
প্রতীক ইস্যু নিষ্পত্তি, এনসিপির লক্ষ্য একক নির্বাচনী লড়াই: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
নিজস্ব প্রতিবেদক:
দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে ‘শাপলা কলি’ প্রতীক গ্রহণে সম্মত হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। একই সঙ্গে দলটি ঘোষণা দিয়েছে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা ৩০০ আসনেই এককভাবে প্রার্থী দেবে।
রোববার (২ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন,
> “আমরা শাপলা কলি নেব—বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা চাই নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে, তাই প্রতীক ইস্যুতে পড়ে থাকতে চাই না।”
নাসীরুদ্দীন জানান, এনসিপি প্রথমে শাপলা, সাদা শাপলা ও শাপলা কলি এই তিনটি প্রতীককে প্রাধান্য দিয়ে আবেদন করেছিল। পরে নির্বাচন কমিশন প্রতীকের তালিকায় ‘শাপলা কলি’ অন্তর্ভুক্ত করলে দলটি সেটি ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করে।
তিনি বলেন,
> “দেশবাসীর কাছ থেকেও আমরা শাপলা কলি প্রতীকে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। এটা শাপলার চেয়ে একধাপ এগিয়ে—শাপলাও আছে, কলিও আছে। কমিশনও একধাপ এগিয়ে চিন্তা করেছে।”
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন,
> “ইসির স্বেচ্ছাচারী আচরণ সবাই দেখেছে। এখন এটি আর নির্বাচন কমিশন নয়, হয়ে গেছে ইঞ্জিনিয়ারিং কমিশন—কারণ এখানে অনেক কিছুই ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে।”
বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আপাতত কোনো জোটে না যাওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট করে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন,
> “জামায়াতে ইসলামীর ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ এবং বিএনপির চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের সঙ্গে এনসিপি যুক্ত হতে চায় না। তারা যদি নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করে, তখন বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।”
সরকারের প্রতি সতর্কবার্তা দিয়ে তিনি আরও বলেন,
> “সরকারের উপদেষ্টারা যদি গোপনে কোনো দলের সঙ্গে প্রেমে পড়েন, তাহলে গণতন্ত্রের যাত্রা ব্যাহত হবে। সরকারকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।”
এ সময় তার সঙ্গে প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল হক মুসা।
এদিকে একই দিন রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন,
> “আমরা নির্বাচন ও সংস্কার—দুটোকে আলাদা কার্যক্রম হিসেবে দেখছি না। বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলার যে মৌলিক দাবি আমরা তুলেছি, সেটির সঙ্গে যাদের মিল আছে, ভবিষ্যতে তাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা খোলা আছে।”
তিনি জানান, এনসিপি ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবে এবং প্রার্থীর তালিকা এই মাসের মধ্যেই প্রকাশ করা হবে।
প্রসঙ্গত, প্রতীক ইস্যু নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কয়েক মাস ধরে দ্বন্দ্বে ছিল এনসিপি। আগে দলটি শাপলা, কলম ও মোবাইল ফোন প্রতীক চেয়েছিল, পরে শুধুমাত্র শাপলার ওপর জোর দেয়। তবে কমিশনের অনুমোদিত প্রতীক তালিকায় শাপলা না থাকায় আবেদন একাধিকবার নাকচ হয়। শেষ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন গত ৩০ অক্টোবর প্রতীকের তালিকায় ‘শাপলা কলি’ যুক্ত করে, যা এনসিপি এখন আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেছে।