্যেই প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করতে পারব,” বলেন তিনি।
ভারতের ভূমিকা নিয়ে নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে ভারত ‘জুলাই গণহত্যাকে’ সমর্থন দিয়েছে। তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থান প্রশ্নে ভারত যতদিন তার অবস্থান পরিবর্তন না করবে, বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্ক শীতলই থাকবে। ভারতের উচিত জুলাইয়ের স্বীকৃতি দেওয়া এবং সমমর্যাদাভিত্তিক সম্পর্কে যাওয়া।”
বিএনপি প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, “সংস্কারের বিপক্ষে অবস্থান নিলে শুধু নির্বাচনে নয়, রাজনীতি থেকেও হারিয়ে যেতে হবে।” তার দাবি, একদল সংস্কার প্রক্রিয়াকে ভেস্তে দিচ্ছে, আরেক দল নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু এনসিপি সময়মতো নির্বাচন চায় এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠার পক্ষে।
গণভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গণভোট নির্বাচনের আগে বা নির্বাচনের দিনও হতে পারে—এটা মূল বিষয় নয়। মূল বিষয় হলো, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ কবে এবং কার মাধ্যমে জারি হবে।” তার মতে, এই সনদ যদি প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে জারি হয়, তবে তা “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে কফিনে শেষ পেরেক” হবে।
সংবিধান বাস্তবায়ন আদেশে পরিবর্তনের প্রচেষ্টার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রথম খসড়ায় ২৭০ দিন পর সংস্কার প্রস্তাব স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হওয়ার বিধান ছিল, আমরা সেটি সমর্থন করি। সেটি পরিবর্তন করা হলে এনসিপি সমর্থন পুনর্বিবেচনা করতে পারে।”
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, “নতুন দল হিসেবে সহযোগিতার বদলে আমাদের কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে। শাপলা কলির প্রতীক আমরা আগেই চেয়েছিলাম, কমিশন চাইলে এক মাস আগেই তা দিতে পারত।”